ধরালীতে চলছে উদ্ধারকাজ। ছবি: পিটিআই।
কাদা, পাথরের ধ্বংসস্তূপের নীচে এখনও প্রাণের খোঁজ চলছে উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশীর ধরালীতে। যেখানে বড় বড় বাড়ি, হোটেল ছিল, সেখানে এখন শুধু পাথর আর কাদার স্তূপ। দেখে মনে হবে কে যেন বুলডোজ়ার চালিয়ে পাহাড়ি গ্রামকে সমতলভূমিতে পরিণত করেছে।
গত ৫ অগস্ট হর্ষিল উপত্যকায় ১২৬০০ ফুট উঁচু থেকে ঘণ্টায় ৪৩ কিলোমিটার গতিতে নেমে এসেছিল হড়পা বান। মেঘভাঙা বৃষ্টির জেরে সৃষ্ট ভয়ানক সেই হড়পা বান ৩০ সেকেন্ডে ধরালী গ্রামের বেশির ভাগ গ্রাস করে নেয়। শুধু ধরালীই নয়, পাশের গ্রাম হর্ষিলের অনেকাংশই হড়পা বানের গ্রাসে চলে গিয়েছে। বিপর্যয়ের পর পরই একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছিল। কী ভাবে দুর্বার গতিতে সব কিছু তছনছন করে পাহাড় থেকে নেমে আসছিল ‘জলদানব’।
সেই ঘটনার পর কেটে গিয়েছে ১১ দিন। চার জনের মৃত্যু হয়েছে। ৪২ জন নিখোঁজ। বহু মানুষকে উদ্ধারও করা হয়েছে। তবে সম্প্রতি জানা গিয়েছে, ৫ অগস্ট বিপর্যয়ের দিন, একটি নয়, পর পর ছ’টি হড়পা বান নেমে এসেছিল কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে। স্থানীয়েরা জানিয়েছেন, ওই দিন দুপুর দেড়টা নাগাদ প্রথম হড়পা বান নেমে আসে। সেই সময় ধরালী বাজারে সোমেশ্বর মন্দিরে পুজোর আয়োজন চলছিল। ধরালীর কিছুটা উপরেই রয়েছে মুখওয়া গ্রাম। সেই গ্রামের কয়েক জন প্রত্যক্ষদর্শীর দাবি, মনে হচ্ছিল কেউ একটা গোঙানির আওয়াজ করতে করতে এগিয়ে আসছে। তবে সেই আওয়াজে কারও পক্ষে বোঝা সম্ভব ছিল না যে হড়পা বান নেমে আসছে। মুখওয়া গ্রামের লোকেদের প্রথমে নজরে পড়ে। তাঁরা নীচের গ্রাম ধরালীর লোকজনকে আওয়াজ দিয়ে সতর্ক করেন। অনেক গ্রামবাসী নিরাপদ আশ্রয়ে পালাতে পেরেছিলেন। কিন্তু আবার কেউ কেউ পালাতে পারেননি।
মুখওয়া গ্রামবাসীদের দাবি, দ্বিতীয় হড়পা বান নামে দুপুর আড়াইটে নাগাদ। এই সময় ক্ষীরগঙ্গায় জল আরও বেড়ে গিয়েছিল। মুখওয়া এবং ধরালীর সংযোগকারী সেতুকে ভেঙে ভাসিয়ে নিয়ে চলে যায়। বিকেল ৩-৪টের মধ্যে আবারও হড়পা বান নামে। তার পর আবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে সাড়ে ৬টার মধ্যে পর পর দু’টি হড়পা বান আসে। আর সেই দু’টি ছিল আরও ভয়ানক।