আলোচনা করতে করতে এগিয়ে যাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদী এবং ভ্লাদিমির পুতিন। পাশে দাঁড়িয়ে পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ। চিনের তিয়ানজিনে এসসিও সম্মেলনের আসরে। ছবি: ভিডিয়ো থেকে সংগৃহীত।
হাঁটতে হাঁটতে এগিয়ে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। একে অপরের সঙ্গে আলোচনায় মশগুল তাঁরা। তাঁদের যাত্রাপথের এক ধারে দাঁড়িয়ে রয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ। তাঁর দৃষ্টি মোদী-পুতিনের দিকে। কিন্তু দুই রাষ্ট্রপ্রধানের কেউই ফিরেও তাকালেন না শাহবাজ়ের দিকে। চিনের তিয়ানজিন শহরে এসসিও সম্মেলনের এই ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে (যদিও এর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম)। আর এই ভিডিয়োকে ঘিরেই শুরু হয়েছে আলোচনা।
অনেকের দাবি, এই ছবি অনেক কিছুর ইঙ্গিত দিচ্ছে। রাশিয়া এমনিতেই ভারতের ‘বিশ্বস্ত বন্ধু’ বলে দীর্ঘ দিন ধরেই পরিচিত। ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর সময়েও সে দেশের অস্ত্র এবং আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহার করেছে ভারত। অন্য দিকে, মস্কোর সঙ্গে ইসলামাবাদের সম্পর্ক কখনওই খুব একটা মসৃণ নয়। ঠান্ডাযুদ্ধের সময় পাকিস্তান যখন আমেরিকার ঘনিষ্ঠ হল, সেই সময়ও ভারতকে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন (অধুনা রাশিয়া যার অংশ) ঘেঁষা মনে করা হত। প্রতিরক্ষা, অর্থনীতির মতো একাধিক ক্ষেত্রে ভারত এবং রাশিয়ার বোঝাপড়া এখনও অটুট। প্রথাগত বৈঠকের আগেই মোদী-পুতিন এই আলোচনা এবং শাহবাজ়কে ‘অবজ্ঞা’ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
এমনিতেই ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কনীতি রাশিয়া, ভারত এবং চিনকে আরও কাছাকাছি এনে নয়া ত্রিদেশীয় অক্ষ গঠনের সম্ভাবনা উস্কে দিয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। সে ক্ষেত্রে হোয়াইট হাউসের সঙ্গে সম্পর্ক আগের তুলনায় ‘স্বাভাবিক’ করলেও দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার রাজনীতিতে পাকিস্তান ফের ‘একঘরে’ হয়ে যেতে পারেন বলে মত কূটনীতিবিদদের একাংশের। ভাইরাল হওয়া ভিডিয়ো যদি নেহাতই কাকতালীয় না-হয় আর বর্তমান ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতির বাস্তবতাকে তুলে ধরে, তবে তা ইসলামাবাদের চিন্তার কারণ হবে বলে মত তাঁদের। ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, মোদী-পুতিনকে কথা বলতে বলতে হেঁটে যেতে দেখে খানিক অপ্রস্তুত শাহবাজ়ও।
সোমবার এসসিও বৈঠকের দ্বিতীয় দিনে ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে পার্শ্ববৈঠক করবেন মোদী। রাশিয়া থেকে তেল আমদানির জন্য ভারতের অধিকাংশ পণ্যের উপর আরও ২৫ শতাংশ (মোট ৫০ শতাংশ) শুল্ক আরোপ করেছেন ট্রাম্প। এই পরিস্থিতিতে দুই রাষ্ট্রপ্রধানের বৈঠকে কী কী বিষয়ে আলোচনা হয়, তা জানতে কৌতূহলী সকলেই। তবে প্রথামাফিক বৈঠকের আগেই যে ভাবে মোদী-পুতিনকে আলোচনায় মশগুল হতে দেখা গেল, তা ভারত-রাশিয়া দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের দৃঢ়তাকেই প্রমাণ করে বলে মনে করা হচ্ছে।