রান্নার গ্যাসের সঙ্কটে নাজেহাল হাইলাকান্দির বাসিন্দারা। কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশিকা অনুযায়ী, প্রতি বছর ১২টি গ্যাস সিলিন্ডার ভর্তূকিমূল্যে পাওয়ার কথা। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, হাইলাকান্দির একটি গ্যাস সরবরাহ এজেন্সির মালিকপক্ষের কারচুপিতে অধিকাংশ গ্রাহক ওই সুবিধা পাচ্ছেন না। তা ছাড়া ওই গ্যাস এজেন্সির বিরুদ্ধে নির্ধারিত সময়ে সিলিন্ডার সরবরাহ না করা, ওজনে কারচুপি, সিলিন্ডারে গ্যাসের বদলে জল ভরে দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে ওই এজেন্সির অফিসে বিক্ষোভও দেখানো হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, কালো বাজারে চড়া দামে সিলিন্ডার বিক্রি হচ্ছে। অভিযোগ, সব জেনেও প্রশাসন কার্যত দর্শকের ভূমিকা পালন করছে।
হাইলাকান্দি নাগরিক অধিকার সুরক্ষা সমিতি সম্প্রতি এক সাংবাদিক বৈঠকে গ্যাস এজেন্সি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এ সব অভিযোগ তোলে। সমিতির সভাপতি মানসকান্তি দাস, সাধারণ সম্পাদক হীরকজ্যোতি চক্রবর্তী, আইনজীবী আশুতোষ পাল হাইলাকান্দিতে রান্নার গ্যাসের সঙ্কট ও গ্রাহক হয়রানির জন্য প্রশাসনকেই দায়ী করেন। মানসবাবু বলেন, ‘‘প্রায় প্রতিটি গ্যাস সিলিন্ডারেই নির্ধারিত পরিমাণের গ্যাস থাকে না। বুকিং করার পর সময় পেরিয়ে গেলেও গ্যাস পাওয়া যায় না।’’ হীরকজ্যোতিবাবু অভিযোগ করেন, গ্রাহকদের ফোন না ধরা এবং তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা ওই গ্যাস এজেন্সি কর্তৃপক্ষের স্বভাবে হয়ে গিয়েছে। তিনি জানান, কয়েক দিন আগে এক গ্রাহক ওই এজেন্সি থেকে সিলিন্ডার বাড়িতে নিয়ে গিয়ে দেখেন, তাতে গ্যাসের বদলে জল রয়েছে। প্রতিবাদে বিজেপি সদস্যরা ওই গ্যাস এজেন্সির অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান। এ নিয়ে গত সপ্তাহে জেলাশাসক বরুণ ভুঁইঞার সঙ্গে দেখা করে উপযুক্ত পদক্ষেপ করার অনুরোধ জানিয়েছেন নাগরিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
এজেন্সি কর্তৃপক্ষের তরফে কমরুল ইসলাম জানিয়েছিলেন, সিলিন্ডারের গ্যাসের বদলে জল পাওয়া গেলে সেগুলি বদলে দেওয়া হবে। কিন্তু কেন গ্যাস সিলিন্ডারে জল পাওয়া গেল, তার জবাব মেলেনি।
জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সৈকত দত্ত চৌধুরীর অভিযোগ, ‘‘মুনাফার স্বার্থে গ্যাসের কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করে গ্রাহকদের হয়রানি করা হচ্ছে।’’ ওই গ্যাস এজেন্সি কর্তৃপক্ষের তরফে কমরুল ইসলাম অবশ্য এ সব মানতে নারাজ।
হাইলাকান্দি জেলা নাগরিক অধিকার সুরক্ষা সমিতির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গ্যাসের গ্রাহকদের হয়রানি অব্যাহত থাকলে তাঁরা আদালতের শরণাপন্ন হবেন।