৩৭৭ নিয়ে কোর্টের দিকেই বল ঠেলল মোদী সরকার

নরেন্দ্র মোদী সরকার ৩৭৭ ধারা নিয়ে স্পষ্ট অবস্থান নেওয়ার পথে না গিয়ে সিদ্ধান্তের ভার সুপ্রিম কোর্টের বিবেচনার উপরেই ছেড়ে দিল। সে কথা শুনে প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র এ দিন বলেন,“এর অর্থ আপনারা বিরোধিতা করছেন না।” কেন্দ্র বিরোধিতা না করলে সমকামিতার অধিকার নিয়ে একতরফা শুনানির রাস্তাই খুলতে চলেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০১৮ ০৪:০৯
Share:

ফাইল চিত্র।

নরেন্দ্র মোদী সরকার ৩৭৭ ধারা নিয়ে স্পষ্ট অবস্থান নেওয়ার পথে না গিয়ে সিদ্ধান্তের ভার সুপ্রিম কোর্টের বিবেচনার উপরেই ছেড়ে দিল। সে কথা শুনে প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র এ দিন বলেন,“এর অর্থ আপনারা বিরোধিতা করছেন না।” কেন্দ্র বিরোধিতা না করলে সমকামিতার অধিকার নিয়ে একতরফা শুনানির রাস্তাই খুলতে চলেছে।

Advertisement

শীর্ষ আদালত আজ স্পষ্ট করে দিয়েছে, আদালত ৩৭৭ ধারা খারিজ করে দিলে সমকামী বা রূপান্তরকামী মানুষদের চাকরি বা জীবিকার ক্ষেত্রে যে সব বাধা রয়েছে, সে সব উঠে যাবে। সরকারি-বেসরকারি উভয় ক্ষেত্রেই তা প্রযোজ্য হবে। রাজনৈতিক দল গড়া, ভোটে লড়াতেও বাধা থাকবে না। প্রধান বিচারপতি এ দিন বলেন,“৩৭৭ ধারা ব্যক্তির সংবিধান-সুরক্ষিত মর্যাদায় আঘাত করে।” বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, “যৌনক্রিয়া সম্পর্কের একটা দিক মাত্র। আমরা এমন কোনও পরিস্থিতি চাই না, যেখানে দুজন সমকামী মেরিন ড্রাইভে হাঁটলে পুলিশি হেনস্থার মুখে পড়বেন। তাঁদের বিরুদ্ধে ৩৭৭ ধারায় মামলা হবে।”

তবে ৩৭৭ ধারা নিয়ে সরকার তথা বিজেপির মধ্যেই মতপার্থক্য আছে। অরুণ জেটলি, হর্ষবর্ধনের মতো কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা এই আইনের বিরুদ্ধে। আবার রাজনাথ সিংহ এর পক্ষে ছিলেন। সুপ্রিম কোর্ট এখন ব্যক্তি পরিসরের অধিকারকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়ায় বিরোধিতার সুযোগ কমেই গিয়েছে। কিন্তু পক্ষে অবস্থান নিলে রক্ষণশীল ভোটব্যাঙ্ক চটার ভয়। আবার বিরুদ্ধে গেলে মানবাধিকারের প্রশ্নে সমালোচনার ভয়।

Advertisement

সব দিক দেখেই আজ অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা সুপ্রিম কোর্টে জানান, শীর্ষ আদালতই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিক। তবে কেন্দ্রের আর্জি, কোর্ট যেন ৩৭৭ ধারার সূত্র ধরে সমকামী বিবাহ, দত্তক আইন, সম্পত্তির উত্তরাধিকারের মতো অধিকারের বৃহত্তর প্রশ্নগুলিরও বিচার করতে না বসে। কারণ সেক্ষেত্রে কেন্দ্রকে অবস্থান জানানোর জন্য সময় দিতে হবে। মোদী সরকারের আরও দাবি, জীবনসঙ্গী বাছার অধিকারের নামে যেন অজাচারের অধিকার দেওয়া না হয়। কারণ তা হিন্দু আইনের বিরুদ্ধে।

২০০৯-এ দিল্লি হাইকোর্ট ৩৭৭ ধারায় সমকামী যৌন সম্পর্ককে অপরাধের তকমা অসাংবিধানিক বলে খারিজ করেছিল। ২০১৩-য় সুপ্রিম কোর্ট কার্যত ফের তা বহাল করে, কারণ তার মত ছিল, ৩৭৭ ধারা অসাংবিধানিক নয়। তৎকালীন ইউপিএ সরকার রায় পর্যালোচনার দাবিতে আর্জি পেশ করলেও লাভ হয়নি। এর পর নভতেজ জোহর, কেশব সুরি, আমন নাথ, আয়েষা কপূরের মতো বিশিষ্ট ব্যক্তি এবং নাজ ফাউন্ডেশনের মতো সংগঠন সুপ্রিম কোর্টে ৩৭৭ ধারার বিরুদ্ধে কিউরেটিভ পিটিশন করেছেন।
প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রর নেতৃত্বাধীন সাংবিধানিক বেঞ্চে তার শুনানি চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন