সোমবার ওয়ার্কিং কমিটি, রাহুলের অভিষেক পর্ব শুরু

কংগ্রেসের পক্ষ থেকে আজ জানানো হয়েছে, আগামী সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক ডাকা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:৪৫
Share:

রাহুল গাঁধী। —ফাইল চিত্র।

কংগ্রেসের সভাপতি পদে রাহুল গাঁধীর অভিষেকের পথ প্রশস্ত করতে দলের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক ডাকলেন সনিয়া গাঁধী। গুজরাত ভোটের আগে নরেন্দ্র মোদীর মোকাবিলায় রাহুলের রাজনৈতিক ওজন আরও বাড়াতেই এই কৌশল বলে দাবি পর্যবেক্ষকদের।

Advertisement

কংগ্রেসের পক্ষ থেকে আজ জানানো হয়েছে, আগামী সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানে সভাপতি পদে নির্বাচনের নির্ঘণ্ট চূড়ান্ত হবে। কংগ্রেস নেতাদের বক্তব্য, সাধারণ ভাবে ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকের পরে গোটা নির্বাচন প্রক্রিয়া শেষ করতে দিন দশেক সময় লাগে। কংগ্রেস নেতা জনার্দন দ্বিবেদী বলেন, ‘‘যদি আর কোনও প্রার্থী সভাপতি পদে না লড়েন, তা হলে নাম প্রত্যাহারের শেষ দিনেই নতুন সভাপতির নাম ঘোষণা হয়ে যাবে।’’ সভাপতি পদের জন্য রাহুল ছাড়া এখনও পর্যন্ত অন্য কারও নাম দেওয়ার সম্ভাবনাই নেই বলে কংগ্রেস সূত্রের খবর। ফলে সেই মোতাবেকই ওয়ার্কিং কমিটি ভোট প্রক্রিয়ার নির্ঘণ্ট স্থির করবে।

আরও পড়ুন: মজিদকে গোলকিপিংয়েই ফেরাতে চান ভাইচুং

Advertisement

কংগ্রেস সূত্রের মতে, রাহুলকে ঠিক কবে সভাপতি করা উচিত, তা নিয়ে দলের মধ্যে নানা মত রয়েছে। দলের একটা অংশ মনে করেন, যদি রাহুলের প্রচারের পরেও গুজরাত বা হিমাচলের বিধানসভা ভোটের ফল ভাল না হয়, তা হলে এই পদোন্নতি নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হতে পারে। তার প্রভাব পড়তে পারে আগামী বছর একাধিক বিধানসভা ভোটে। এমনকী লোকসভা ভোটেও। কংগ্রেসের অন্য একটি অংশের মতে, গুজরাতে এখন যা পরিস্থিতি, তাতে রাহুল বিজেপি বিরোধী হাওয়া তুলে প্রচারের মূল সুরটি বেঁধে দিয়েছেন। ভিতও গড়ে ফেলেছেন। এখন প্রয়োজন সেটাকে ধরে রাখা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এখনও সরকারি ভাবে গুজরাতে প্রচারে নামেননি। তিনি নামলে বিজেপির হাওয়া বাড়বে। এই অবস্থায় পর্যবেক্ষকদের মতে, শেষ পর্যন্ত যে দল হাওয়া ধরে রাখবে, তারাই ১৮২টির মধ্যে অন্তত ১২৫টি আসন পাবে। গুজরাত ভোটের আগেই সভাপতি করা হলে রাহুলের রাজনৈতিক ওজন বাড়বে। তাতে গুজরাত নির্বাচনেও কংগ্রেস ফায়দা পাবে বলে মত ওই অংশের।

তবে তাতে একটি আশঙ্কা থাকছেই। রাহুলের পদোন্নতি নিয়ে প্রচার গুজরাত ভোটের প্রচারকে ছাপিয়ে গেলেই সমস্যা। দলকে সুনিশ্চিত করতে হবে, এ সবে যেন ভোট প্রচারে কোনও বিঘ্ন না ঘটে। ওয়ার্কিং কমিটি এ সব কিছু মাথায় রেখেই নির্ঘণ্ট ঘোষণা করবে।

গত কয়েক মাস ধরে রাহুলের রাজনৈতিক সক্রিয়তাকে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবেই দেখছে বিজেপি। রোজ কোনও না কোনও বিষয়ে লাগাতার আক্রমণ করছেন মোদীকে। আজও রাফাল চুক্তি নিয়ে টুইট করে মোদীকে তোপ দেগেছেন কংগ্রেসের সহ-সভাপতি। যে কারণে দলের বৈঠকে খোদ মোদীকে অভয় দিয়ে বলতে হয়েছে, গুজরাত তাঁর হাতের মুঠোতেই রয়েছে। বিরোধীদের সক্রিয়তা নিয়ে চিন্তার কোনও কারণ নেই। ঘটনা হল, মুখে যা-ই বলুন, রাহুলকে গুরুত্ব দিতে বাধ্য হচ্ছেন বিজেপি নেতারা। বিশেষ করে তিনি যে ভাবে হার্দিক, জিগ্নেশের মতো সামাজিক আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত যুব নেতাদের পাশে টেনে গুজরাতের ভোট ময়দান দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন, তাতে চিন্তা বাড়ছে বিজেপির। সেই উদ্বেগকে উস্কে দিতে কংগ্রেসের একটি পক্ষ গুজরাত ভোটের আগেই রাহুলকে সভাপতি করার পক্ষপাতী। এই অবস্থায় সব পক্ষেরই নজর সোমবার ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকের দিকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন