ম্যাকাও, টুনটুনি সাজাবে মালুগ্রামের কালীমণ্ডপ

এ বারও প্রকৃতিপ্রেমকে থিম হিসেবে বেছে নিয়েছে শিলচরের দ্য অ্যাপসলস। কালীপূজায় তাঁরা পাখি বাঁচানোর বার্তা দিতে চাইছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৬ ০২:২১
Share:

এ বারও প্রকৃতিপ্রেমকে থিম হিসেবে বেছে নিয়েছে শিলচরের দ্য অ্যাপসলস। কালীপূজায় তাঁরা পাখি বাঁচানোর বার্তা দিতে চাইছে।

Advertisement

বিভিন্ন পাখিতে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে মালুগ্রামের মণ্ডপ চত্বর। ম্যাকাওয়ের মতো বিদেশি পাখির সঙ্গে থাকবে চড়াই, টুনটুনিও। বিশাল এলাকা জুড়ে জঙ্গল তৈরি করা হচ্ছে। তার মধ্যে পরিত্যক্ত এক টংঘর। পাখিরা ইচ্ছেমতো সেখানে ঢুকছে, বেরোচ্ছে। কাছাকাছি গাছে গিয়ে বসছে, উড়ে বেড়াচ্ছে।

ক্লাবের কর্মকর্তা কিষাণ দাস, তমোজিৎ ভট্টাচার্য জানান, এ বার তাঁদের পুজোর ২৮ বছর। প্রতি বছরই তাঁরা প্রকৃতিকে বিভিন্ন ভাবে তুলে ধরেন। বনসৃজন বহু বার বহু ভাবে থিম হয়েছে তাঁদের। এর আগে গণ্ডার বাঁচানোর আর্জি জানিয়ে মণ্ডপ সাজানো হয়েছিল। প্লাস্টিক-পলিথিনের অপকারিতাও এক বার অ্যাপসলসের কালীপূজার বিষয় হয়েছিল। এ বার তাঁরা পক্ষীনিধনের বিরুদ্ধে জনগণকে সতর্ক করতে চাইছেন। সঙ্গে পাখি আটকে রাখাও যে উচিত নয়, সে বার্তাও তাঁরা ছড়িয়ে দিতে চাইছেন।

Advertisement

কলকাতার শিল্পী রাজু শর্মা কৃত্রিম বার্ড হাউস তৈরি করলেও অ্যাপসলস-এর মণ্ডপচত্বর এমনিতেই পাখিদের নিরাপদ ঠিকানা। সেখানে বটগাছের তলায় আজ তাঁরা
যখন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন, তখনও ডালে বসেছিল নানা প্রজাতির পাখি।

পুজো উদ্যোক্তাদের তরফে সন্দীপন এন্দ, মৃদুল কান্তি তরাত, সত্যজিৎ বসু জানান— কত পাখি যে হারিয়ে গিয়েছে। কিছু দিন আগেও চারপাশে ঘুরে বেড়াত এমন বহু পাখি। আজকাল তাদের আর দেখা যায় না। নতুন প্রজন্ম তাদের ডাক শুনতে পায় না। তাই এ বার সেই প্রজন্মের সঙ্গে পাখিদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া হবে। শিশু-কিশোরদের কাছে তা আকর্ষণীয় হবে বলেই আশাবাদী তাঁরা।

ক্লাবকর্তারা জানান, পৃথক ভাবে তৈরি পুজো কমিটিই মূলত কাজ করে চলেছে। সভাপতি সঞ্জয় দেব, দুই সম্পাদক দেবানুজ সী ও যশোজিৎ ঘোষ। কোষাধ্যক্ষ সঞ্জয় দাসের সঙ্গে রয়েছেন শামিম আলম বড়ভুঁইঞাও।

অন্য দিকে জানিগঞ্জ সর্বজনীন কালীপূজা কমিটি এ বার বেলুড় মঠের আদলে মণ্ডপ তৈরি করছে। ভিতরে থাকবে আলোর খেলায় রামকৃষ্ণ, বিবেকানন্দ ও সারদাদেবীর মানবমূর্তি। তাঁরা কথোপকথন করবেন। বাইরে থাকবে রাজস্থানের মটকা নৃত্য, পঞ্জাবি ভাঙড়া, পুতুলনাচ। ৫টি বিশাল আকারের তোড়ন আলোকমালায় সেজে উঠবে। তার মধ্যে একটি হবে ৪৮ ফুট উঁচু। তাতে পুরীর জগন্নাথদর্শন হবে। আরেক গেটে শিশুদের আকৃষ্ট করার জন্য বিভিন্ন জীবজন্তু দেখানো হবে। অক্টোপাস থেকে কাঠবেড়ালি— কিছুই বাদ যাবে না, জানিয়েছেন আয়োজকরা।

জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চিনে তৈরি বাজি-পটকা ক্রয় না করতে অনুরোধ করা হয়েছে। জেলা উন্নয়ন কমিশনার মধুমিতা চৌধুরী জানান, দেশে তৈরি আতসবাজিরই ক্রয়বিক্রয়ের অনুমোদন রয়েছে। তিনি বাজি পোড়ানোর সঙ্গে স্বচ্ছতার দিকটিও খেয়াল রাখতে অনুরোধ করেছেন। পুরসভাকে এ ব্যাপারে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। জেলা উন্নয়ন কমিশনার জানান, যে ওয়ার্ড কালীপূজায় যত বেশি স্বচ্ছতা বজায় রাখবে, সেই ওয়ার্ডের পুরসদস্যকে পুরস্কৃত করারও পরিকল্পনা নিয়েছে জেলা প্রশাসন। সে জন্য অতিরিক্ত জেলাশাসক রাজীব রায়ের নেতৃত্বে একটি কমিটি তৈরি করা হয়েছে বলে মধুমিতা চৌধুরী জানিয়েছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement