নিজের বাক্যবাণেই এ বার জর্জরিত খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রতিপক্ষকে চোখ রাঙাতে গিয়ে যে বাক্যবাণ ছুড়েছিলেন, তা শেষমেশ ব্যুমেরাং হয়ে ফিরে এল তাঁর দফতরেই।
বিহারের মুজফ্ফরপুরের একটি জনসভায় সম্প্রতি নীতীশকে উদ্দেশ্য করে মোদী বলেছিলেন, ‘‘ওঁর ডিএনএ-তে কিছু গোলমাল আছে।’’ ভোটের আগে মোদীর এই মন্তব্য এক প্রকার লুফেই নেন নীতীশ। বিষয়টা যে মোটেও ব্যক্তিগত নয়, বরং এমন কথা বলে মোদী বিহারবাসীর ভাবাবেগে আঘাত করেছেন বলে পাল্টা জবাবও দেন তিনি। বিহারবাসীর ডিএনএ-তে যে খুঁত নেই তা প্রমাণ করতে প্রধানমন্ত্রীর দফতরেই চুল ও নখের নমুনা পাঠাতে বিহারবাসীকে আর্জিও জানান নীতীশ। আর তাতেই ঘুম ছুটেছে সাউথ ব্লকের কর্তাদের!
গত এক সপ্তাহ ধরে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের জন্য নির্ধারিত ডাকঘর নির্মাণ ভবনে বিহার থেকে আসতে শুরু করেছে বস্তা-বস্তা নখ আর চুলের নমুনা। সঙ্গে একটি করে চিঠি। তাতে লেখা—‘‘বিহারি হয়ে আমি গর্বিত। আমাদের ডিএনএ-তে কোনও খুঁত নেই। সন্দেহ থাকলে যাচাই করে নিন!’’ নির্মাণ ভবনের কর্মী ডালচন্দ্রের মতে মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই তাঁর নামে গড়ে ৫-৬ হাজার চিঠি আসে। বিহারের দৌলতে এখন সেই সংখ্যা এক লাফে লক্ষাধিকে গিয়ে ঠেকেছে।
এত নখ-চুলের নমুনা নিয়ে এখন হবেটা কী?
প্রধানমন্ত্রী দফতর থেকে কোনও নির্দেশ না আসায় সে সব বস্তা পড়ে ছিল নির্মাণ ভবনেই। কিন্তু আজ ডাকঘরে গিয়ে দেখা গেল সব উধাও। ডাককর্মীরা জানিয়েছেন, সে সব পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রী দফতরেই! একে তো ভোটের হাওয়া তার উপর বিহারবাসীর ভাবাবেগ। স্বাভাবিক ভাবেই প্রধানমন্ত্রীর দফতর এই নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে।
ডাক বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদও বিহারেরই নেতা। বিহারবাসীর ডিএনএ পরীক্ষার নমুনা নিয়ে যাবতীয় প্রশ্ন এড়িয়েই যাচ্ছিলেন। শেষে বললেন, ‘‘যাঁরা নমুনা পাঠিয়েছেন, তাঁরা কি বিহারের মহাজোটের রাজনৈতিক ডিএনএ খতিয়ে দেখেছেন? সেই জোট তো জন্মলগ্নেই ভাঙতে শুরু করেছে।’’ কথা শেষ করেই কার্যত চম্পট
দিলেন মন্ত্রীমশাই!