বিধায়কের ঘরে বস্তায় বস্তায় ভরে পড়ে রয়েছে পুরনো ৫০০ ও ১ হাজার টাকার নোট। কেউ তাঁর বাড়িতে গেলেই দু’হাত ভরে মিলছে টাকা— এমনই গুজবের জেরে নাজেহাল মেঘালয়ের কংগ্রেস নেতা আলেকজান্ডার লালু হেক।
দলে দলে সাধারণ মানুষ ভিড় জমিয়েছেন তাঁর বাড়ির দরজায়। এটিএমের থেকেও অনেক লম্বা লাইন লেগেছে সেখানে! দিনরাত টাকার আশায় ভিড় জমানো জনতার চেঁচামেচিতে ঘুম উড়েছে ৪৮ বছরের হেকের। সকলেই আর্জি জানাচ্ছেন— ‘'অনেক দূর থেকে এসেছি। দয়া করে খালি হাতে ফেরাবেন না।’
গুজবে বিপর্যস্ত বিধায়ক শেষে দ্বারস্থ হন পুলিশের। অভিযোগ , ইচ্ছা করে খবর রটানো হয়েছে, তাঁর বাড়ি গেলে কম করে ৫ হাজার টাকা মিলবে। মেঘালয় প্রদেশ কংগ্রেসের সহ-সভাপতি তথা রাজ্যের প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী হেক বলেন, ‘‘কয়েক হাজার মানুষ বাড়িতে এসেছেন। ওঁরা বলেছেন, আমি নাকি সবাইকে ৫ হাজার টাকা করে দিচ্ছি বলে শুনেছেন। জানি না কে বা কারা এমন মিথ্যা কথা রটিয়েছে। আমার কোনও কালো টাকা নেই। এ সব আমার ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা।’’
এ দিন সকালে হরিয়ানা থেকে একটি চার্টার্ড বিমানে বিহারের ব্যবসায়ী অমরজিৎ সিংহ ডিমাপুরে আসেন। তাঁর ব্যাগে ৫০০ ও ১ হাজার টাকার পুরনো নোট মিলিয়ে সাড়ে তিন কোটি টাকা মেলে। আয়কর অফিসাররা বিমানবন্দরে গিয়ে টাকা বাজেয়াপ্ত করেন। সিআইএসএফ ও পুলিশ অমরজিৎকে আটক করলে তিনি জানান, রাজ্যের প্রয়াত সাংসদ খেকিহো জিমোমির ছেলে ও বর্তমান লোকসভা সাংসদ তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী নেফিয়ু রিওর জামাই আনাতোর সঙ্গে তাঁর ব্যবসায়িকযোগ রয়েছে। সে জন্যই টাকা আনা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, আনাতো নিজে বিমানবন্দরে গিয়ে প্রভাব খাটিয়ে ওই ব্যবসায়ীকে ছাড়ান। কেড়ে নেওয়া টাকাও ফেরত দেওয়া হয়। কিন্তু আয়কর দফতর বা পুলিশকে কিছুই জানানো হয়নি। পরে ওই ব্যবসায়ী ও আনাতো ওই বিমানেই কোথাও যান। ক্ষুব্ধ ডিমাপুরের কমিশনার লিরেমো লোথা এ দিন বিমানবন্দরে কর্মরত সিআইএসএফ কর্মী, আয়কর কর্মীদের নিজের দফতরে তলব করেন। ওই টাকা কেন নাগাল্যান্ডে আনা হয়েছিল, তা ছাড়া হল কেন? টাকা কোথায় সরালেন রিওর পুত্র— সে সব নিয়ে তদন্ত শুরু হচ্ছে।