তেজস্বী যাদব। — ফাইল চিত্র।
বিহারে ভোটে জিতে ‘মহাগঠবন্ধন’ ক্ষমতায় এলে বিহারের পঞ্চায়েত প্রতিনিধিদের ভাতা বৃদ্ধি করা হবে। দেওয়া হবে পেনশন, বিমার সুবিধা। রবিবার এমনটাই প্রতিশ্রুতি দিলেন বিরোধী জোটের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী তেজস্বী যাদব। ভোটের আগে তেজস্বীর এই প্রতিশ্রুতি অবশ্যই ‘তাৎপর্যপূর্ণ’। পাশাপাশি, ‘মহাগঠবন্ধন’-এ ফাটল ধরার যে জল্পনা তৈরি হয়েছিল, তা-ও উড়িয়ে দিয়েছেন তেজস্বী। তিনি পাল্টা এনডিএ জোটের দিকে আঙুল তুলে জানান, তাদের জোটে কী সমস্যা হচ্ছে, তা নিয়ে কেন মাথা ঘামানো হয় না।
৬ এবং ১১ নভেম্বর দুই দফায় বিহারে ২৪৩টি আসনে বিধানসভা নির্বাচন। ১৪ নভেম্বর ভোটের ফলাফল ঘোষণা। মনে করা হচ্ছে, মহিলাদের পরে এ বার বিহারের গ্রামের মানুষজনের মন পেতে চাইছেন তেজস্বী। আর সে ক্ষেত্রে পঞ্চায়েত প্রতিনিধিদের ভূমিকা ‘গুরুত্বপূর্ণ’ হতে পারে মনে করেই তিনি তাঁদের জন্য বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ঘোষণা করেছেন। আর তা করে নীতীশ কুমারের সরকারকেই ‘টেক্কা’ দিতে চাইছেন বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, গত জুনে ভোটমুখী বিহারে পঞ্চায়েতের প্রতিনিধি, ওয়ার্ড সদস্যদের ভাতা-সহ অন্য সুবিধা বৃদ্ধি করেছিলেন নীতীশ। এ বার সেই পঞ্চায়েত প্রতিনিধিদের মন পেতে ক্ষমতায় এলে সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দিলেন লালুপ্রসাদ যাদবের পুত্র।
তেজস্বী জানিয়েছেন, বিরোধী ‘ইন্ডিয়া’ ক্ষমতায় এলে পঞ্চায়েত প্রতিনিধিদের জন্য ৫০ লক্ষ টাকার বিমা এবং পেনশনের ব্যবস্থা করা হবে। তাঁর কথায়, ‘‘পঞ্চায়েত প্রতিনিধিরা অনেক দিন ধরে পেনশনের দাবি তুলেছেন। তাই আমাদের সিদ্ধান্ত, ওঁদের সেই দাবি পূরণ করা হবে।’’ ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতের তিনটি স্তর হল— জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতি, গ্রাম পঞ্চায়েত। গ্রাম পঞ্চায়েতের চেয়ারপার্সন হলেন বিহারে ‘মুখিয়া’। পঞ্চায়েত সমিতির প্রধান ‘প্রমুখ’ এবং জেলা পরিষদের ‘অধ্যক্ষ’।
গত জুনেই নীতীশ কুমারের সরকার জেলা পরিষদের সভাধিপতির ভাতা ২০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৩০ হাজার করেছেন। সহ সভাধিপতির ভাতা ১০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ২০ হাজার করেছেন। মুখিয়াদের ভাতা পাঁচ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৭,৫০০ টাকা করা হয়েছে। বিহারে এখন গ্রাম পঞ্চায়েতের সংখ্যা ৮,০৫৩। পঞ্চায়েত সমিতির সংখ্যা ৫৩৩। ৩৮টি জেলা পরিষদ রয়েছে।
তেজস্বীর প্রতিশ্রুতি ‘মহাগঠবন্ধন’ ক্ষমতায় এলে বিহারে চর্মকার, ছুতোর, মৃৎশিল্পীদের সুদ ছাড়া পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেওয়া হবে। জনবণ্টনের কাজে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের কুইন্টাল প্রতি মার্জিনের টাকাও বৃদ্ধি করা হবে।
লালু-পুত্র আবার বিরোধী জোটে ফাটলের কথা উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, তিনি এবং জোটের উপমুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী তথা বিকাশশীল ইনসান পার্টি (ভিআইপি)-র নেতা মুকেশ সাহানি এক সঙ্গেই প্রচার করছেন। রাহুল এবং প্রিয়ঙ্কাও শীঘ্রই প্রচারে আসবেন বিহারে।