বিয়ে মানেই আত্মীয়স্বজনদের নিয়ে আনন্দ অনুষ্ঠান। প্রচুর সাজগোজ এবং কব্জি ডুবিয়ে খাওয়া-দাওয়া। এটাই সাধারণ নিয়ম। কিন্তু এমন কিছু বিয়ে আছে যা আমাদের ভাবনা-চিন্তা বদলে দেবে
বিয়েতে শ্বশুরবাড়ি থেকে কনেকে কিছু না কিছু মূল্যবান উপহার দেওয়া হয়ে থাকে। এটাই সাধারণ রীতি। সাধারণত পোশাক বা গয়নাই দেওয়া হয়। কিন্তু মধ্যপ্রদেশের এই বিয়েটা ছিল একটু আলাদা। গ্বালিয়রের ২২ বছরের কনে প্রিয়ঙ্কা ভাদোরিয়ার চাওয়া উপহার সবাইকে চমকে দিয়েছিল। হবু শ্বশুরবাড়ি থেকে তিনি উপহার হিসাবে গাছের চারা চান। ইচ্ছাপূরণও হয়। ১০ হাজার চারাগাছ দেওয়া হয় তাঁকে। গাছগুলো বিয়ের পর স্বামীর সঙ্গে প্রিয়ঙ্কা বসিয়েছিলেন।
কেরলের দুই সমাজসেবী রামনাথ এবং শ্রুতি। কেরল শ্রেষ্ঠ সাহিত্য পরিষদের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। দীর্ঘদিনের বন্ধু এই দু’জন বিয়ে করবেন মনস্থির করেন। নিজেদের বিয়েকে স্মরণীয় করতে এবং সমাজের প্রতি একটা বার্তা দিতে বিশেষ ব্যবস্থা নেন দু’জনেই। তাঁদের বিয়ের সমস্ত গয়না চটের বানানো হয়। এ ছাড়া বিয়েতে শীতল শ্যাম নামে এক রূপান্তরকামীকে নিমন্ত্রণ করেন। তিনিই ছিলেন বিয়ের প্রধান সাক্ষী। বিয়ে রেজিস্ট্রিতে তাঁরই সই ছিল।
মহারাষ্ট্রের ব্যবসায়ী মনোজ মুনাত। মেয়ের বিয়েতে ভবঘুরে, দরিদ্রদের জন্য ৯০টি ঘর বানিয়ে দিয়েছিলেন। ঘর বানাতে যে টাকা খরচ হয়েছে তার সবটাই তাঁর মেয়ের বিয়ের জন্য সঞ্চিত অর্থ। জাঁকজমক পূর্ণ বিয়ের আয়োজন না করে সাদামাটা ভাবে মেয়ের বিয়ে দেন তিনি। পরিবর্তে ওই টাকা দিয়ে গৃহহীনদের ঘর বানিয়ে দেন।
গুজরাতের ছোট্ট একটা গ্রাম হালধারু। আর এই গ্রামেই বাস ২২ বছরের নিশাদবানু ভাজিফধরের। নিজের বিয়েতে শিক্ষকদের জন্য বিশেষ আয়োজন করেন তিনি। মেমেন্টো এবং শাল দিয়ে নার্সারি থেকে কলেজ পর্যন্ত মোট ৭৫ জন শিক্ষককে সম্মানিত করেন নিশাদবানু। তাঁর পরিবার ১০ লক্ষ টাকা দান করেন দুটো স্কুলকে। এই দুই স্কুলে নিশাদ পড়াশোনা করেছিলেন।
বিয়ের মতো শুভ অনুষ্ঠানে বিধবাদের উপস্থিতি অশুভ বলে মনে করেন অনেকে। সমাজের এই কুসংস্কারটাই ভেঙে ফেলতে চেয়েছিলেন এই যুগল। তাই নিজের ছেলের বিয়েতে ১৮ হাজার বিধবাকে আমন্ত্রণ জানান গুজরাতের ব্যবসায়ী জিতেন্দ্র পটেল। আমন্ত্রিত প্রত্যেক বিধবাকে একটি করে কম্বল এবং চারাগাছ উপহার দেওয়া হয়েছিল এবং এঁদের মধ্যে ৫০০ জন দরিদ্রকে অর্থ উপার্জনের জন্য গরু উপহার দেন ওই ব্যবসায়ী।
গোপাল বাস্তাপারা। নিজের ছেলের বিয়েতে শুধু আত্মীয়-পরিজন এবং বন্ধুদের নিমন্ত্রণ করেননি সুরাতের এই ব্যবসায়ী, উল্টে ছেলের পাশাপাশি আরও ১০০ মেয়ের বিয়ে দেন। এঁরা প্রত্যেকেই দরিদ্র পরিবারের।