জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি গত কালই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে আর্জি রেখেছেন, উত্তাল কাশ্মীরকে শান্ত করতে বাজপেয়ী জমানার মতো ফের আলোচনা প্রক্রিয়া শুরু করা হোক। আর আজই আরএসএস তথা সঙ্ঘ পরিবার জানিয়ে দিল, কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা দিয়ে রেখেছে সংবিধানের যে ৩৭০ ধারা, অবিলম্বে সেটির বিলোপ ও ১৯৪৭-এ গৃহীত কাশ্মীরিদের বিশেষ নাগরিক অধিকার আইন বাতিলের দাবিতে এক মাসের জন্য বিশেষ প্রচার অভিযানে নামছে তাদের ‘জম্মু-কাশ্মীর বিচার মঞ্চ’।
রমজান শুরু হবে ২৮ মে। তার আগে রাজ্য বিজেপিও ওই দাবিগুলি নিয়ে জম্মু থেকে শ্রীনগর প্রচার অভিযানে ঝাঁপাবে। বিজেপির বক্তব্য, আরএসএস মনে করে কাশ্মীর ছিল হিন্দু রাজার অধীনে একটি হিন্দু রাজ্য। যদিও একই সঙ্গে তারা এ-ও বলছে যে, কাশ্মীরের উন্নয়ন ঘটিয়েই হিন্দু-মুসলিম বিতর্ককে আগামী দিনে অপ্রাসঙ্গিক করে দেওয়া তাদের লক্ষ্য। এর জন্য প্রয়োজনে পিডিপির সঙ্গে বিরোধে যেতেও রাজি। কিন্তু ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের আগে বিজেপি কোনও ভাবেই সরকার ফেলার মতো কোনও পদক্ষেপ করবে না। আগ বাড়িয়ে মেহবুবা সরকারের উপর থেকে সমর্থন তুলে নিতে চাইছে না তারা। পিডিপি যদি নিজে থেকে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে চায় তো সেটা তারা করতেই পারে।
কাশ্মীরের ভারপ্রাপ্ত বিজেপির সাধারণ সম্পাদক রাম মাধবের বক্তব্য, ‘‘দেশের অখণ্ডতা রক্ষায় কাশ্মীরে আমরা পিডিপিকে সমর্থন করছি। সেখানে সরকারের স্থায়িত্ব চাই আমরা। কিন্তু তা-ই বলে আলাদা দল হিসেবে বিজেপি তার কর্মসূচিকে কোনও ভাবেই লঘু করবে না। বরং দু’পক্ষই নিজ-নিজ মতাদর্শগত অবস্থান স্পষ্ট ভাবে বললে আর শঠতার জায়গা থাকে না।’’
আরও পড়ুন: মানুষের আস্থা ফেরান, নির্দেশ মেহবুবার
বিজেপি ও সঙ্ঘের এই অবস্থানে মেহবুবা ক্ষুব্ধ। সংবিধানের ৩৭০ এবং ৩৫(এ) ধারা বিলুপ্তির দাবি জানিয়ে আদালতেরও দ্বারস্থ হয়েছে সঙ্ঘ। কিন্তু সেখানেই না থেমে বিজেপি যে ভাবে সংঘাতের পথে যাচ্ছে তাতে উদ্বিগ্ন মেহবুবা। তাঁর আশঙ্কা, অদূর ভবিষ্যতে আবার কাশ্মীরে সন্ত্রাস বাড়ার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
মেহবুবাকে কাদায় পড়তে দেখে এখন ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমেছেন ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ফারুক আবদুল্লা। এত দিন তিনি ছিলেন আলোচনার বিপক্ষে। মেহবুবার প্রস্তাব মেনে মোদী সরকার হুরিয়ত নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় রাজি নয় জেনে এখন ফারুক বলছেন, কাশ্মীরের হাল ফেরাতে অবিলম্বে হুরিয়ত, এমনকী পাকিস্তানের সঙ্গেও আলোচনা শুরু হোক।