অসমে রাজনৈতিক পালাবদলের কথা তুলে ধরে মণিপুরে ভোট চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল, অর্থমন্ত্রী তথা নেডার প্রধান আহ্বায়ক হিমন্তবিশ্ব শর্মা।
অরুণাচলে যে ভাবে বিজেপি ক্ষমতা দখল করেছে, তা নিয়ে তীব্র সমালোচনা হয়েছে। কংগ্রেস ‘টাকা ছড়িয়ে সরকার দখলের’ অভিযোগ তুলে বিজেপি বিরোধী প্রচার চালাচ্ছে। নাগাল্যান্ডেও নেফিয়ু রিওকে সামনে রেখে বিজেপি সরকার দখলের চেষ্টা করেছিল বলে অভিযোগ।
বিরোধী শিবিরের আক্রমণের মুখে তাই পরিবর্তনের ছবি তুলে ধরতে বিজেপির ভরসা ‘অসম মডেল’ই।
সেই পথেই মণিপুরবাসীর মন জয়ের চেষ্টা করছেন সোনোয়াল-হিমন্তরা। মণিপুরে যেমন টানা তিন দফা কংগ্রেস-রাজ চলছে, তেমনই অসমেও তিন দফায় মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তরুণ গগৈ। রাজ্য ছিল কংগ্রেসের হাতে। মণিপুরে নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে বিভিন্ন জনসভায় সেই তুলনা টেনে সোনোয়াল বলেন, ‘‘আগের অসম আর আজকের অসমের আকাশ-পাতাল তফাৎ। কমেছে বনধ-অবরোধ-নাশকতা। দ্রুত হচ্ছে উন্নয়নের কাজ।’’ সর্বার দাবি, অসমের দীর্ঘকালীন সমস্যাগুলি ৯ মাসের মধ্যে অনেকটাই সমাধান করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দীর্ঘদিন বঞ্চিত থাকার পর অসম ৭ হাজার কোটি টাকার তেল রাজস্ব পাচ্ছে। বাকি কাজও বিজেপি শীঘ্র সেরে ফেলবে। তাঁর মন্তব্য, ‘‘মণিপুরে ক্ষমতায় এলে অনুন্নয়ন ও বেহাল পরিকাঠামোর ছবি বদলে দেবে বিজেপি।’’
১ নভেম্বর থেকে নাগা সংগঠনের বনধ ও অর্থনৈতিক অবরোধ চলছে মণিপুরের দুই জাতীয় সড়কে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ সে জন্য রাজ্য সরকারকে দায়ী করেছেন। কিন্তু কংগ্রেস পাল্টা দায়ী করেছে বিজেপি ও কেন্দ্রকে। সোনোয়াল বলেন, ‘‘অসমে অর্থনৈতিক অবরোধ হলে, তা মেটানো আমার দায়িত্ব। আমি তা নিয়ে অন্যকে দোষারোপ করতে যাব না। কিন্তু মণিপুরে উল্টোটাই করছেন ইবোবি। নিজের কর্তব্য পালন না করে বিজেপিকে দোষ দিচ্ছেন।’’
রাজ্যে এত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরের ক্রীড়াবিদ থাকতেও ক্রীড়া পরিকাঠামোর শোচনীয় অবস্থার কথা তুলে ধরে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী সোনোয়াল জানান, তিনি দায়িত্বে থাকার সময়ই মণিপুরে ক্রীড়া বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছিল। কিন্তু রাজ্য সরকার এখনও জমি দেয়নি। সর্বানন্দ বলেন, ‘‘মণিপুর থেকে দেশ এত জন দক্ষ ক্রীড়াবিদ পেয়েছে। নরেন্দ্র মোদী মণিপুরে ক্রীড়া বিশ্ববিদ্যালয় করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। আমি ৬ বার দফতরের অফিসারদের জমির জন্য ইম্ফলে পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু রাজ্য সরকারের কাছ থেকে সাড়া মেলেনি। ক্রীড়া সংস্কৃতিকে কী ভাবে তুলে ধরবে কংগ্রেস? তাদের তো সদিচ্ছাই নেই।’’ তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, ক্ষমতায় এলে বিজেপি মণিপুরকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ‘স্পোর্টিং হাব’ হিসেবে গড়ে তুলবে। মণিপুর হবে দেশের ‘স্মার্টেস্ট সিটি’।