আত্মহত্যার আগে হাতের তালুতে অভিযুক্তদের নাম উল্লেখ করে গিয়েছেন মহারাষ্ট্রের ‘ধর্ষিতা’ চিকিৎসক। ছবি: সংগৃহীত।
কন্যাকে এমবিবিএস পড়ানোর জন্য তিন লক্ষ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন মহারাষ্ট্রের ‘ধর্ষিতা’ চিকিৎসকের বাবা। দরিদ্র পরিবার। কিন্তু কন্যাকে ডাক্তারি পড়ানোর জন্য চেষ্টার কোনও কসুর করেনি তারা। তরুণীর বাবা সামান্য কৃষক। মা গৃহিণী। অভাব অনটনের সংসারেও কন্যার ডাক্তার হওয়ার স্বপ্নপূরণের জন্য চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছে পরিবার। চেষ্টার ত্রুটি রাখেননি তরুণীও। তিনিও দিনরাত এক করে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। পরীক্ষায় পাশও করেন। প্রথম পোস্টিং হয় সাতারা জেলার ফলটন উপজেলা হাসপাতালে। সেখানে মেডিক্যাল অফিসার হিসাবে যোগ দেন।
তরুণী চিকিৎসকের খুড়তুতো দুই ভাইও চিকিৎসক। তাঁদের অভিযোগ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দিদিকে নানা ভাবে হেনস্থা করতেন। এমডি (ডক্টর অফ মেডিসিন) পড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন বলেও জানান তরুণী চিকিৎসকের তুতো ভাইয়েরা। চিকিৎসকের কাকা জানিয়েছেন, তাঁর দাদা সামান্য কৃষক। দরিদ্র পরিবার। ভাইঝিকে ডাক্তারি পড়ানোর জন্য তিন লক্ষ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন দাদা। সেই ঋণ এখনও শোধ হয়নি।
তরুণী চিকিৎসকের কাকার কথায়, ‘‘ভাইঝি শুধু এমবিবিএস করতে চায়নি। এমডি-র জন্য পড়াশোনা করছিল। কিন্তু যেখানে ওর পোস্টিং হয়েছিল, সেই হাসপাতালে বার বার ভাইঝিকে ময়নাতদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হত।’’ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জেনেবুঝে এবং ইচ্ছা করেই এই দায়িত্ব দিতেন বলে অভিযোগ তাঁর। পরিবারের অভিযোগ, কিছু রাজনৈতিক নেতাও অনেক সময় মেডিক্যাল রিপোর্ট বদলানোর জন্য চাপ সৃষ্টি করতেন তাঁদের কন্যার উপর। এই নিয়ে বেশ কয়েক বার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অভিযোগও জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু কোনও গুরুত্ব দেওয়া হয়নি বলে দাবি।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার রাতে চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয় সাতারার একটি হোটেল থেকে। আত্মহত্যার আগে পুলিশের এক সাব-ইনস্পেক্টরের বিরুদ্ধে বার বার ধর্ষণের অভিযোগ তুলে সুইসাইড নোট লিখে গিয়েছেন। মানসিক ভাবে হেনস্থা করার অভিযোগ তোলেন তাঁর বাড়িওয়ালার পুত্রের বিরুদ্ধে। হাতের তালুতে লেখা সুইসাইড নোটে দু’জনের নাম উল্লেখ করে গিয়েছেন আত্মঘাতী চিকিৎসক। দুই অভিযুক্তকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ।