রাজ্যপালের ভাষণ নিয়ে বিতর্কে বাগ্যুদ্ধে নামলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ ও মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল।
গগৈয়ের দাবি ছিল, নতুন সরকার নতুন কাজ তেমন করেনি। যাঁদের আগে দুর্নীতিগ্রস্ত বলে দাবি করত বিজেপি-অগপ, তাঁদেরই মাথায় বসিয়ে সরকার চলছে। সোনোয়াল পাল্টা বলেন, ‘‘গত আট মাসে নতুন সরকারের স্বচ্ছ, দুর্নীতিমুক্ত, সক্রিয় ভূমিকা মানুষ দেখেছেন। নিয়মরক্ষার নিন্দা নয়, অসমের স্বার্থে সরকারের সঙ্গে হাত মিলিয়ে চলা উচিত কংগ্রেসের।’’
রাজ্যপাল বনোয়ারিলাল পুরোহিত বিধানসভা অধিবেশনের প্রথম দিন ভাষণ শুরুর পরেই রাজ্য সরকারের সুশাসনের প্রশ্নে প্রতিবাদে একজোট হয়েছিল বিরোধীরা। ভাষণ শেষ করতে পারেননি রাজ্যপাল।
এ দিন বিজেপি বিধায়ক পদ্ম হাজরিকা ইউডিএফকে ধর্মের ভিত্তিতে রাজনীতি না করার আহ্বান জানান। তাঁর দাবি, আগের সরকার দুর্নীতির অনেক অভিযোগ পেয়েও কমিশন গড়েনি। কোনও তদন্ত হয়নি। তাই গাড়ি চুরি চক্রে জড়িত থেকে জেলে যাওয়ার পরও বিধায়ক রুমি নাথকে পরিষদীয় সচিব করা হয়। পিসিজি গঠনের পর মুখ্যমন্ত্রীর ব্যর্থতায় শান্তি প্রক্রিয়া ভেস্তে যায়।
‘গুপ্তহত্যার নায়ক’ বলে অগপ নেতা তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রফুল্ল মহন্তকে ইঙ্গিত করে গগৈ বলেন, ‘‘বিভিন্ন বেআইনি কাজে অভিযুক্তরাই নতুন সরকার চালাচ্ছেন। মূল্যবৃদ্ধি রোধ, চা বাগানে রেশন বন্ধ করা সরকারের ব্যর্থতা।’’ গগৈয়েক মতে, কংগ্রেসের আমলের উন্নত অসম হাতে পাওয়ায় সোনোয়াল সৌভাগ্যবান। তাঁর এনএসজি নিরাপত্তা প্রত্যাহার করা সরকারের বৈমাত্রেয় মনোভাব বলে জানান গগৈ। তিনি দাবি করেন, তাঁর এনএসজি সরানোর পরে বাধ্য হয়ে মহন্তর এনএসজি প্রত্যাহার করা হয়েছে।
জবাবে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের খতিয়ার তুলে ধরে সোনোয়াল জানান, নতুন সরকার কোনও কাজ লুকিয়ে করেনি। মানুষ সরকারের সঙ্গে আছে। ভাল কাজের ক্ষেত্রে কোনও দল বা ধর্ম দেখা হচ্ছে না। বিরোধীরাও যেন উন্নয়ন নিয়ে রাজনীতি না করে। তিনি জানান, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত দ্রুত সিল করা ও শুদ্ধ নাগরিকপঞ্জি তৈরি সরকারের প্রধান কর্তব্য। সে কাজে সরকারের সাহায্য লাগবে। তাড়হুড়ো করে কাজ করলে বৈধ ভারতীয়দের নাম তালিকার বাইরে থাকতে পারে। বিরোধীদের নাম ঢুকতে পারে তালিকায়। তিনি বলেন, ‘‘আমার ভূমিকা এক জন ঝাড়ুদারের সমান। তিনি রাস্তাঘাট পরিষ্কার করেন। আমি সমাজ ও প্রশাসনকে জঞ্জাল ও দুর্নীতিমুক্ত করতে কাজ করছি।’’