কুলভূষণ সুধীর যাদবের আগেও চরবৃত্তির অভিযোগ তুলে ভারতীয়ের মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করেছে পাকিস্তান। সর্বজিৎ সিংহ। তাঁর মুক্তির জন্য ভারত তীব্র চাপ তৈরি করেছিল। কিন্তু ফেরানো যায়নি তাঁকে। ২০১৩ সালে পাক জেলেই এক রহস্যজনক সংঘর্ষে মৃত্যু হয় তাঁর। সেই সর্বজিতের বোন দলবীর কউর আজ মুখ খুলেছেন কুলভূষণের মুক্তি চেয়ে। তাঁর কথায়, ‘‘সরকারের উচিত আন্তর্জাতিক আদালতে ওই রায়ের উপরে স্থগিতাদেশ চাওয়া।’’ এবং এই পথটির কথা সরকার গুরুত্ব দিয়েই ভাবছে বলে সাউথ ব্লক সূত্রের খবর। স্থির হয়েছে, সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের জন্য দ্বিপাক্ষিক স্তরে প্রবল চাপ তৈরি করা হবে। তাতে কাজ না হলে ‘হত্যার এই ছক’ রুখতে আন্তর্জাতিক স্তরে বিষয়টিকে নিয়ে যাওয়ার কথাও ভাবা হচ্ছে।
বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র গোপাল ওয়াগলে আজ বিবৃতিতে বলেছেন, ‘‘আইন এবং বিচার ব্যবস্থার প্রাথমিক নীতিকে অগ্রাহ্য করে এই ভারতীয় নাগরিককে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলে ভারত একে পূর্বপরিকল্পিত হত্যা বলে গণ্য করবে।’’ কারণ, ২০১৬-র ২৫ মার্চ থেকে এ বছর ৩১ মার্চের মধ্যে মোট ১৩ বার ভারতীয় দূতাবাসের মাধ্যমে যাদবকে আইনি সহায়তা দেওয়ার জন্য আবেদন করা হয়েছিল। কান দেয়নি ইসলামাবাদ। আর আজ পাক সেনা দাবি করেছে, কুলভূষণকে আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য আইনি সাহায্য দেওয়া হয়েছিল। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র বলেছেন, ‘‘গোটাটাই সাজানো। এটাও তাৎপর্যপূর্ণ যে আমাদের দূতাবাসকে জানানোই হয়নি, কখন কুলভূষণের বিচার করা হলো। পাকিস্তানেরই প্রবীণ নেতারা সন্দেহ প্রকাশ করেছেন, কূলভূষণের বিরুদ্ধে তথ্য প্রমাণের সত্যতা নিয়ে।’’
পাক সেনাপ্রধান কমর জাভেদ বাজওয়া নিজে ওই রায়ের সত্যতা স্বীকার করলেও নওয়াজ শরিফের সরকার নীরবই রয়েছে। সে দেশের অনেক নেতা-কর্তা দাবি করছেন, ঠিক হয়েছে। বালুচিস্তান-সহ পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানোর জুতসই জবাব এটা। এর মধ্যেও দু’দেশের কিছু মানুষ পথ খুঁজছেন সমাধানের। তাঁদের প্রশ্ন, ঠান্ডা লড়াইয়ের সময়েও তো আমেরিকা ও সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন ধরা পড়া চরদের একে অপরকে ফিরিয়ে দিয়েছে। প্রতিবেশী ভারত-পাকিস্তান কি তেমনটা করতে পারে না?