—প্রতীকী চিত্র।
এক মাস ধরে দুই ভাইবোনকে দেখতে পাননি প্রতিবেশীরা। বাড়িতে ডাকাডাকি করেও সাড়া মেলেনি। শেষ পর্যন্ত পুলিশ ডাকেন তাঁরাই। পুলিশ এসে দেখেন একতলার একটি ঘরে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় নির্জীব অবস্থায় ভাই পড়ে আছেন। দোতলার আর একটি ঘরে বাইরে থেকে তালাবন্দি অবস্থায় সন্ধান মিলেছে দিদির। তিনিও অসুস্থ। তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশের ধারণা, ওই বাঙালি ভাইবোনের বাড়িটি হাতাতেই তাঁদের উপর অত্যাচার চালাচ্ছিল এক চিকিৎসক।
পুলিশ জানিয়েছে, বোকারো স্টিল সিটি কোঅপরাটিভ কলোনির বাসিন্দা দুই ভাইবোনের নাম দীপক ঘোষ (৫০) ও মঞ্জুশ্রী ঘোষ (৫৬)। বোকারোর এসপি এস কার্তিক বলেন, ‘‘এই ঘটনায় এক চক্ষু চিকিৎসক-সহ দু’জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। দুই ভাইবোনের উপর শারীরিক নির্যাতনের চিহ্নও মিলেছে। দীর্ঘদিন তাদের খাওয়াও জোটেনি।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওঁদের বাবা এস কে ঘোষ বোকারো স্টিল প্লান্টের পদস্থ অফিসার ছিলেন। ৩৬ বছর আগে তিনি মারা যান। এর কয়েক বছর পরে তাঁদের মাও মারা যান। তারপর থেকে দুই ভাইবোনই ওই বাড়িতে থাকতেন।
তাঁরা বাড়ির একটি অংশ ভাড়া দেন একটি পরিবারকে। ওই পরিবারটি আবার তাঁদের ভাড়ার একাংশে একটি ওষুধের দোকান খোলেন। সেখানেই ডি কে গুপ্ত নামে এক চক্ষু চিকিৎসককে চেম্বার করতে দেন ভাড়াটেরা। পড়শিরা জানিয়েছেন, দুই ভাইবোন কোনও কাজকর্ম করতেন না। বাড়ি ভাড়া থেকেই তাঁদের সংসার চলত। দীপক মাঝে মধ্যে ওই চিকিৎসকের কাজে সাহায্য করতেন। দীপক ও মঞ্জুশ্রীর এক প্রতিবেশী জানান, দুই ভাইবোন কারও সঙ্গে বিশেষ মিশতেনও না। তবে চিকিৎসকের চেম্বারের সামনে তাঁদের দেখতে পাওয়া যেত। গত এক মাস ধরে তাঁদেরকে ওই চেম্বারের সামনেও দেখা যায়নি।
বোকারো পুলিশের এক পদস্থ কর্তা জানিয়েছেন, ওই চিকিৎসক ও তাঁর দুই সহযোগীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, দীপক ও মঞ্জুশ্রীর সম্পত্তি হাতানোর জন্যই তাঁদের ঘরবন্দি করে অত্যাচার করা হচ্ছিল। তাঁরা একটু সুস্থ হলে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে পুলিশ জানায়।