‘ডিজিটাল গ্রেফতার’-এর তদন্তভার সিবিআইকে দিল সুপ্রিম কোর্ট। —প্রতীকী চিত্র।
আভাস আগেই মিলেছিল। এ বার সেই পদক্ষেপই করল সুপ্রিম কোর্ট। ‘ডিজিটাল গ্রেফতার’ সংক্রান্ত সব অভিযোগের তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিল শীর্ষ আদালত। সোমবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সূর্য কান্তের বেঞ্চ জানিয়েছে, দেশে ‘ডিজিটাল গ্রেফতার’ সংক্রান্ত যত অভিযোগ রয়েছে, সবগুলির তদন্ত করবে সিবিআই। দেশব্যাপী এই সংক্রান্ত সব অভিযোগের প্রেক্ষিতে সিবিআইকে সামগ্রিক ভাবে একটি তদন্ত শুরু করার জন্য বলেছে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। রাজ্য সরকারগুলিকেও এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে প্রয়োজনীয় সম্মতি দেওয়ার জন্য বলেছে আদালত।
অনলাইনে প্রতারণা ঠেকাতে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (আরবিআই)-কেও বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছে আদালত। সাইবার অপরাধীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুঁজে বের করে সেগুলি ফ্রিজ় করার জন্য কৃত্রিম মেধা (এআই)-এর সাহায্য নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে প্রধান বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চ। কেন আরবিআই এখনও এই ধরনের কাজে এআই-এর ব্যবহার করছে না, তা জানতে চেয়েছে আদালত। এই মর্মে আরবিআইকে নোটিস পাঠিয়ে জবাব তলব করেছে সুপ্রিম কোর্ট।
‘ডিজিটাল গ্রেফতার’-এর ফাঁদে সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বহু মানুষ প্রতারিত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় পুলিশ, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা, এমনকি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও এ বিষয়ে দেশবাসীকে সতর্ক করেছেন। দেশবাসীকে বোঝানো হয়েছে, অনলাইনে এ ভাবে কাউকে গ্রেফতারের বিধান নেই দেশে। তার পরেও প্রতারকদের ফাঁদে পা দেওয়া বন্ধ হয়নি। কয়েক মাস আগে হরিয়ানার অম্বালার বাসিন্দা এক প্রৌঢ়াকে আদালতের ভুয়ো নির্দেশনামা দেখিয়ে ‘ডিজিটাল গ্রেফতার’ করেছিলেন প্রতারকেরা। তাঁর থেকে এক কোটি ৫ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেন সাইবার প্রতারকেরা। ওই ঘটনা নজরে আসতেই স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ করে সুপ্রিম কোর্ট।
এর আগে শুনানি চলাকালীন প্রতারণার এই ফাঁদ নিয়ে বিবিধ উদ্বেগ প্রকাশ করে আদালত। ‘ডিজিটাল গ্রেফতার’-এর বিষয়ে কোন রাজ্যে কত এফআইআর হয়েছে, সব রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল থেকে সেই তথ্যও চেয়ে পাঠায় সুপ্রিম কোর্ট। এই ধরনের প্রতারণার মামলাগুলির কী ভাবে তদন্ত করা যায়, সে বিষয়ে সিবিআইকে এই নির্দিষ্ট পরিকল্পনা আদালতে জমা দিতে বলেছিল সুপ্রিম কোর্ট। তখনই আভাস মিলেছিল, এই তদন্তভার সিবিআইকে দেওয়ার ভাবনাচিন্তা করছে আদালত।