প্রথমে বিতর্ক শুরু হয়েছিল সংসদে তাঁর দীর্ঘ অনুপস্থিতির জন্য। যা ধামাচাপা দিতে পুরো বাজেট অধিবেশনের জন্য ছুটির আর্জি জানিয়েছিলেন ক্রিকেট তারকা সচিন তেন্ডুলকর। আজ তাঁর সেই ছুটি মঞ্জুর হওয়ায় আর এক প্রস্ত বিতর্কের সাক্ষী রইল রাজ্যসভা।
দলনির্বিশেষে বেশির ভাগ সাংসদই একটি বিষয়ে একমত দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থেকে সচিন প্রকৃতপক্ষে সংসদের অবমাননা করেছেন। তাঁদের তীব্র আপত্তি রয়েছে আরও একটি প্রশ্নে। দিন তিনেক আগে যখন সচিনের গরহাজিরা নিয়ে সংসদ তোলপাড় হয়, ঠিক সে দিনই সংসদ থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে দিল্লিতেই একটি অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন এই তারকা-সাংসদ। অথচ রাজ্যসভায় আসার সময় হয়নি তাঁর।
আজ জিরো আওয়ারে বিষয়টি নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত। সচিনের ছুটি মঞ্জুর করার জন্য সংসদের অনুমতি চান ডেপুটি চেয়ারম্যান পি জে কুরিয়েন। তিনি বলেন, পেশাগত এবং পারিবারিক কারণে রাজ্যসভার চলতি অধিবেশনে আসতে পারছেন না জানিয়ে ছুটির আবেদন জানিয়েছেন সচিন। কুরিয়েনের কথা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আপত্তি জানান সমাজবাদী পার্টির নেতা নরেশ অগ্রবাল। তিনি বলেন, “সংসদের কাছে বিজ্ঞান ভবনে অনুষ্ঠানে আসতে পারেন সচিন। কিন্তু এখানে আসেন না। আমরা সবাই একমত যে উনি সংসদকে সম্মান করেন না।”
যদিও সচিন ওই অনুষ্ঠানে সে দিন বলেছিলেন, তাঁর দাদার হৃদ্যন্ত্রে অস্ত্রোপচার হয়েছে। তাই তিনি সংসদে আসতে পারছেন না। কিন্তু এ দিন অগ্রবালের প্রশ্নে কুরিয়েন বলেন, “কত সদস্য কত কারণে অনুপস্থিত থাকেন। কেন তাঁরা আসছেন না, এটা দেখা সংসদের কাজ নয়। আপনি আপত্তি করতে পারেন না।” তাতেও দমে না গিয়ে সপা নেতা বলতে থাকেন, “সচিন সংসদে কেন আসেননি, তার ব্যাখ্যা ওঁকে দিতে হবে। আমার আপত্তির কথাও ওঁকে জানানো উচিত। আমি কেন আপত্তি জানাতে পারব না? কোনও আইন আছে?” কংগ্রেসের সত্যব্রত চতুর্বেদীও অগ্রবালের পাশে দাঁড়ান। তাঁর মতে, “ভুল দৃষ্টান্ত তৈরি হচ্ছে। কেউ এ ভাবে দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকতে পারেন না। এটা মেনে নেওয়া যায় না। ওঁদেরও বোঝা উচিত, ওঁরা এটা করতে পারেন না।” কিন্তু তাতেও কান না দিয়ে কুরিয়েন সাফ বলেন, “ওঁর ছুটির আবেদন এসেছে। আমাদের এ নিয়ে তদন্ত করার কিছু নেই। প্রত্যেকেই সম্মাননীয় সদস্য। তাই ছুটি মঞ্জুর হল।” এতে অবশ্য অনেক সদস্যই একসঙ্গে ‘নো নো’ বলে ওঠেন। কিন্তু প্রতিবাদের মধ্যেই কুরিয়েন বলেন, “এ নিয়ে আর আলোচনার কোনও প্রয়োজন নেই।”
যদিও রাজ্যসভায় বাইরে সচিনের হয়ে সওয়াল করেন কংগ্রেস নেতারা। রাজীব শুক্ল জানান, “সচিনের কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তিনি সংসদে আসতে পারেননি। ছুটি চেয়েছেন, তা মঞ্জুরও হয়েছে। এমন ছুটি অনেকেই নেন। কিন্তু তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে না।” সেলিব্রিটি নন, এমন সাংসদরাও দীর্ঘদিন সংসদে না এলে তা নিয়ে কেউ আপত্তি তোলে না বলে ক্ষোভ জানান রাজীব।