আর্মাটায় চেপেই দাদাগিরি করতে চায় রাশিয়া

ইডেনে দাদা নামলেন নাকি? গর্জন শুনলে সেটাই মনে হবে। কিন্তু এই উচ্ছ্বাস কোনও মানুষের জন্য নয়। একটা যন্ত্রের জন্য। রাশিয়ার মানুষদের জাতি-গর্বে এই যন্ত্রই যেন আজ নতুন করে অক্সিজেন ভরে দিল।

Advertisement

শঙ্খদীপ দাস

মস্কো শেষ আপডেট: ১০ মে ২০১৫ ০২:৩৯
Share:

ইডেনে দাদা নামলেন নাকি?

Advertisement

গর্জন শুনলে সেটাই মনে হবে। কিন্তু এই উচ্ছ্বাস কোনও মানুষের জন্য নয়। একটা যন্ত্রের জন্য। রাশিয়ার মানুষদের জাতি-গর্বে এই যন্ত্রই যেন আজ নতুন করে অক্সিজেন ভরে দিল।

আর্মাটা টি ১৪ ট্যাঙ্ক। যার ভিতরে গুপ্ত অংশে গা ঢাকা দিয়ে রিমোটের মাধ্যমে কামান দাগা যেতে পারে শত্রু শিবিরে। ষাট মাইল ব্যাসার্ধের আওতায় ৩৬০ ডিগ্রি জুড়ে তছনছ করে দেওয়া যায় সব কিছু। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্যাঙ্ক প্রজাতির মধ্যে এটিই আধুনিকতম। দিল্লির প্রগতি ময়দানে ‘ন্যানো’-র আত্মপ্রকাশের আগে সংবাদমাধ্যমে জল্পনার কথা মনে পড়ে যায়। টি ১৪-র জন্যও তেমনই কৌতূহল ও জল্পনা ছিল গোটা দুনিয়ায়। ক্রেমলিন আজ প্রথমবার আনুষ্ঠানিক ভাবে সামনে আনল তাকে। রেড স্কোয়ারে দশটি আর্মাটা টি ১৪ গর্জন করে দাপিয়ে বেড়াল। আর তার পিছু পিছু এল পদাতিক বাহিনীর অস্ত্রবাহী যান কুরগানেটস ২৫, ব্যুমেরাং, স্যাডভনিস্টা, আর্মাটা টি ১৫-র দল।

Advertisement

সত্তর বছর আগে আজকের দিনটাতেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসান ঘটেছিল। ফ্যাসিবাদ তথা নাৎসি বাহিনীর বিরুদ্ধে সেই লড়াইকে ‘মহান স্বাধীনতা সংগ্রাম’ বলে স্মরণ করে রাশিয়া। মস্কোর রাজপথে বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজ হয়। আজ নাৎসি বাহিনীর আত্মসমর্পণের সাত দশক পূর্ণ হল। দিনটির স্মরণে রাস্তায় নেমেছিলেন হাজার হাজার মানুষ। অনেকেরই হাতে কোনও না কোনও আত্মীয়ের ছবি, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যিনি লড়াই করেছিলেন। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের হাতেও ছিল তাঁর বাবার সামরিক পোশাক-পরা ছবি।

ইউক্রেন-বিবাদের জেরে আমেরিকা, ব্রিটেন ও ফ্রান্সের মতো পশ্চিমী রাষ্ট্রগুলি অবশ্য আজকের এই কুচকাওয়াজ বয়কট করেছে। তাই রেড স্কোয়ারের মঞ্চে পুতিনের পাশে ভারতীয় রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় ও চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং-সহ ১৬টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান থাকলেও ওয়াশিংটনের অনুপস্থিতি কোথায় যেন খোঁচা দিল।

তবে কূটনীতিকদের মতে, সেই অনুপস্থিতির পরোয়া না করে পুতিনও যেন আজ পাল্টা বার্তা দিলেন। বিশ্বের মানচিত্রে আবার ‘মহান ক্ষমতাশালী রাষ্ট্র’ হিসেবে স্থান করে নেওয়ার স্বপ্ন দেখেন রাশিয়ার মানুষ। সেই আবেগটা আজ যেন আরও উস্কে দিল রেড স্কোয়ার।

রুশ পদাতিক সেনাবাহিনীর ১৬ হাজার জওয়ান আজ কুচকাওয়াজে অংশ নেন। তাঁদের সঙ্গে পা মিলিয়েছিলেন ভারত-সহ ১২টি দেশের সেনারা। তারপর নামে সারি সারি ট্যাঙ্ক আর ৬টি ক্ষেপণাস্ত্র। কুচকাওয়াজে নামে রুশ বায়ুসেনাও। এর মধ্যে ছিল মিগ ২৯, সুখোই ফ্রগফুট গ্রাউন্ড অ্যাটাক বিমান, টু ১৬০ হেভি বোম্বার-সহ মোট দশটি লড়াকু বিমান।

তবে মধ্যমণি এক জনই।
আর্মাটা টি ১৪। রাশিয়ার দাবি, আগামী দিনে যুদ্ধের ময়দানে দাদাগিরি করবে এই যন্ত্রটিই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন