গ্রামটা বড্ড রুখাশুখা। তাপপ্রবাহ সেখানে রোজকার ঘটনা। নেই একটা জলের কলও। রাজস্থানের আর পাঁচটা গ্রামের মতো এখানেও বৃষ্টি বড়ই বিরল। ১২ বছরের যোগিতা দেশাই রোজ আধ কিলোমিটার দূরের একটা কল থেকে জল আনতে যেত। দিনে বহু বার। সে রাজ্যের কনকনে ঠান্ডা বা তীব্র গরম, কোনও কিছুতেই ছুটি ছিল না ছোট্ট যোগিতার। গত কয়েক দিন ধরেই পেটের সমস্যায় ভুগছিল সে। কিন্তু পরিবারের যে যোগিতার সাহায্য দরকার। সে না গেলে বাড়িতে যে আর কারওরই খাওয়ার জলটুকু জুটবে না। তাই গত রবিবারও ওই ৫০০ মিটার দূরে জল আনতে গিয়েছিল যোগিতা। বাইরে তখন তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি। সঙ্গে গনগনে রোদের রক্তচক্ষু। এক বার নয়। পর পর পাঁচ বার জল আনতে যেতে হয়েছিল তাকে। অবশ্য, একমাত্র জলের উত্স থেকে পঞ্চম বার জল নিয়ে আর বাড়ি ফেরা হয়নি এই কিশোরীর। রোদ তাকে সে অবকাশ দেয়নি। হঠাত্ই রাস্তায় মাথা ঘুরে পড়ে যায় সে। আর তখনই মারাও যায়।
আরও পড়ুন-মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী, প্লিজ আমার স্ত্রীকে খুঁজে দিন
মৃতদেহ পরীক্ষা করে ডাক্তার জানিয়েছেন, ডিহাইড্রেশন আর হার্ট অ্যাটাকের জোড়া আক্রমণ প্রাণ কেড়েছে রাজস্থানের বিড গ্রামের বাসিন্দা যোগিতার। গত তিন বছর ধরেই রাজস্থানের মারাথাওয়াড়া জেলার অন্য সব গ্রামের মতো বিডেও চলছে লাগাতার খরা। রবিবার বিডের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সব থেকে কম ৩৮ ডিগ্রি। যোগিতার এক কাকা একটি নিউজ চ্যানেলে জানিয়েছেন, ‘‘আমাদের এখানে বড্ড জলের কষ্ট, কী করব যোগিতাকে যে জল আনতে যেতেই হত।’’তীব্র তাপপ্রবাহে এ বছর ইতিমধ্যেই ভারতে প্রাণ হারিয়েছেন ১১০ জন। গত তিন সপ্তাহে ওড়িশায় মারা গেছেন ৪৫ জন। তেলেঙ্গানায় ৩৫ জন।