প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
হাইওয়েতে গাড়ি চালানোর সময় কোনও রকম সঙ্কেত না দিয়ে হঠাৎ ব্রেক কষলে অনেক সময় দুর্ঘটনা হয়। এমন পরিস্থিতিতে গাড়ি থামানো বা ব্রেক কষার আগে পিছনে থাকা গাড়িগুলিকে সঙ্কেত দেওয়া জরুরি। অন্যথায়, যদি কোনও দুর্ঘটনা ঘটে, তা হলে ওই চালককে তার জন্য দায়ী করা হতে পারে। মঙ্গলবার একটি দুর্ঘটনার মামলার প্রেক্ষিতে এমনই পর্যবেক্ষণ শোনাল সুপ্রিম কোর্ট।
বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়া এবং বিচারপতি অরবিন্দ কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ ২০১৭ সালের একটি দুর্ঘটনা সংক্রান্ত মামলার শুনানি হয় মঙ্গলবার। বিচারপতি ধুলিয়া বলেন, ‘‘হাইওয়েতে গাড়ি অত্যন্ত দ্রুত গতিতে চলে। এমন পরিস্থিতিতে যদি কোনও চালক গাড়ি থামাতে চান, তা হলে পিছনে আসা গাড়িগুলিকে সঙ্কেত দেওয়া জরুরি।’’
মামলাটি তামিলনাড়ুর কোয়েম্বত্তূরের। ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্র মহম্মদ হাকিম বাইকে করে হাইওয়ে ধরে যাচ্ছিলেন। তাঁর সামনে থাকা একটি গাড়ি আচমকা ব্রেক কষে। ফলে গাড়িতে ধাক্কা মেরে হাইওয়েতে পড়ে যান তিনি। সেই সময় পিছন থেকে আসা একটি বাস তাঁর বাঁ পা পিষে দিয়ে চলে যায়। পরে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তা বাদ দিতে হয়। মঙ্গলবার মামলার শুনানিতে আদালতের প্রশ্নে গাড়িচালকের যুক্তি, তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী গাড়িতে ছিলেন। আচমকা তাঁর বমির উদ্রেক হয়, তাই গাড়ি থামান। কিন্তু চালকের এই যুক্তিকে খারিজ করে দিয়েছে আদালত। তারা জানায়, গাড়িচালকের এই যুক্তি গ্রহণযোগ্য নয়। যদি কোনও আপৎকালীন পরিস্থিতিও সৃষ্টি হয়, তা হলেও হাইওয়েতে আচমকা ব্রেক কষা বিপজ্জনক এবং দায়িত্বজ্ঞানহীনতার শামিল।
সংশ্লিষ্ট গাড়িচালক ৫০ শতাংশ, বাসচালক ৩০ শতাংশ এবং বাইকচালক হাকিমও এই দুর্ঘটনার জন্য ২০ শতাংশ দায়ী বলে পর্যবেক্ষণ আদালতের। তাদের পর্যবেক্ষণ, হাকিমের কাছে বৈধ লাইসেন্স ছিল না এটা ঠিকই, কিন্তু তাঁর দূরত্ব বজায় রেখে বাইক চালানো উচিত ছিল। আর সেটি তিনি করেননি। ফলে এখানে তাঁরও গাফিলতি রয়েছে। ১ কোটি ১৪ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ হিসাবে হাকিমকে দেওয়ার বিষয়ে স্থির হয় প্রথমে। কিন্তু এই দুর্ঘটনায় তাঁর ২০ শতাংশ দায় থাকায় সেই ক্ষতিপূরণের টাকা কমিয়ে ৯১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা করা হয়। আর এই টাকা বাসের বিমা সংস্থাকে চার সপ্তাহের মধ্যে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।