Shaheen Bagh

কোর্টের মধ্যস্থতা শাহিন বাগে

শাহিন বাগের আন্দোলনের অন্যতম মুখ বিলকিস ‘দাদি’ বলেন, ‘‘আদালত থেকে কেউ দেখা করতে এলে অবশ্যই দেখা করব, কথা বলব আমরা।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৪:৫৬
Share:

ফাইল চিত্র।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছিলেন, শাহিন বাগের আন্দোলনকারীরা এলে তিনি কথা বলতে রাজি। সুপ্রিম কোর্ট আজ কেন্দ্রীয় সরকারকে বাইরে রেখে, শাহিন বাগের আন্দোলনকারীদের বোঝানোর দায়িত্ব দিল আইনজীবী সঞ্জয় হেগড়ে ও সাধনা রামচন্দ্রনকে। তাঁদের সঙ্গে প্রাক্তন মুখ্য তথ্য কমিশনার ওয়াজাত হাবিবুল্লাকেও রেখেছে সুপ্রিম কোর্ট।

Advertisement

যা শুনে শাহিন বাগের আন্দোলনের অন্যতম মুখ বিলকিস ‘দাদি’ বলেন, ‘‘আদালত থেকে কেউ দেখা করতে এলে অবশ্যই দেখা করব, কথা বলব আমরা।’’

এক সময়ে ২০০২-এর গুজরাত দাঙ্গার নিপীড়িতদের জন্য বাড়তি ক্ষতিপূরণের দাবিতে আইনজীবী হিসেবে লড়েছিলেন আইনজীবী সঞ্জয় হেগড়ে। গোরক্ষক বাহিনীকে নিষিদ্ধ করা, গণধোলাইয়ের বিরুদ্ধে সংসদে কড়া আইন আনার দাবিতেও সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল করেছেন তিনি। সম্প্রতি টুইটারে নাৎসি-বিরোধী ছবি পোস্ট করায় তাঁর টুইটার অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়। সিএএ নিয়ে হেগড়ের নির্দিষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে বলে কেন্দ্রের সলিসিটর তুষার মেহতা আপত্তি তুললেও বিচারপতি সঞ্জয় কিষেণ কউল ও বিচারপতি কে এম জোসেফের বেঞ্চ তাঁকেই মধ্যস্থের দায়িত্ব দিয়েছে।

Advertisement

দু’মাসের বেশি টানা রাস্তা অবরোধের বিরুদ্ধেই সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়েছিল। আজ বিচারপতি কউল বলেন, ‘‘প্রশ্ন হল, প্রতিবাদ কোথায় হবে? আমরা বলছি না, সিএএ-র বিরুদ্ধে মামলা সুপ্রিম কোর্টে ঝুলে রয়েছে বলে তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের অধিকার নেই। কিন্তু প্রশ্ন হল, রাস্তায় কি প্রতিবাদ চলতে পারে? যদি ন্যায্য ক্ষোভ নিয়েই সবাই রাস্তা অবরোধ শুরু করেন, তা হলে পরিস্থিতি কোথায় পৌঁছবে? মত প্রকাশের ভিত্তিতেই গণতন্ত্র চলে। কিন্তু তারও সীমারেখা রয়েছে।’’

কেন্দ্রের পক্ষে মেহতা বলেন, ‘‘গোটা শহরকে এ ভাবে পণবন্দি করা যায় না। ওদের কাছে যেন বার্তা না-যায় যে সব প্রতিষ্ঠান হাঁটু মুড়ে বসে পড়েছে।’’ বিচারপতি জোসেফ বলেন, ‘‘প্রশাসন দু’মাস ধরে কী করছিল? আপনারা কেন ওদের সঙ্গে কথা বলেননি?’’ মেহতা বলেন, ‘‘আমরা চেষ্টা করেছি। কিন্তু ওরা মহিলা-শিশুদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে।’’

শাহিন বাগের সদাফ, মোবাসিরের মতো আন্দোলনকারীরা অবশ্য বলছেন, ‘‘দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে বলেই এত ঠান্ডা, অসুবিধার মধ্যেও এ ভাবে রাস্তার উপরে বসে আছি আমরা।’’ তাঁরা মানছেন, এত দিন পথ বন্ধ থাকায়, অনেককে অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে। কিন্তু ‘জীবন-মরণ প্রশ্ন’ এই লড়াইয়ের সঙ্গে জড়িত বলে তাঁদের দাবি।

সুপ্রিম কোর্ট আজ এ কথাও বলেছে, রাস্তা রুখে আন্দোলন করার বদলে তা রামলীলা ময়দান, লাল কেল্লা সংলগ্ন জায়গায় হতে পারে। আন্দোলনকারীদের যুক্তি, ‘‘যাঁরা এখানে প্রতিবাদ চালিয়ে যাচ্ছেন, তাঁরা মূলত স্থানীয় বাসিন্দা। একটা বড় অংশ মহিলা। অনেকে বয়স্কা। এঁদের পক্ষে দিনের পর দিন দূরে গিয়ে প্রতিবাদ করা সম্ভব নয়।’’

হেগড়ে বলেছেন, তিনি দু’পক্ষের কাছেই গ্রহণযোগ্য কোনও সমাধানে পৌঁছনোর চেষ্টা করবেন। আজ মামলার সময়ে তিনি এজলাসে ছিলেন। আচমকাই বিচারপতিরা তাঁর মতো জানতে চান। হেগড়ে বলেন, ‘‘আমি কোনও দিন শাহিন বাগে যাইনি। এই মামলার শরিকও নই।’’ কিন্তু বিচারপতিরা তাঁকেই মধ্যস্থতার চেষ্টা করতে বলেন। আগামী সোমবার এই মামলার ফের শুনানি। তার মধ্যে মধ্যস্থদের রিপোর্টের পাশাপাশি দিল্লি পুলিশকে প্রতিবাদের বিকল্প জায়গাও জানাতে বলেছে আদালত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন