—ছবি এএফপি।
থাকার কথা ছিল এক ডজন নাম। বৈঠক শুরু হতে দেখা গেল টেবিলে ৭০ থেকে ৮০টি নাম! তা-ও সকলের সব তথ্য নেই!
নতুন সিবিআই অধিকর্তা বাছাই করা নিয়ে শেষ পর্যন্ত কোনও সিদ্ধান্ত হল না বৃহস্পতিবারও।
এ দিন সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী, প্রধান বিচারপতি ও লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতাকে নিয়ে গঠিত উচ্চপর্যায়ের কমিটির বৈঠক বসে। সেখানে এক ঘণ্টা আলোচনার পরেও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। বৈঠক শেষে লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়্গে জানান, আগামী সপ্তাহে ফের বৈঠক হতে পারে।
গত প্রায় তিন মাস সিবিআইয়ের শীর্ষপদে কোনও স্থায়ী অধিকর্তা নেই। ভারপ্রাপ্ত অধিকর্তাকে দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে। বিরোধী শিবিরে প্রশ্ন উঠেছে, সরকারই কি নতুন সিবিআই অধিকর্তা নিয়োগ নিয়ে সিদ্ধান্ত যতটা সম্ভব পিছিয়ে দিতে চাইছে?
এই প্রশ্ন ওঠার কারণ, সাধারণত নতুন সিবিআই অধিকর্তা ঠিক করতে উচ্চ পর্যায়ের কমিটির বৈঠকে বাছাই করা কয়েক জন অফিসারের নাম পাঠানো হয়। কর্মিবর্গ দফতর সূত্রে বুধবারই খবর মিলেছিল, ১২ জন বাছাই করা আইপিএস অফিসারের নাম পাঠানো হয়েছে। কিন্তু আজ প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে বৈঠকের পরে খড়্গে জানান, সরকারের তরফে ৭০ থেকে ৮০ জনের তালিকা পেশ করা হয়। তাঁদের সম্পর্কে কোনও বিশদ তথ্যও ছিল না। শুধু চাকরিতে যোগ দেওয়ার তারিখ ও অবসরের দিনক্ষণ জানানো ছিল। প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ এবং তিনি, দু’জনেই এঁদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দাবি করেন বলে খড়্গে জানান। দু’জনেই যত দ্রুত সম্ভব পরবর্তী বৈঠক ডাকার জন্য অনুরোধ করেছেন বলে তিনি জানান।
প্রশ্ন উঠেছে, কেন সরকার তথ্য ছাড়াই এতগুলি নাম টেবিলে রাখল? সরকারি সূত্রের বক্তব্য, ৭০-৮০টি নাম ধরে ধরে আলোচনা করতে হলে উচ্চপর্যায়ের কমিটির একাধিক বৈঠকের প্রয়োজন হতে পারে।
দু’সপ্তাহ আগে অলোক বর্মার অপসারণের পর ভারপ্রাপ্ত অধিকর্তা হিসেবে মোদী সরকার এম নাগেশ্বর রাওকে নিয়োগ করেছে। উচ্চপর্যায়ের কমিটিতে আলোচনা ছাড়াই রাওকে নিয়োগের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলাও হয়েছে। অক্টোবরে বর্মাকে ছুটিতে পাঠানোর পরেও মধ্যরাতে রাওকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তার পর থেকেই সিবিআইয়ে কোনও স্থায়ী অধিকর্তা নেই। রাওকে দিয়েই মোদী সরকার সিবিআইকে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ উঠছে। সেই কারণেই কি রাওকে যত বেশি দিন সম্ভব রেখে দিতে চাইছে কেন্দ্র?
কর্মিবর্গ দফতরের পাঠানো তালিকায় বাঙালি মহিলা আইপিএস রীনা মিত্র ছাড়াও এনআইএ-র ডিজি ওয়াই সি মোদীর নাম রয়েছে। যিনি মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন নরেন্দ্র মোদীকে গুজরাত দাঙ্গা সংক্রান্ত একটি মামলায় ক্লিনচিট দিয়েছিলেন। তালিকায় প্রবীণতম অফিসার গুজরাত পুলিশের ডিজি শিবানন্দ ঝা। যাঁকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মোদী আমদাবাদের পুলিশ কমিশনার নিযুক্ত করেছিলেন।