JNU Attack

শরজিলকেই ‘চক্রী’ বলল দিল্লি পুলিশ

শরজিলকে ৩ মার্চ পর্যন্ত বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালত।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৩:১৫
Share:

শরজিল ইমাম।

জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’মাস আগের হিংসার ঘটনায় জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের (জেএনইউ) ছাত্র শরজিল ইমামকেই মূল চক্রী হিসেবে তুলে ধরল দিল্লি পুলিশ। তবে আজ দিল্লির মুখ্য মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট গুরমোহিনা কৌরের আদালতে পুলিশ যে চার্জশিট পেশ করেছে, তাতে জামিয়ার কোনও পড়ুয়ার নাম রাখা হয়নি। শরজিলকে আজই ৩ মার্চ পর্যন্ত বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালত।

Advertisement

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে গত ১৫ ডিসেম্বর জামিয়ায় বিক্ষোভ চলাকালীন হিংসার ঘটনা ঘটে। পড়ুয়া, নিরাপত্তাকর্মী মিলিয়ে আহত হন প্রায় ৬০ জন। বিক্ষোভকারীরা চারটি বাস ও পুলিশের দু’টি গাড়ি পুড়িয়ে দেয়। পড়ুয়াদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে নির্বিচারে হামলা চালিয়েছে পুলিশ। পুলিশের পাল্টা বক্তব্য, হিংসা ছড়িয়েছিল বিক্ষোভকারীরাই। তার মোকাবিলা করতেই লাঠিচার্জ এবং কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করা হয়েছিল।

চার্জশিটে পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে ৩.২ এমএম পিস্তলের ফাঁকা কার্তুজ মিলেছে। জামিয়ার সে দিনের সিসিটিভি ফুটেজ, বিভিন্ন কলরেকর্ড খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে। চার্জশিটের স্বপক্ষে অন্তত ১০০ জন সাক্ষীর বক্তব্য হাজির করা হয়েছে। সে দিনের ঘটনার পিছনে ‘পপুলার ফ্রন্ট অব ইন্ডিয়া’-র ভূমিকা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। জামিয়ার হিংসার ঘটনায় স্থানীয় ১৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হত্যার চেষ্টা, দাঙ্গা বাধানো, বেআইনি জমায়েত, সরকারি কর্মীদের কাজে বাধা দেওয়া ও তাদের উপর হামলার ধারাগুলি রাখা হয়েছে।

Advertisement

গত মাসে অন্য একটি মামলায় রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে শরজিলকে গ্রেফতার করা হয়। আদালতে দিল্লি পুলিশ গত কালই দাবি করেছিল, জামিয়ার ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া ফুরকান নামে এক অভিযুক্ত জানিয়েছে, শরজিলের বক্তৃতায় প্রভাবিত হয়েছিল সে। পুলিশ আদালতে জানিয়েছিল, সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, ফুরকান একটি পাত্র নিয়ে যাচ্ছিল। পেট্রল ভরা ছিল তাতে। ফুরকানের বক্তব্যকে সামনে রেখে শরজিলকে জেরা করতে চায় পুলিশ। আদালত শরজিলকে আজকের দিন পর্যন্ত পুলিশের হেফাজতে পাঠিয়েছিল। এর পরেই চার্জশিটে শরজিলকেই হিংসা ছড়ানোর মূল মস্তিষ্ক হিসেবে তুলে ধরা হল। শাহিন বাগ আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত শরজিলকে গত ২৮ ডিসেম্বর বিহারের জেহানাবাদ থেকে গ্রেফতার করা হয়। আলিগড় ও দিল্লিতে জামিয়া চত্বরে উত্তপ্ত বক্তৃতা দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় তাকে।

তবে আদালতে যখন চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ, আজ তখনই জামিয়ার প্রাক্তনীদের সংগঠন হিংসার ঘটনায় পুলিশকেই দায়ী করে জামিয়া নগর থানায় অভিযোগ করেছে। তাদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে পড়ুয়াদের উপর যে নির্মম অত্যাচার চালানো হয়েছে, তাতে পুলিশের বিরুদ্ধেই এফআইআর করা হোক। এ দিকে, জামিয়ার ভিডিয়োগুলি সামনে রেখে সমাজমাধ্যমে বলা হচ্ছিল, লাইব্রেরিতে যে ছাত্রটির উপরে লাঠি চালাচ্ছে পুলিশ, অন্য ভিডিয়োয় তাকেই একটি বাইক পোড়াতে দেখা যাচ্ছে। তবে দু’টি ঘটনায় এক ব্যক্তি জড়িয়ে নেই বলে দাবি করেছে একটি ওয়েবসাইট। পাশাপাশি, জামিয়ার লাইব্রেরিতে জমায়েত ছাত্রের হাতে পাথর ছিল বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হলেও, ওই ভিডিয়োর ফুটেজ ভাল ভাবে পরীক্ষা করে অন্য একটি সংবাদমাধ্যমের দাবি, পাথর নয়, পড়ুয়ার হাতে ছিল মানিব্যাগ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন