‘স্বচ্ছ ভারতের’ দাপটে এ বার ভাঁড়ারে টান পুজো কমিটির

নরেন্দ্র মোদীর সাফাই অভিযানে সাফ হয়ে যাচ্ছে পুজোর বাজেট! শুনতে অবাক লাগলেও বাস্তব এমনটাই। আগে বড় বড় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থায় গেলে অনায়াসে লাখ খানেক টাকা পাওয়া যেত, আজ তারাই হাতজোড় করে পত্রপাঠ বিদায় করছে উদ্যোক্তাদের।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০১৬ ০১:২৭
Share:

নরেন্দ্র মোদীর সাফাই অভিযানে সাফ হয়ে যাচ্ছে পুজোর বাজেট!

Advertisement

শুনতে অবাক লাগলেও বাস্তব এমনটাই। আগে বড় বড় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থায় গেলে অনায়াসে লাখ খানেক টাকা পাওয়া যেত, আজ তারাই হাতজোড় করে পত্রপাঠ বিদায় করছে উদ্যোক্তাদের। তাদের না কি কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপন্সিবিলিটি (সিএসআর) খাতে আগে যেমন তারা নিজের পছন্দ মতো খরচ করতে পারত, এখন আর তা করা যাবে না। সেই খাতের টাকা খরচ করতে হবে নরেন্দ্র মোদীর ‘স্বচ্ছ ভারত অভিযানে’। তাই এ বার শুকনো মুখেই ফিরতে হয়েছে পুজোর উদ্যোক্তাদের। পুরনো সম্পর্কের খাতিরে মেরেকেটে হাজার দশ-পনেরো টাকা দিয়েই হাত তুলে নিচ্ছে বড় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি।

যতই প্রবাস হোক। তাই বলে কি বাঙালি দুগ্গাপুজোয় একটু ধুমধাম করবে না? ধুনুচি নাচ হবে না? আর সেই শখপূরণ করতে গিয়ে বেকায়দায় পুজো কমিটিগুলো। পুজোর শেষ পর্বেও চলছে এ দিক-ও দিক ছোটাছুটি। যেখান থেকে সবচেয়ে বেশি টাকা আসে, সেই সব ক্ষেত্রগুলির অবস্থা করুণ। বেসরকারি ক্ষেত্রের মতোই মন্দায় ভুগছে আবাসন শিল্পও। অথচ এই সব জায়গা থেকেই আগে বড় অঙ্কের টাকা হাতে আসত পুজো কমিটির। আবাসনের কর্তারা বলছেন, দিল্লি ও তার আশপাশে সারি সারি ফ্ল্যাট তৈরি হয়ে পড়ে রয়েছে। দেখা মিলছে না ক্রেতার। অগত্যা পুজো উদ্যোক্তাদের জবাব দিয়ে দিচ্ছেন তাঁরা। শেষ পর্যন্ত ছোট ব্যবসায়ীদের কাকুতি-মিনতি করেই বাজেট ধরে রাখার মরিয়া চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পুজো কমিটির উদ্যোক্তারা।

Advertisement

মন্দার বাজারের প্রভাব পড়ছে পুজোর অনুষ্ঠানে। দিল্লি-মুম্বইয়ের নামজাদা শিল্পীদের বদলে স্থানীয় শিল্পীদের দিয়ে সারতে হচ্ছে। দিল্লির ‘মিনি-কলকাতা’ চিত্তরঞ্জন পার্কের নবপল্লি পুজো কমিটির সভাপতি উৎপল ঘোষ বলেন, ‘‘মন্দার বাজার প্রভাব ফেলেছে বিজ্ঞাপন ও স্পনসরশিপে। অনেক কষ্টে টাকা জোগাড় করে এ বার পুজো হচ্ছে। আগে বিভিন্ন সরকারি সংস্থা থেকে যে টাকা আসতো, এখন সে সব বন্ধ। বেসরকারি ক্ষেত্রেও অবস্থা খারাপ হওয়ায় কোপ পড়ছে বিজ্ঞাপনে।’’ একই সুর দিল্লির একাধিক পুজোর উদ্যোক্তার গলায়।

করোলবাগ পুজো সমিতির এক কর্তা রবীন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “এ বারের পুজোর বাজেট ভাবা হয়েছিল ৩৫ লক্ষ। কিন্তু বিজ্ঞাপন সে ভাবে না পাওয়ায় বাজেট অনেক কমাতে হয়েছে।” মাতৃমন্দির পুজো কমিটির সাধারণ সম্পাদক দেবাশিস সাহার গলায় অবশ্য অন্য সুর। তাঁর কথায়, “এ বছরও বিজ্ঞাপন পেতে অসুবিধা হয়নি। আমাদের পুজো অনেক দিনের। অনেকেই এক ডাকে চেনে। তাই বোধহয় আমাদের নিরাশ হতে হয়নি।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement