এস জয়শঙ্কর। —ফাইল চিত্র।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠকের আগে থেকেই ভারতের শুল্ক নীতি নিয়ে সরব ছিলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বস্তুত, সম্প্রতি মসনদে বসার পর থেকেই তিনি এই নিয়ে কট্টর অবস্থান নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। যদিও তার মধ্যেই আমেরিকার নতুন নেতৃত্ব আশা প্রকাশ করেছেন, চলতি বছরের শেষে ভারত-আমেরিকার মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি সই করা সম্ভব হবে। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে আগামী দিনে দ্বিপাক্ষিক উত্তাপ বাড়বে বলেই মনে করছে কূটনৈতিক শিবির। এই প্রেক্ষাপটে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ভারত মহাসাগর সম্মেলনের সংলাপ-পর্বে আমেরিকা তথা পশ্চিম বিশ্বকে নিয়ে বাকি দুনিয়াকে সতর্ক করলেন। আমেরিকাকে নিশানা করে তাঁর বক্তব্য, আমেরিকায় যে যে ঘটনা ঘটছে, তাতে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ত্রাসের সঞ্চার হচ্ছে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের হাতে অগাধ ক্ষমতা এবং ‘বড় কিছু ঘটতে’ চলেছে।
বিদেশমন্ত্রীর কথায়, “আমার ধারণা আগামী দু’বছরের মধ্যে এমন অনেক কিছু আসছে, যা বিশ্বকে পুরোপুরি বদলে দিতে পারে। কারণ, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের হাতে এত বিপুল ক্ষমতা এবং আগামী দিনে তাঁর প্রভাব এতটাই বাড়বে যে, হয়তো দু’বছরের আগেই আপনারা এমন সব নীতি দেখতে পাবেন, যা আন্তর্জাতিক ব্যবস্থাকে পাল্টে দেবে। আমাদের দিকে খুব বড় কিছু আসছে।’’ তাই বিদেশমন্ত্রীর পরামর্শ, আবেগতাড়িত না হয়ে পরিস্থিতির মূল্যায়ন করা উচিত সমস্ত দেশের। তিনি বলেন, ‘‘আবেগতাড়িত না হয়ে এবং পুরনো অভ্যাসকে আঁকড়ে না থেকে পরিস্থিতির মূল্যায়ন করতে হবে। পরিবর্তন আসছে, তা আমরা চাই, বা না চাই। এটা বুঝতে হবে। এই বদলের কিছু অংশ নিশ্চয়ই আমাদের কাজে আসবে। তার থেকে সুযোগ খুঁজে নিতে হবে।”
এর পরই জয়শঙ্কর পশ্চিমের একাধিপত্যের প্রসঙ্গ তুলেছেন, যা এর আগে বিভিন্ন মঞ্চে বলতে শোনা গিয়েছে তাঁকে। রাশিয়া থেকে অশোধিত তেল আমদানির
প্রসঙ্গে যখন পশ্চিম রক্তচক্ষু দেখিয়েছে, মুখর হয়েছেন বিদেশমন্ত্রী। আজ তাঁর কথায়, “আমাদের যে সমস্ত বিষয় নিয়ে যুঝতে হচ্ছে, তার অন্যতম হল পশ্চিম বিশ্বের একাধিপত্য। কিন্তু সেই একাধিপত্য জারি করা হচ্ছে মানবাধিকার এবং মূল্যবোধের মোড়কে। আমাদের এখন বলার সময় এসেছে, তোমরা যে পথে চলেছ, তাতে তোমাদের সুবিধা হতে পারে। কিন্তু সবার জন্যই রাস্তা এক নয়।” জয়শঙ্করের বক্তব্য, গোটা বিশ্বে রাজনৈতিক নেতাদের উপর থেকে মানুষের বিশ্বাস কমে যাচ্ছে। কিন্তু ভারত তার ব্যতিক্রম, কারণ এখানে তিন বার একই দল জিতে
ফিরে এসেছে।