কংগ্রেস পরের কথা, বিজেপি কি স্বপ্নেও ভেবেছিল!
কিন্তু দুই শিবিরকেই চমকে দিয়ে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিত আজ জানিয়ে দিলেন, তিনি চাইছেন দিল্লিতে বিজেপি সরকার গড়ুক। দিল্লিতে সরকার গঠন নিয়ে বিজেপি-র তৎপরতার সমালোচনায় যখন মুখর কংগ্রেস, তখন শীলার এই মন্তব্যে বেজায় অস্বস্তিতে পড়েছেন দলের রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
গত নভেম্বরে দিল্লি বিধানসভা ভোটে গোহারা হেরেছে কংগ্রেস। তিন বারের মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিত হেরেছিলেন ২৫ হাজারেরও বেশি ব্যবধানে। তার পরেই শীলাকে কেরলের রাজ্যপাল করেছিল মনমোহন সরকার। সম্প্রতি শীলা সেই পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন।
তার পরই আজ মুখ খোলেন শীলা। তিনি বলেন, “দিল্লিতে বিজেপি সরকার গড়তে চাইছে। আমি মনে করি, ওঁদের একবার সুযোগ দেওয়া উচিত। কারণ বহু বিধায়কই নির্বাচন চাইছেন না।” প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজনীয় সদস্যের তুলনায় বিজেপি-র শক্তি কিছুটা কম রয়েছে। কিন্তু ওঁদের সভাপতি থেকে শুরু করে দলের নেতারা যখন সরকার গঠনের কথা বলছেন, তখন নিশ্চয়ই দায়িত্বশীলতার সঙ্গে সেই দাবি করছেন।”
সূত্রের খবর, দিল্লিতে এখন নির্বাচন চায় না কংগ্রেস। কিন্তু কংগ্রেস নেতাদের অভিযোগ, বিজেপি ‘ঘোড়া কেনাবেচা’ করে বা অন্য দল থেকে বিধায়ক ভাঙিয়ে সরকার গঠনে সচেষ্ট হয়েছে। আপ নেতৃত্বেরও অভিযোগ, টাকার লোভ দেখিয়ে আপ বিধায়কদের দলে টানার চেষ্টা করছে বিজেপি। এই অভিযোগের প্রমাণ হিসেবে ভিডিও ফুটেজও প্রকাশ করেছেন অরবিন্দ কেজরীবাল। কৌশলে বিজেপি-র এই সব কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করছেন শাকিল আহমেদ-অরবিন্দ সিংহ লাভলির মতো কংগ্রেস নেতারা। তাঁরা মনে করছেন, এ ভাবে বিজেপি সরকার গঠন করলেও শুরুতেই সেই সরকারের গায়ে কলঙ্কের দাগ লাগবে। সেই অবস্থায় সরকার বিরোধী রাজনীতি করা কংগ্রেসের পক্ষে সুবিধাজনক হবে।
কিন্তু বিজেপি-র সরকার গড়ার প্রয়াসে কেন সমর্থন জানালেন শীলা?
দিল্লি কংগ্রেসের এক নেতা জানান, শীলা ফের দিল্লিতে তাঁর রাজনৈতিক প্রাসঙ্গিকতা ফিরে পেতে চাইছেন। কিন্তু মুশকিল হল রাজ্য কংগ্রেস সভাপতি অরবিন্দ সিংহ লাভলি-সহ ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর নেতারা শীলাকে আর দিল্লির রাজনীতির মধ্যে ঢুকতে দিতে চান না। তাই তাঁদের শিক্ষা দিতেই এমন মন্তব্য করেছেন শীলা।
তবে শীলার এই মন্তব্যে বিজেপি-র বিরুদ্ধে কংগ্রেসের আক্রমণ দুর্বল হবে বলে মনে করছেন দিল্লির নেতারা। তাই বিন্দুমাত্র দেরি না করে দিল্লির দায়িত্বপ্রাপ্ত এআইসিসি নেতা শাকিল বলেন, “শীলা দীক্ষিত যে মন্তব্য করেছেন তা তাঁর ব্যক্তিগত মত। কংগ্রেসের বিধায়করা কেউ নির্বাচনে ভয় পান না।”
শীলার অনুগামী এক নেতা জানান, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের অর্থই শাকিল-লাভলিরা বোঝেননি। শীলা বলেছেন, বিজেপি-কে সরকার গড়ার সুযোগ দেওয়া উচিত। কিন্তু শীলাও জানেন, বিজেপি সরকার গড়লেও তা সংখ্যালঘু বা ভঙ্গুর হবে। কিছু দিন সরকার চালানোর পর বিজেপি সরকারের পতন হলে রাজ্যে কংগ্রেসের অবস্থানই মজবুত হবে।