কাশ্মীরে সেনা অভিযান বন্ধের মেয়াদ আর না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ফের অভিযান শুরুর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বাহিনীকে। এই সিদ্ধান্তকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ অ্যাখ্যা দিয়েছে মেহবুবা মুফতির দল পিডিপি। কংগ্রেসের দাবি, কাশ্মীর সরকারের ব্যর্থতার নজির।
কাশ্মীরে শান্তি প্রক্রিয়া শুরু করতে এবং সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দিতে রমজান মাস ও অমরনাথ যাত্রার সময়ে সেনা অভিযান বন্ধ রাখার অনুরোধ করেছিলেন মেহবুবা মুফতি। সেই দাবি সমর্থন করেন ওমর আবদুল্লার মতো বিরোধী নেতারাও। শেষ পর্যন্ত রমজান মাসে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র।
কিন্তু পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠনগুলি প্রথম থেকেই এই সিদ্ধান্তকে আমল দিতে রাজি হয়নি। থামেনি সন্ত্রাসও। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের মতে, এ থেকেই বোঝা যাচ্ছে পাক সেনা ও গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই কাশ্মীরে এখন শান্তি আলোচনায় আগ্রহী নয়। ইদের ঠিক আগে প্রবীণ সাংবাদিক শুজাত বুখারির হত্যা কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলে দেয়।
আজ কেন্দ্রের তরফে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ফের অভিযান শুরু হবে। রমজানের সময়ে প্ররোচনা সত্ত্বেও প্রবল সংযম দেখিয়েছে বাহিনী। সে জন্য বাহিনীর অফিসার-জওয়ানদের প্রশংসা প্রাপ্য। কিন্তু কাশ্মীরে সন্ত্রাসমুক্ত পরিবেশ তৈরি করা প্রয়োজন। যাঁরা সত্যিই জম্মু-কাশ্মীরের মানুষের স্বার্থে কাজ করতে চান তাঁদের উচিত হিংসায় মদতদাতাদের একঘরে করা।
কেন্দ্রের সিদ্ধান্তকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ অ্যাখ্যা দিয়ে মেহবুবার দল পিডিপি জানিয়েছে, সেনা অভিযান বন্ধ থাকায় মানুষ কিছুটা স্বস্তি পেয়েছিলেন। অন্য দিকে কংগ্রেসের দাবি, কাশ্মীর মোদী সরকারের ব্যর্থতার সবচেয়ে বড় নজির। তাদের মতে, মোদীর বিদেশ সফর পুরোপুরি ব্যর্থ। কারণ, কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে দিল্লিকে বিঁধেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। অমরনাথ যাত্রায় নিরাপত্তার জন্য কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তাও জানতে চেেয়েছে কংগ্রেস। নরমপন্থী হুরিয়ত নেতা মিরওয়াইজ ওমর ফারুকের বক্তব্য, ‘‘কাশ্মীরে শান্তি ফেরানোর সঠিক চেষ্টা ছাড়া কেবল অভিযান বন্ধ রাখার কোনও অর্থ হয় না। হুরিয়ত আলোচনার বিপক্ষে নয়। কিন্তু কী নিয়ে আলোচনা হবে তা আমরা দিল্লির কাছে জানতে চেয়েছিলাম। জবাব পাওয়া যায়নি।’’
এ দিনই উত্তর কাশ্মীরের বান্দিপোরায় জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযানে আহত হয়েছেন ১৪ নম্বর রাষ্ট্রীয় রাইফেলসের কম্যান্ডিং অফিসার-সহ ছ’জন সেনা। ৯ জুন নিয়ন্ত্রণরেখা পেরনোর পরেই ওই জঙ্গলে বাহিনীর মুখোমুখি পড়ে যায় জঙ্গিদের একটি দল। অভিযান শেষ করতে কম্যান্ডোদের ডাকা হয়েছে।