শবরীমালা মন্দিরে ঢুকতে পারবেন সব বয়সের মহিলারা, রায় সুপ্রিম কোর্টের। গ্রাফিক শৌভিক দেবনাথ
৫৩ বছরের পুরনো প্রথাকে বাতিল করে সব বয়সের মহিলাদের জন্য শবরীমালা মন্দিরের দরজা খুলে দিল সুপ্রিম কোর্ট। এতদিন এই মন্দিরে ১০ থেকে ৫০ বছর বয়সের মহিলাদের মন্দিরে প্রবেশাধিকার ছিল না। আজ শুক্রবার প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ এই রায় দিয়েছে। রায়ে শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, ধর্মাচরণে সবার সমানাধিকার রয়েছে। সব মন্দিরে ঢোকার ক্ষেত্রে সবার সমানাধিকার রয়েছে। ধর্মাচরণের ক্ষেত্রে কোনও বৈষম্য চলে না।
কেরলের শবরীমালা মন্দিরের আরাধ্য দেবতা আয়াপ্পা স্বামী। এই মন্দিরে ১০ থেকে ৫০ বছরের মহিলাদের প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল। ৫৩ বছর ধরে চালু এই প্রথাকেই চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে একাধিক মামলা দায়ের হয়। সব মামলা একত্রিত করে প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বে সাংবিধানিক বেঞ্চ গঠিত হয়। প্রধান বিচারপতি ছাড়াও বেঞ্চে ছিলেন বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি আর এফ নরিম্যান, বিচারপতি এ এম খানউইলকার এবং বিচারপতি ইন্দু মালহোত্র।
প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চে আট দিনের শুনানি শেষ হয় পয়লা অগস্ট। রায়দানের দিন নির্ধারিত হয় আজ ২৮ সেপ্টেম্বর। সেই রায়েই প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছে, সব বয়সের মহিলাদেরই প্রবেশাধিকার দিতে হবে শবরীমালা মন্দিরে। মন্দির কর্তৃপক্ষ আর কাউকেই মন্দিরে প্রবেশে বাধা দিতে পারবে না।
আরও পড়ুন: পুরুষের সম্পত্তি নয় নারী, অপরাধের তালিকা থেকে বাদ পড়ল পরকীয়া
আরও পড়ুন: একই সঙ্গে বিয়ে আর যৌন স্বাধীনতা, এই দুয়ের প্র্যাকটিস কি সম্ভব?
আজকের রায়ে নারী অধিকারের ক্ষেত্রে নয়া দিগন্ত খুলে গেল বলেই মনে করছে আইনজীবী মহল। শীর্ষ আদালত শবরীমালা মন্দিরে মহিলাদের প্রবেশাধিকার দেওয়ায় দেশের অন্যান্য মন্দিরে যেখানে মহিলাদের প্রবেশ নিষিদ্ধ, সেই সব মন্দিরেও প্রবেশাধিকার মিলবে বলেই মনে করছেন আইনজীবীরা।
কেরলে পশ্চিমঘাট পর্বতমালার উপরে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১২৬০ মিটার উপরে একটি পাহাড়ের উপর অবস্থিত শবরীমালা মন্দির। চারদিকে ১৬টি পাহাড় বেষ্টিত গভীর অরণ্যের মধ্যে দিয়ে যেতে হয় শবরীমালা মন্দিরে। তার মধ্যেই রয়েছে পেরিয়ার ব্যাঘ্র সংরক্ষণ কেন্দ্রও। প্রতিবছর দক্ষিণের রাজ্যগুলি থেকে বহু পুরুষ ভক্ত ও পর্যটক এই মন্দিরে যান। ১০ থেকে ৫০ বছর বয়সি ঋতুমতি মহিলাদের মন্দিরে প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এমনকী, মন্দিরে ঢুকতে গেলে মহিলাদের বয়সের প্রমাণপত্র পর্যন্ত দেখাতে হয় মন্দির কর্তৃপক্ষকে।