ভারী বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত মুম্বই। ছবি: পিটিআই।
ভারী বৃষ্টিতে নাজেহাল দেশের বাণিজ্যনগরী। জলের তলায় চলে গিয়েছে শহরের বহু রাস্তা। বন্ধ স্কুল-কলেজ। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া শহরবাসীকে বাড়ির বাইরে পা না রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পর্যটকদের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সমুদ্রসৈকতগুলিও। আবহাওয়া দফতরের রিপোর্ট বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় মুম্বইয়ের বেশ কিছু এলাকায় ২০০ মিলিমিটারেরও বেশি বৃষ্টি হয়েছে, যার মধ্যে সব চেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে মুম্বইয়ের পূর্বের শহরতলি ভিক্রোলীতে (২৫৫.৫ মিলিমিটার)।
জল জমেছে রেললাইনে। ছবি: পিটিআই।
তবে বৃহস্পতিবারের আগে মহারাষ্ট্রে বৃষ্টি কমার কোনও সম্ভাবনা নেই। পাশাপাশি, জোয়ারেরও সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে মৌসম ভবন। এখনও পর্যন্ত দুর্যোগজনিত নানা দুর্ঘটনায় ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে মহারাষ্ট্রে। মঙ্গলবারও মুম্বই, ঠাণে এবং রায়গড়ের জন্য লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় ওই এলাকাগুলিতে অতিভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। কোথাও কোথাও প্রবল বর্ষণের আশঙ্কা। সংবাদসংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, গত দু’দিনে গোটা মহারাষ্ট্র জুড়ে ব্যাপক বৃষ্টি হয়েছে। বেশির ভাগ জেলাতেই জারি হয়েছে লাল কিংবা কমলা সতর্কতা। আগামী তিন দিনও পরিস্থিতির কোনও উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। প্রশাসনের তরফে সবরকম সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। প্রস্তুত রয়েছে উদ্ধারকারী দলগুলিও।
ভারী বৃষ্টিতে ভাসছে মুম্বই। ছবি: পিটিআই।
দুর্যোগের কারণে মঙ্গলবার মুম্বই, ঠাণে, পালঘর, রায়গড়, রত্নগিরি এবং সিন্ধুদুর্গের সমস্ত স্কুল, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র এবং কলেজে ছুটি ঘোষণা করেছে মহারাষ্ট্র সরকার। বৃহন্মুম্বই পুরসভার তরফে ভূষণ গগরানি জানিয়েছেন, ভারী বৃষ্টির জেরে মিঠি নদীর জলস্তর বিপদসীমার কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে।
সোমবার বিকেলে সঞ্জয় গান্ধী জাতীয় উদ্যানে অবস্থিত বিহার হ্রদ উপচে গিয়েছে। ভারী বৃষ্টির পাশাপাশি জোয়ারের আশঙ্কা থাকায় সমুদ্র উপকূলবর্তী মেরিন ড্রাইভ, ওরলি, বান্দ্রা কার্টার রোড এবং মঢ দ্বীপে নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হয়েছে। মুম্বইয়ের সমস্ত সমুদ্রসৈকতও পর্যটকদের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে জুহু, ভর্সোভা, আকসা এবং গোরাই সমুদ্রসৈকত রয়েছে।
কোথাও হাঁটুজল, কোথাও আবার জল কোমর ছাপিয়েছে। ছবি: পিটিআই।
বৃষ্টির কারণে থমকে গিয়েছে লোকাল ট্রেনও। মঙ্গলবার সকাল থেকে মধ্য রেলের মূল লাইনের সব ট্রেন নির্ধারিত সময়ের চেয়ে ১০ মিনিট দেরিতে চলছিল। ৫ থেকে ৮ মিনিট পিছিয়ে ছিল হারবার লাইনের ট্রেনগুলিও। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ায় আপাতত রেলপরিষেবা স্থগিত রাখা হয়েছে। বিপর্যস্ত বিমান পরিষেবাও। সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি সূত্রে খবর, খারাপ আবহাওয়ার জেরে অন্তত ১৪টি বিমান মুম্বই বিমানবন্দরে নামতে পারেনি। প্রভাব পড়েছে অন্যান্য বিমানের সময়সূচিতেও। ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।