এ কোন দেশ, বিস্মিত অশীতিপর স্ট্যান স্বামী

গত কয়েক মাস ধরে ঝাড়খণ্ডের কয়েকটি জেলায় যে ‘পত্থলগারি আন্দোলন’ চলছে তাতে সক্রিয় ভাবে জড়িত স্ট্যান।

Advertisement

আর্যভট্ট খান

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০১৮ ০৫:০০
Share:

স্ট্যান স্বামী। ছবি: মানব চৌধুরী

তাঁর ফোনটা মঙ্গলবার বাজেয়াপ্ত করেছে মহারাষ্ট্র পুলিশ। তবে দমে যাওয়ার পাত্র নন রাঁচীর অশীতিপর সমাজকর্মী ফাদার স্ট্যান স্বামী। বুধবার নামকুমের আশ্রমে তাঁর এক সহকর্মীর মোবাইল ফোনে জানালেন, ‘‘আদিবাসী ও দলিতদের অধিকার রক্ষার জন্য সারা জীবন লড়াই করে যাব। তাতে কেউ দেশদ্রোহী বললেও কিছু এসে যায় না।’’

Advertisement

মঙ্গলবার সকালে তাঁর নামকুমের আশ্রমে হানা দিয়ে মহারাষ্ট্র পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেছে তাঁর মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, বেশ কিছু সিডি ও নথিপত্র। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার ষড়যন্ত্রে যুক্ত থাকা এবং মাওবাদীদের সঙ্গে ঘনিষ্টতা। স্ট্যানকে পুলিশ গ্রেফতার না করলেও তাঁকে জেরা করেছে। এই ঘটনায় প্রাথমিক ভাবে কিছুটা হতচকিত। গত কাল তিনি এই নিয়ে মুখ না খুললেও বুধবার থেকে ফের নিজস্ব মেজাজে। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘ওই সমাজকর্মীদের মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। অবিলম্বে তাঁদের মুক্তির দাবি করছি।’’

মহারাষ্ট্রে চলতি বছরে ভীমা-কোরেগাঁওয়ে দলিতদের বিজয় দিবস উৎসবে হিন্দুত্ববাদীদের সঙ্গে দলিতদের সংঘর্ষ হয়। ওই ঘটনায় এ কজন নিহত হন। জখম হন অনেকে। সেই সংঘর্ষের তদন্তে নেমে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ঝাড়খণ্ড পুলিশ সূত্রে খবর, তাদের জেরা করার সময়েই উঠে এসেছে স্ট্যানের নাম। তবে তাঁর কথায়, ‘‘আমি কোনও দিন মহারাষ্ট্রে যাইনি। তবে দেশের বহু সমাজকর্মীদের সঙ্গে কাজের সূত্রেই আমার পরিচয় আছে।’’ তাঁর বক্তব্য, সেই সূত্রে তাঁর নাম উঠে আসতেই পারে। কিন্তু সে জন্য তাঁর ব্যক্তিগত ফোন থেকে শুরু করে ল্যাপটপ সিডি, কাগজপত্র বাজেয়াপ্ত করল পুলিশ! আদতে তামিল স্ট্যান বলেন, ‘‘গত তিরিশ বছর ধরে ঝাড়খণ্ডে এই লড়াই করতে গিয়ে ইউপিএ সরকারের সময়েও নানা রকম বাধার মুখে পড়েছি। কিন্তু এ তো নজিরবিহীন।’’ তাঁর প্রশ্ন, ‘‘আমরা কোন দেশে
বাস করছি!’’

Advertisement

গত কয়েক মাস ধরে ঝাড়খণ্ডের কয়েকটি জেলায় যে ‘পত্থলগারি আন্দোলন’ চলছে তাতে সক্রিয় ভাবে জড়িত স্ট্যান। এর সমর্থনে তিনি সোশ্যাল মিডিয়াতেও বেশ কিছু পোস্ট করেন। তার পরই তাঁর বিরুদ্ধে ঝাড়খণ্ড পুলিশ এফআইআর দায়ের করে। মঙ্গলবারের ঘটনার পর রাঁচীর বহু সমাজকর্মী স্ট্যানের নামকুমের আবাসে ভিড় করেন। জনজাতি অধিকার রক্ষার নেত্রী বাসবী কিরো বলেন, ‘‘ফাদার স্ট্যানের মতো যাঁরাই দলিত ও জনজাতিদের হয়ে আন্দোলন করছেন তাঁদেরকেই ‘আর্বান নকশাল’ বলে দাগিয়ে দিচ্ছে সরকার।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন