বন্‌ধে নাজেহাল হাইলাকান্দি, স্তব্ধ কাছাড়

বন্‌ধে নাজেহাল হাইলাকান্দি। আজ ফের বন্‌ধের ডাক দেওয়া হয়েছিল বরাকে। ৮ দিনে এ নিয়ে তিন বার। তার প্রভাব পড়ল হাইলাকান্দিতেও। শিলচরের বড়খলায় ট্রাকের ধাক্কায় এক পথচারীর মৃত্যু ও তার পরিপ্রেক্ষিতে চালককে আগুনে ফেলে খুনের ঘটনা ঘিরে উত্তপ্ত বরাক উপত্যকা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদাদাতা

হাইলাকান্দি ও শিলচর শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০১৫ ০৪:০৫
Share:

ময়দান। ট্রাক চালক খুনের প্রতিবাদে ডাকা বন্‌ধে সুনসান হাইলাকান্দির রাস্তায় ক্রিকেট। সোমবার অমিত দাসের তোলা ছবি।

বন্‌ধে নাজেহাল হাইলাকান্দি। আজ ফের বন্‌ধের ডাক দেওয়া হয়েছিল বরাকে। ৮ দিনে এ নিয়ে তিন বার। তার প্রভাব পড়ল হাইলাকান্দিতেও।

Advertisement

শিলচরের বড়খলায় ট্রাকের ধাক্কায় এক পথচারীর মৃত্যু ও তার পরিপ্রেক্ষিতে চালককে আগুনে ফেলে খুনের ঘটনা ঘিরে উত্তপ্ত বরাক উপত্যকা। তা নিয়ে বন্‌ধ ডাকছে বিভিন্ন সংগঠন। তাতেই সমস্যায় সাধারণ মানুষ। বন্‌ধ চাইছেন না অনেকেই। এ দিন ১২ ঘণ্টার বন্‌ধ ডেকেছিল জেলা বাণিজ্যিক চালক সংস্থা, জেলা ট্রেভেলার চালক ইউনিয়ন, জেলা ট্রাক চালক সমিতি, জেলা হালকা গাড়ি চালক সমিতি। ভোর থেকেই জেলার জনজীবন কার্যত স্তব্ধ হয়ে যায়। এর আগে বিজেপির বরাক বন্‌ধ ও ২ অক্টোবর পাঁচটি সংগঠনের ডাকা হাইলাকান্দি বন্‌ধে নাজেহাল হয়েছে একাংশ জনতা। তাই বন্‌ধ আর চাইছেন না তাঁরা।

এ সবে বিরক্ত লেখিকা ঋতা চন্দ। তিনি বলেন, ‘‘বন্‌ধ কোনও সমস্যার সমাধান হতে পারে না। আলোচনায় বসে সমাধানসূত্র খোঁজা উচিত।’’ ঋতাদেবী বন্‌ধ-সংস্কৃতি নিয়ে মনোভাব বদলানোর আহ্বান জানান।

Advertisement

মনাছড়ার সবজি বিক্রেতা সিরাজউদ্দিন, শনবিলের মাছবিক্রেতা প্রাণেশ দাসের মতো ব্যবসায়ীদের বক্তব্য— বন্‌ধ ডেকে লাভ হবে না। কোনও সমস্যার সমাধান সবাইকে আলোচনার মাধ্যমেই খুঁজতে হবে।

হাইলাকান্দি এস এস কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবদুল করিম মনে করেন, হিংসা কোনও সমস্যার সমাধান আনতে পারে না। তাঁর মন্তব্য, ‘‘বন্‌ধ শ্রমজীবী মানুষের জন্য কার্যত অভিশাপ। এক দিন কাজ বন্ধ হলে তাঁদের অনেকের পরিবারকে অনাহারে থাকতে হয়।’’ তাঁর মতে, বন্‌ধের পিছনে রাজনীতির অঙ্ক থাকে। সাধারণ মানুষের অনেকেই তার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত নয়। তাই বন্‌ধের পথে না হেঁটে অন্য ভাবে প্রতিবাদ জানানো উচিত। ট্রেভেলার বাস মালিক সংস্থার সম্পাদক মুফজ্জল হুসেন বড়ভুঁইঞা এ দিনের বন্‌ধ সর্বাত্মক হয়েছে বলে দাবি করেন। এএসপি রাজমোহন রায় জানান, বন্‌ধে অপ্রীতিকর কোনও ঘটনার খবর নেই।

বনধ পালনের জন্য কাছাড়ে কোনও প্রচার ছিল না। ছিল না অবরোধও। হাইলাকান্দির কয়েকটি সংস্থা তাদের জেলার সঙ্গে কাছাড়-করিমগঞ্জেও বনধের ঘোষণা করেছিল। তার জেরেই কাছাড় জেলায় এ দিন কোনও যানবাহন চলেনি। অনেক জায়গায় দোকানপাট বন্ধ ছিল। অফিস-আদালতে উপস্থিতির হার ছিল নগণ্য। অধিকাংশ স্কুল-কলেজে ক্লাস হয়নি। তবে বনধ ঘিরে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর নেই।

কাছাড় জেলার ময়নাগড়ে পথ দুর্ঘটনায় এক যুবকের মৃত্যুর পর চালককে পিটিয়ে মেরে ফেলার প্রতিবাদে আজ বনধ ডাকে হাইলাকান্দি জেলা বাণিজ্যিক চালক সংস্থা, জেলা ট্র্যাভেলার চালক ইউনিয়ন, জেলা ট্রাক চালক সমিতি। নিহত চালক হাইলাকান্দির বড়বন্দের বাসিন্দা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন