Citizenship bill

‘ইয়া আলি’-র গায়ক জুবিনকে মনে আছ? বিজেপির কাছে ভোট ফেরত চাইলেন তিনি

এই প্রথম নয়, জানুয়ারি মাসের শুরুতেই বিতর্কিত বিলটির তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন জুবিন। 

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০১৯ ১৮:২০
Share:

জুবিন গর্গ।—ফাইল চিত্র।

নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে নেমেছেন অসমবাসী। এ বার তাতে সামিল হলেন গায়ক জুবিন গর্গও। জুবিন, ইমরান হাশমি ও কঙ্গনা রানাওয়াতের ‘গ্যাংস্টার’ ছবিতে ‘ইয়া আলি’ গানটি গেয়ে যিনি রাতারাতি জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালের কাছে বিজেপিকে দেওয়া ভোট ফেরত চেয়েছেন তিনি। তার বদলে বিজেপির প্রচারে গান গাওয়ার জন্য যে টাকা পেয়েছিলেন, তাও ফেরত দিতে রাজি বলে জানিয়েছেন।

Advertisement

রবিবার নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে সর্বানন্দ সোনোয়ালের উদ্দেশে জুবিন লেখেন, ‘‘সর্বানন্দ সোনোয়ালদা, কয়েক দিন আগে একটি চিঠি লিখেছিলাম আপনাকে। বোধহয় কালো পতাকা গুনতে ব্যস্ত আপনি। তাই জবাব দেওয়ার সময় পাননি। তাই এখানেই বলি, ২০১৬ সালে আমার আওয়াজ ব্যবহার করে ভোট কুড়িয়েছিলেন। সেই ভোটগুলি কি ফেরত পেতে পারি? গান গেয়ে যে পারিশ্রমিক পেয়েছিলাম, তা ফিরিয়ে দিতে প্রস্তুত আমি।’’

১৯৫৫ সালের নাগরিক বিলটি সংশোধন করে পড়শি দেশ থেকে পালিয়ে আসা অমুসলিম মানুষদের ভারতের নাগরিকত্ব দিতে সম্প্রতি সংসদে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ করিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। যাতে ১২ বছরের বদলে মাত্র ৬ বছর এ দেশে কাটালেই বিনা কাগজপত্রে ভারতের নাগরিক বলে পরিচিত হবেন তাঁরা। এই বিলটিরই প্রতিবাদে গত কয়েকদিন ধরে বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন অসমবাসী। শাসকদলকে কালো পতাকা দেখিয়েছেন তাঁরা। নিজের বার্তায় সেই কালো পতাকারই উল্লেখ করেছেন জুবিন। ফেসবুকে সাড়ে ৮ লক্ষ ফলোয়ার রয়েছে জুবিনের। তাঁর বার্তাটি ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়ে গিয়েছে।

Advertisement

জুবিন গর্গের ফেসবুক পোস্ট।

আরও পড়ুন: ‘শেষ মুহূর্তেও পিস্তল চালানোর চেষ্টা করেছিল রামুয়া’, স্ত্রীর বয়ান ঘিরে বাড়ছে সন্দেহ​

আরও পড়ুন: পিটিয়ে যকৃৎ ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছিল, সামনে এল ময়নাতদন্তের রিপোর্ট​

তবে এই প্রথম নয়, জানুয়ারি মাসের শুরুতেই বিতর্কিত বিলটির তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন জুবিন। তা নিয়ে সর্বানন্দ সোনোয়ালকে একটি চিঠি লিখেছিলেন তিনি, যা পোস্ট কেরছিলেন সোশ্যাল মিডিয়াতেও। ওই চিঠিতে জুবিন লেখেন, ‘‘লোকসভায় নাগরিক সংশোধনী বিল যদিও পাশ হয়ে গিয়েছে, কিন্তু চাইলেই তার বিরোধিতা করতে পারেন সর্বাদা। বিলটির প্রতিবাদে একবার অন্তত সরব হন। বাকিটা না হয় পরে দেখা যাবে। এখনও পর্যন্ত নিজেকে শান্ত রেখেছি। আগামী একসপ্তাহ অসমে থাকছি না। তার মধ্যে সর্বাদা পদক্ষেপ করলে ভাল। নইলে নিজের মতো করে প্রতিবাদে শুরু করব আমি। কী করব জানি না, তবে কিছু তো একটা করবই।’’ তবে শুধুই জুবিন গর্গ নন। নাগরিক বিলের প্রতিবাদে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছেন অসমের বিশিষ্ট মহলের অনেকে। যাঁর মধ্যে অন্যতম হলেন গায়ক পাপন। তাঁর মতে, যে নাগরিক বিল নিয়ে এত হইচই করছে বিজেপি, সেটি অসমবাসীর নীতি বিরুদ্ধ।

প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন রাজ্যের সাধারণ মানুষও। রবিবার কাজিরাঙা ইউনিভার্সিটির সমাবর্তন অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল। কালো পতাকা হাতে সেখানে রাস্তা অবরোধ করেন কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতি (কেএমএসএস) এবং অসম জাতীয়তাবাদী যুব ছাত্র পরিষদ (এজেওয়াইসিপি)-র শতাধিক বিক্ষোভকারী। সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে স্লোগানও দেওয়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তাঁদের আটক করে পুলিশ। এজেওয়াইসিপি-র তরফে বিক্ষোভ দেখানো হয় জামুগুরিহাটেও। অবিলম্বে বিলটি প্রত্যাহারের দাবি জানান বিক্ষোভকারীরা। কার্বি আংলং জেলায় ৩৬ ঘণ্টা ধরে জাতীয় সড়ক অবরোধ করে রাখে ছাত্ররা। গোয়ালপাড়া, দুধনোই-তে ৩৭ নং জাতীয় সড়কে বিলটির কপি পুড়িয়ে প্রতিবাদ জানান জোগী ও কলিতা সম্প্রদায়ের মানুষ। বিলটি প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত বিক্ষোভ চলবে বলে ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে লেফ্ট ডেমোক্র্যাটিক মঞ্চ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন