দিল্লির বাতাসে গুণগত মান ‘ভয়ানক’। ছবি: পিটিআই।
দীপাবলির আগেই দিল্লির বাতাসে ছড়াচ্ছে বিষ! শনিবারের তুলনায় রবিবার দিল্লি-এনসিআরের বাতাসের গুণগত মান আরও খারাপ। দিল্লিতে বাতাসের গুণগত মানের সূচক বা এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) ‘ভয়ানক’ পর্যায়ে পৌঁছেছে। কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রক বোর্ড (সিপিসিবি)-এর তথ্য বলছে, রবিবার সকালে অক্ষরধামের আশপাশে একিউআই ছিল ৪২৬। শুধু তা-ই নয়, গ্রেটার নয়ডা, গাজ়িয়াবাদের বাতাসের গুণগত মানও ভয় ধরানোর মতোই।
প্রতি বছরই এই সময় বাতাসের দূষণ নিয়ে উৎকণ্ঠায় থাকেন দিল্লিবাসী। তবে এ বার দীপাবলির আগে থেকেই রাজধানীর বায়ুদূষণ চিন্তায় ফেলেছে বিশেষজ্ঞদের। অনেকেই শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভুগতে শুরু করেন। ধোঁয়াশা এবং কুয়াশার পুরু চাদরে ঢেকেছে দিল্লি এবং আশপাশের এলাকা। কমেছে দৃশ্যমানতা।
সিপিসিবি-র তথ্য অনুসারে, দিল্লির গৌতমবুদ্ধ নগরের পিএম২.৫ ‘ভয়ানক’ পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে। ‘পার্টিকুলেট ম্যাটার’ হল কোনও অঞ্চলের বাতাসে মিশে থাকা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কঠিন কণা এবং কিছু তরলের সংমিশ্রণ। এগুলি বাতাসে ভেসে থাকে এবং বাতাসকে দূষিত করে তোলে। অন্য দিকে, নয়ডার একিউআই ২৯৮। গাজ়িয়াবাদের বিজয় নগরে রবিবার সকালে একিউআই ছিল ৩০০। গুরুগ্রামের বাতাসের গুণগত মানের সূচক ২৫৮।
শনিবার জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামের কাছে একিউআই ছিল ২৫২। আনন্দ বিহারের কাছে একিউআই ছিল ৩৮৪। ওয়াজিরপুরে একিউআই ছিল ৩৫১, জাহাঙ্গিরপুরীতে ৩১০, বিবেক বিহারে ৩০৬, দ্বারকাতে ৩১০। তবে রবিবার পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক হয়ে ওঠে।
বাতাসের গুণমান সূচক বা একিউআই শূন্য থেকে ৫০-এর মধ্যে হলে তা ‘ভাল’ বলে ধরে নেওয়া হয়। গুণমান সূচক ৫১ থেকে ১০০ হলে তা ‘সন্তোষজনক’ বলে ধরা হয়। একিউআই ১০১ থেকে ২০০ হলে ‘মাঝারি’ বলে বিবেচিত হয়। আর গুণমান সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খারাপ’, ৩০১ থেকে ৪০০ হলে ‘খুব খারাপ’, ৪০১ থেকে ৪৫০ ‘ভয়ানক’ এবং ৪৫০-এর বেশি হলে ‘অতি ভয়ানক’ ধরা হয়। মঙ্গলবার দিল্লির একিউআই ছিল ২১১, যা ‘খারাপ’ পর্যায়ে পড়ে। অর্থাৎ, বলাই চলে রবিবার দিল্লির কিছু অংশের বাতাসের গুণগত মান ‘ভয়ানক’। আর বেশিরভাগই ‘খুব খারাপ’ পর্যায়ে।
দিল্লির বাতাসের অবস্থা আরও খারাপের আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞেরা। কারণ, এ বছর দীপাবলিতে শর্তসাপেক্ষে সবুজ আতশবাজি তৈরি এবং বিক্রিতে কোনও নিষেধাজ্ঞা জারি করেনি সুপ্রিম কোর্ট। আদালত জানিয়েছে, ১৮ অক্টোবর থেকে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত নির্দিষ্ট সময়ে বাজি পোড়ানো যাবে। অর্থাৎ, শনিবার থেকেই দিল্লিতে বাজি পোড়ানোর অনুমতি রয়েছে। অনেকের মতে, রবিবার দিল্লির বাতাসের গুণগত মান খারাপ হওয়ার নেপথ্যে বাজি পোড়ানোও কারণ হতে পারে।