চৌকিদার আর পাহারাদার হটানোর ডাক বামেদের ব্রিগেডে

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে এখন বিরোধীদের স্লোগান, ‘চৌকিদারই চোর’।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:৪৬
Share:

সভা: ব্রিগেড সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী

আসন্ন লোকসভা ভোটে ‘চৌকিদার’কে বরখাস্ত করার ডাক উঠে এল বামেদের ব্রিগেড সমাবেশ থেকে। সেই সঙ্গেই অভিযোগ করা হল, রাজ্যের ‘পাহারাদার’ চোর-ডাকাতদের পাহারা দিচ্ছেন!

Advertisement

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে এখন বিরোধীদের স্লোগান, ‘চৌকিদারই চোর’। আবার এই আবহে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, তিনি রাজ্যের মানুষের ‘পাহারাদার’। বিজেপি ও তৃণমূল, এই দুই শক্তিকেই হটানোর লক্ষ্য নিয়ে লোকসভা ভোটে লড়ার কথা রবিবার ব্রিগেডের মঞ্চ থেকে বলেছেন বাম নেতারা। তবে একা বামেদের পক্ষে সে কাজ সম্ভব নয়, সেই বাস্তবতাও ধরা পড়েছে তাঁদের বক্তব্যে। তাই একই সঙ্গে কংগ্রেসের প্রতিও বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন তাঁরা।

দু’টি গল্প শুনিয়ে এ দিন মোদীকে নিশানা করেছেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। প্রথম গল্প তাঁর মাতৃভাষা তেলুগুর লোক-কাহিনি থেকে। এক চৌকিদার তাঁর মালিকের কাছে গিয়ে গল্প বলতেন, রাতে তিনি কী কী স্বপ্ন দেখেছেন। এক বার স্বপ্নের কথা শুনে মালিক সেই চৌকিদারকে ১০ হাজার টাকা ইনাম দিয়ে চাকরি থেকে বরখাস্ত করলেন। কারণ, মালিকের যুক্তি ছিল, চৌকিদারের কাজ রাত-পাহারা। ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখা নয়! এর পরেই ইয়েচুরির মন্তব্য, ‘‘যে চৌকিদার নানা রকম স্বপ্ন দেখাচ্ছেন, তাঁকে বরখাস্ত করুন! এখানে মালিক জনতাই। ভোট আপনাদের হাতে।’’

Advertisement

আবার দ্বিতীয় গল্প, বাসে উঠে এক মজুর টিকিট কাটার পয়সা দিতে পারেননি। তিনি কন্ডাক্টরকে বলেন, পকেটমারি হয়ে গিয়েছে। কিন্তু তাঁকে বাস থেকে নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে দেখে এক ব্যক্তি এগিয়ে এসে টিকিট কেটে দেন। আসলে সেই ব্যক্তিই পকেটমার! ইয়েচুরি বলেন, ‘‘পকেটমার প্রথমে পকেট কাটে, পরে আবার টিকিটটা কেটে দেয়। দেশেও সারা বছর জনতাকে লুটে এখন ভোটের মুখে বাজেটের জুমলা দেওয়া হচ্ছে! পকেটমারকেও কিন্তু ছোট করে ‘পিএম’ বলে!’’

মিথ্যা প্রতিশ্রুতি ও সাম্প্রদায়িক বিভাজনের রাজনীতি করা বিজেপিকে পরাস্ত করার কথা বলেছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র, পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম, সিপিআই (এম-এল) লিবারেশনের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য-সহ সব বক্তাই। সূর্যবাবু বলেন, ‘‘তৃণমূলের পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যাচ্ছে। খুনোখুনি হচ্ছে নিজেদের মধ্যে। বিজেপি বিশৃঙ্খলা করছে। যারা বলছিল তৃণমূলকে সরাতে বিজেপি-কে লাগবে, তারা এখন একটু চুপ করেছে।’’ কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে তাঁর আহ্বান, ‘‘আরও সাহস দেখাতে হবে। ভোটার তালিকায় নাম থাকলেও ভোট দিতে না দিলে ৫০ জন মিলে দাঁড়াতে হবে।’’

তৃণমূল ও বিজেপির বিরুদ্ধে বাংলায় সব ভোট একত্র করার বার্তা দিয়ে সেলিমের মন্তব্য, ‘‘মোদী বলছেন কংগ্রেসমুক্ত ভারত। দিদি চাইছেন কংগ্রেসমুক্ত বাংলা। প্রতি দিন দেখা যাচ্ছে, মৌসম বদলাচ্ছে!’’ তাঁর ইঙ্গিত ছিল কংগ্রেস সাংসদ মৌসম বেনজির নূরের তৃণমূলে যোগদানের দিকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন