আপনারা নিশ্চই ভাবছেন, এই ঘোর গ্রীষ্মে - কাশবন – দুটি ছোট ছেলেমেয়ে – ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে ট্রেনের চলে যাওয়া – কেন এমন চিত্রের অবতারণা...! কিন্তু উপরের ঐ দৃশ্যটি কি আপনাদের মনকে আকুল করে তুলল না! ঐ কালজয়ী দৃশ্যটিই তো পর্দায় এঁকে রেখে গেছেন যিনি তাঁর নাম নিশ্চই এতক্ষণে আপনাদের মনে পড়ে গেছে। হ্যাঁ, সত্যজিৎ রায়! ভারতবর্ষের অবিসংবাদিত চলচ্চিত্র পরিচালক। কেবলমাত্র চলচ্চিত্র পরিচালক বললে ভুল হয় – তাঁর প্রতিভা ছিল বহুধা বিস্তৃত – লেখক, চিত্রশিল্পী, সঙ্গীতকার, সুরকার – একইসঙ্গে অনেক গুণের সমাহার। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, উপরের দৃশ্যটি বিখ্যাত চলচ্চিত্র ‘পথের পাঁচালী’র। লেখক বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়ের কালজয়ী উপন্যাসকে পর্দায় এঁকে রাখলেন সত্যজিৎ রায়। ১৯৫৫ সালে তৈরি হল ‘পথের পাঁচালী’ ছবি। তারপর বালক অপুর কৈশোর আর যৌবনকেও তিনি ধরে রাখলেন চলচ্চিত্রে। ‘অপরাজিত’ এবং ‘অপুর সংসার’। বিভূতিভূষণের ‘অপরাজিত’ উপন্যাসে কিশোর অপু জীবনের ঘাত প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে চলতে চলতে ক্রমশঃ যুবক হয়ে উঠেছে। জীবনে দারিদ্রের সম্মুখীন সে হয়েছে ঠিকই কিন্তু এরই মাঝে সে বাঁচিয়ে রেখেছে তার কল্পনাপ্রবণ স্বপ্নিল মনটাকে। শত অভাব অনটনও অপুর ঐ অনাবিল নিষ্পাপ সরল উদাস মনটাকে নষ্ট করতে পারে নি। সংসারে থেকেও সে যেন নেই – জীবন তাকে চির-বৈরাগীই করে রেখেছে চিরকাল। বালকবয়সে চলে গেছে তার দিদি দুর্গা। দুর্গার মৃত্যুর পর বিভূতভূষণের সেই অনুচ্ছেদটি ভোলা যায় কখনো! আমার পরিচিত এক বৃদ্ধ মানুষকে আজও মুখস্থ বলতে শুনেছি সেই অনুচ্ছেদ, ‘আকাশের নীল আস্তরণ ভেদ করিয়া মাঝে মাঝে অনন্তের হাতছানি আসে – পৃথিবীর বুক থেকে ছেলেমেয়েরা চঞ্চল হইয়া ছুটিয়া গিয়া অনন্ত নীলিমার মধ্যে ডুবিয়া নিজেদের হারাইয়া ফেলে – পরিচিত ও গতানুগতিক পথের বহুদূরপারে কোন পথহীন পথে – দুর্গার অশান্ত, চঞ্চল প্রাণের বেলায় জীবনের সেই সর্বাপেক্ষা বড় অজানার ডাক আসিয়া পৌঁছিয়াছে!’ কি অসাধারণ অভিব্যক্তি যে, পাঠক সারাজীবন তা মনে রেখে দেয়।
আর চলচ্চিত্রে দুর্গার মৃত্যুর পরের দৃশ্যটির কথা মনে পড়ে? হরিহর বাড়ি ছিল না বহুদিন। বাড়ি ফিরে সে তার স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে সর্বজয়াকে দেখাতে লাগল গৃহস্থালীর টুকিটাকি জিনিস। অতিরিক্ত শান্ত সর্বজয়াকে দেখে তার বিন্দুমাত্র খটকাও লাগল না। কেবল যখন দুর্গার শাড়িখানা বার করে সে সর্বজয়ার হাতে দিল – তখন সর্বজয়ার সেই বুকফাটা কান্না দর্শকদের চোখেও কি জল আনে না? এমনই মর্মস্পর্শী সে দৃশ্য!
দিদি দুর্গা চলে যায়। নিশ্চন্দিপুরের ভিটের মায়া ত্যাগ করে হরিহর ছেলে অপু আর স্ত্রী সর্বজয়াকে নিয়ে কাশী চলে আসে। কাশীতে অপু হারায় তার বাবাকে। তারপর মা সর্বজয়া আর কিশোর অপুর সংগ্রাম জীবনযুদ্ধে টিকে থাকার জন্য। সেইখান থেকেই শুরু ‘অপরাজিত’ উপন্যাস। জীবনের নানা প্রতিকূল বাঁকে ঠোক্কর খেতে খেতেও একসময় অপু ঠিক ঘুরে দাঁড়ায়। ভর্তি হয় কলেজে। কিন্তু বিধাতা যে তাকে বন্ধন হীন করে রাখার জন্যই গড়েছে। শেষ বন্ধন মা সর্বজয়াও জীবনের মায়া কাটিয়ে চলে যায় অনেক দূরে। কত দুঃখ, কত অপমান সয়েছে সর্বজয়া সারা জীবন ধরে - মৃত্যুতে তার পরিসমাপ্তি! আর কি করুণভাবে এঁকেছেন বিভূতিভূষণ সর্বজয়ার মৃত্যুর ছবিখানি। অপু কাছে নেই, একা বাড়িতে......অন্ধকার রাত্রি...অসুস্থ সর্বজয়া মৃত্যুভয়ে শংকিত। তবু সে ভয় যেন কেটে যায় বাইরের জ্যোৎস্নালোকিত রাত্রির দিকে চেয়ে। মনে হয় জানালার গরাদ ধরে যেন দাঁড়িয়ে আছে সেই ছোট্ট অপু...সেই ফুলের কুঁড়ির মত কচি মুখ...সেই ডাগর চোখের নীল চাহনি...চুল কোঁকড়া কোঁকড়া...মুখচোরা, ভালমানুষ অপু...বুঝি মৃত্যু এসেছে...কিন্তু তার ছেলের বেশে, তাকে আদর করে ডেকে নিতে...এতই সুন্দর!
মায়ের মৃত্যুসংবাদ যখন অপু পেল, তার এক অদ্ভুত মনের ভাব হল, এই মনোভাবের সঙ্গে সে আগে পরিচিত ছিল না। এক অদ্ভুত আনন্দমিশ্রিত মুক্তির নিঃশ্বাস...একটা বাঁধনছেঁড়ার উল্লাস...কিন্তু তা অতি অল্প সময়ের জন্য। নিজের অজ্ঞাতসারেই অপুর যাযাবর মন অপুর সংসারের প্রতি মায়াকে ক্ষণিকের জন্য যেন নিষ্ক্রিয় করে দেয়। অপু যে চির-পথিক।
বন্ধন তার জীবনে আবার আসে স্ত্রী অপর্ণার বেশে। কিন্তু সেও কি স্থায়ী হয়? না, সন্তানের জন্ম দিতে গিয়ে সেও চলে যায় চিরতরে। আবার একা হয়ে যায় অপু। মনে পড়ে ‘অপুর সংসার’ ছবির শেষ দৃশ্য! অপুর ছেলে ছোট্ট কাজল। মামাবাড়িতেই সে এতটা বড় হয়েছে। কতদিন পর বাবা ফিরে এসেছে। বাবা আর ছেলে, অপু আর কাজলের মিলন হয়েছে। অপুর চির-পথিক মনের মধ্যে জেগে উঠছে বাবার অপত্যস্নেহ। এই ছেলেই যে পৃথিবীতে তার শেষ বন্ধন। তাই ছেলেকে কাঁধে নিয়ে চলতে থাকে অপু...চির-পথিক অপু পথ চলে কোন বাঁধনহীন পথের সন্ধানে!
জীবনপথের পথিক আমরা - অনন্তকাল ধরে পথ চলেছি। কত অপু, কত দুর্গা, কত সর্বজয়া, কত হরিহর, কত অপর্ণা মহাকালের পথ বেয়ে কোথায় হারিয়ে গেছে। একজন গেছে আর একজন এসেছে তার স্থান পূরণ করতে। ‘পথের পাঁচালী’ মানুষের জীবনের পথচলারই কাহিনি – জীবনের ছোট ছোট সুখ-দুঃখ, চাওয়া-পাওয়া, ব্যথা-বেদনা, হাসি-কান্না দিয়ে মোড়া এক অনুপম গাথা। তাই তো অপু আমাদের এত প্রিয়, এত আপন। বিভূতিভূষণের এই অপুকেই চলচ্চিত্রে জীবন্ত করে রেখে গেছেন সত্যজিৎ রায়। তিনিই অপুকে পৌঁছে দিয়েছেন বিশ্বের দরবারে।
সত্যজিৎ রায়কে নিয়ে লিখতে বসলে কেবল অপুকে নিয়েই কত কথা যে মনে আসে। কিন্তু এই সীমিত পরিসরে তা বিস্তৃতভাবে লেখা তো সম্ভব নয়। তাই একটু ছুঁয়েই চলে যেতে হয়। ১৫৫৫ সালে ‘পথের পাঁচালী’, ১৯৫৬ সালে ‘অপরাজিত’ এবং ১৯৫৯ সালে তৈরি হয় ‘অপুর সংসার’ চলচ্চিত্র। এর মাঝে ১৯৫৮ তে ‘পরশ পাথর’ এবং ‘জলসাঘর’। ‘পরশ পাথর’ এ তুলসী চক্রবর্তী এবং ‘জলসাঘর’ এ ছবি বিশ্বাস। এই দুই প্রবাদপ্রতিম অভিনেতার অভিনয় কি ভোলা যায়? ১৯৬০ থেকে ১৯৬৫ সালের মধ্যে নির্মিত হয় সত্যজিত রায়ের পরিচালনায় ‘দেবী’, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের তিনটি ছোটগল্প ‘পোস্টমাস্টার’, ‘মণিহারা’ এবং ‘সমাপ্তি’ নিয়ে ‘তিন কন্যা’, ‘কাঞ্চনজঙ্ঘা’, ‘অভিযান’, ‘মহানগর’, ‘চারুলতা’, ‘কাপুরুষ ও মহাপুরুষ’।
১৯৬৬ থেকে ১৯৭৫ এর মধ্যে তৈরি হয় ‘নায়ক’, ‘চিড়িয়াখানা’, ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’, ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’, ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’, ‘সীমাবদ্ধ’, ‘অশনি সংকেত’, ‘সোনার কেল্লা’, ‘জন অরণ্য’। ১৯৭৭ থেকে ১৯৯২ এর মধ্যে ‘শতরঞ্জ কে খিলাড়ি’, ‘জয় বাবা ফেলুনাথ’, ‘হীরক রাজার দেশে’, ‘সদ্গতি’, ‘ঘরে বাইরে’, ‘গণশত্রু’, ‘শাখা প্রশাখা’, ‘আগন্তুক’। এছাড়াও তিনি কিছু তথ্যচিত্র এবং স্বল্পদৈর্ঘের চলচ্চিত্রও নির্মাণ করেছিলেন।
সত্যি কথা বলতে কি সত্যজিৎ রায় আমাদের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে গেছেন। আমরা বড় হয়েছি তাঁর সিনেমা দেখতে দেখতে, তাঁর লেখা পড়তে পড়তে। ছোটদের জন্যও তাঁর অবদান নেহাৎ কম নয়। আজও ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’ সিনেমার গান আর ভূতের নাচ ছোটদের পাগল করে দেয়। আর তাঁর কিশোর সাহিত্য – ফেলুদা সিরিজ বা প্রফেসর শংকু কিংবা অন্যান্য রোমহর্ষক গল্প আজও আমাদের সমানভাবে আকর্ষণ করে।
কেন এই বৈশাখে সত্যজিৎ রায়কে নিয়ে লিখলাম? এই বৈশাখেই যে তাঁর জন্ম। মৃত্যুও এই বৈশাখেই। তাই কি বৈশাখের খররৌদ্রের মত তাঁর প্রতিভার প্রবল ছটা! তিনি আমাদের গর্ব – বাংলার গর্ব, ভারতবর্ষের গর্ব। ১৯২১ সালের ২রা মে তাঁর জন্ম এবং মৃত্যু ১৯৯২ সালের ২৩ শে এপ্রিল। সারা জীবন তিনি অজস্র পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। এর মধ্যে সবথেকে উল্লেখযোগ্য হল ১৯৯২ সালে তিনি যখন রোগশয্যায়, সেই সময় দ্য এ্যাকাডেমি অফ মোশন পিকচার আর্টস এণ্ড সায়েন্সেস তাঁকে ‘অনারারি এ্যাকাডেমি এ্যাওয়ার্ডস’ এ ভূষিত করে। এই পুরস্কার চলচ্চিত্রের সর্বোচ্চ সম্মান অস্কার – তাঁকে ‘লাইফটাইম এ্যাচিভমেন্ট’ এর জন্য দেওয়া হয়। ১৯৯২ সালেই তাঁকে দেওয়া হয় ভারত সরকারের সর্বোচ্চ সম্মান ‘ভারতরত্ন’। সত্যজিৎ রায়কে জানাই আমাদের সশ্রদ্ধ প্রণাম।
সুধীজন, বাংলা নববর্ষ ১৪২৩ সাল শুরু হয়ে গেছে। এই সময় প্রতি বছরই নভি মুম্বইয়ে অনুষ্ঠিত হয় বিভিন্ন অনুষ্ঠান – বিশেষ করে নাট্যানুষ্ঠান। আগামী তিরিশে এপ্রিল নভি মুম্বইয়ের ভাসির সেক্টর ছয়ে মারাঠি সাহিত্য সংস্ক্রুতি এবং কলা মণ্ডলে সন্ধে সাড়ে ছ’টায় অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ‘দিশারী’র ব্যবস্থাপনায় একটি অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানে থাকবে প্রথমে একটি নাচের অনুষ্ঠান ‘এলিমেন্টস’ এবং পরে নাটক ‘প্রাণের প্রহরী’ সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখা। ‘দিশারী’ র তিরিশ বছর পূর্তি উপলক্ষেই এই অনুষ্ঠানের আয়োজন। এই অনুষ্ঠানের একটি সৎ উদ্দেশ্যও রয়েছে। এই অনুষ্ঠান থেকে সংগৃহীত অর্থের কিছু অংশ দান করা হবে পুণের মেডিকেয়ার মাল্টিস্পেশালিটি হসপিটালে। এই হসপিটাল ২০০৭ সালে ডক্টর গণেশ রাখ প্রতিষ্ঠা করেন। এই হসপিটালের বিশেষত্ব হল এখানে যদি শিশুকন্যা জন্মায় তাহলে একটি নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্ত তার চিকিৎসা করতে কোন অর্থব্যয় করতে হয় না। নিঃসন্দেহে শিশুকন্যার অভিভাবকদের ক্ষেত্রে এটি একটি সুখবর। আমাদের দেশে যেখানে শিশুকন্যাদের অনেক সময়েই লিঙ্গবৈষম্যের শিকার হতে হয় সেখানে তাদের উন্নতিকল্পে এই হসপিটালের ইতিবাচক মনোভাব সত্যিই প্রশংসনীয়। ‘দিশারী’রও সাধুবাদ প্রাপ্য এমন একটি কাজে সামিল হওয়ার জন্য। ‘দিশারী’র এই অনুষ্ঠানে যে নাটক অভিনীত হবে এবং যে নাচের অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হবে, সেগুলিও শিশুকন্যাদের স্বপক্ষেই বার্তা দেবে। ‘দিশারী’ নভি মুম্বই, মুম্বই, পুণে বা আরো অন্যান্য স্থানে বিশেষ পরিচিত নাম বিভিন্ন সামাজিক নাটক বা অনুষ্ঠান সংঘটিত করার জন্য। এর পূর্বেও ‘দিশারী’র পক্ষ থেকে সাহায্য করা হয়েছে বিভিন্ন সংস্থাকে যেমন – ‘এ্যালার্ট ইণ্ডিয়া’ কুষ্ঠরোগ নিরাময়ের জন্য একটি সংস্থা, ভারত সেবাশ্রম সংঘ, ফাদার এ্যগনেল বালভবন (অনাথ আশ্রম), নির্মলা নিকেতন (বৃদ্ধাশ্রম), ‘মাউথ এণ্ড ফুট পেইন্টিং আর্টিস্ট, ইণ্ডিয়া প্রভৃতি। ‘দিশারী’র কর্ণধার দম্পতি দীপায়ন গোস্বামী ও শাশ্বতী গোস্বামীর নিরলস তত্ত্বাবধানে এই প্রতিষ্ঠান তিরিশ বছর পূর্ণ করেছে।
সম্প্রতি গত ৩রা এপ্রিল এবং ১০ই এপ্রিল নভি মুম্বইয়ের ভাসিতে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল নাট্যোৎসব। ৩রা এপ্রিল মারাঠি সাহিত্য এবং সংস্ক্রুতি কলা মণ্ডলে ‘চেম্বুর ক্লাব’ এর ব্যবস্থাপনায় আমরা দেখলাম তিনটি একাংক নাটক। প্রথমে সম্পূর্ণ মহিলাদের দ্বারা পরিবেশিত নাটক ‘সমীকরণ’। এখানে পরিচালকও মহিলা এবং কলাকুশলীরাও ছিলেন মহিলা। অণুশক্তিনগরের ‘গন্ধর্ব’ নাট্যগোষ্ঠীর এই নাটকে প্রত্যেকে সুঅভিনয় করেন। বিশেষ করে পরিচালক মিঠু ভট্টাচার্য অভিনয়েও সকলের প্রশংসা অর্জন করেন। দ্বিতীয় নাটক পশ্চিমবঙ্গের চুঁচূড়ার ‘এষণা’ নাট্যগোষ্ঠীর ‘বাতজ বেদনা’। এটিও অভিনয়ের গুণে উপভোগ্য হয়ে ওঠে। তৃতীয় নাটক ছিল ‘চেম্বুর ক্লাব’ এর প্রযোজনায় ও তাপস করের পরিচালনায় ‘আঠাশে এপ্রিল’। এই নাটকেও কলাকুশলীরা ভাল অভিনয় করেন। চেম্বুর ক্লাব এর পক্ষ থেকে নাটক রচয়িতা শংকর বসুঠাকুরকে সম্বর্ধনা দেওয়া হয়।
১০ই এপ্রিল ভাসির বিষ্ণুদাস ভাবে নাট্যগৃহে অনুষ্ঠিত হল মনোজ মিত্রের লেখা নাটক ‘কেনারাম বেচারাম’। পরিচালনায় ছিলেন আনন্দদীপ দাশগুপ্ত। এটি ছিল চমৎকার একটি নাট্য উপস্থাপনা। প্রত্যেক শিল্পীর অভিনয়ের গুণে নাটকটি এক অন্য মাত্রা পেয়েছে। ‘ওশান এন্টারটেইনমেন্ট’ সংস্থার উদ্যোগে এই নাটকটি অনুষ্ঠিত হয়। এই অনুষ্ঠানে সংগৃহীত অর্থের কিছু অংশ তুলে দেওয়া হয় ভারত সেবাশ্রম সংঘের ক্যানসার রোগীদের সাহায্যের জন্য। ‘ওশান এন্টারটেইনমেন্ট’ এর কর্ণধার ইন্দ্রজিৎ সান্যালের ধন্যবাদ প্রাপ্য এমন সুঅভিনীত একটি নাটক উপহার দেওয়ার জন্য। এবার শেষ করার পালা। যখন এই লেখা লিখছি সূর্যের তাপে ঝলসে যাচ্ছে সবকিছু। তাপমাত্রা বাড়ছে ক্রমশঃ। গতবছর ভাল বৃষ্টি হয়নি, তাই মহারাষ্ট্রে জলসংকট শুরু হয়ে গেছে। মুম্বই ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চল তীব্র জলকষ্টের সম্মুখীন হয়েছে। এখন একটিই প্রার্থনা ‘আল্লা মেঘ দে, পানি দে’।