সুপ্রিম কোর্টে কোন মামলা কোন বেঞ্চের কাছে যাবে কিংবা সাংবিধানিক বেঞ্চ কোন বিচারপতিদের নিয়ে গঠিত হবে, তা ঠিক করতে সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান বিচারপতিই। সব বিচারপতির ক্ষমতা সমান হলেও তিনিই যে হেতু ‘সমানের মধ্যে প্রথম’, তাই এই অধিকার তাঁরই রয়েছে। একটি জনস্বার্থ মামলার প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতির ক্ষমতা নিয়ে অবস্থান স্পষ্ট করে দিল সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ। এরই সঙ্গে খারিজ হয়ে গেল এ ব্যাপারে বিচারপতি জে চেলমেশ্বর-সহ সুপ্রিম কোর্টের আরও তিন বিচারপতির বিতর্কিত দাবি।
শীর্ষ আদালতে কোন মামলা কোন বিচারপতির কাছে যাবে এবং সাংবিধানিক বেঞ্চ গড়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে একটি নির্দেশিকা ঠিক করার জন্য জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন বর্ষীয়ান আইনজীবী ও দেশের প্রাক্তন আইনমন্ত্রী শান্তি ভূষণ। প্রধান বিচারপতির প্রশাসনিক কর্তৃত্ব নিয়ে ব্যাখা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা বণ্টন ও সাংবিধানিক বেঞ্চ গড়ার পদ্ধতি স্থির করার আর্জি জানান তিনি।
আবেদনে বলা হয়, কোর্টে মামলা কোন বিচারপতির কাছে যাবে, এই মুহূর্তে তা প্রধান বিচারপতি ঠিক করেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তাঁর ‘একার হাতে অসীম বা চূড়ান্ত ক্ষমতা’ দেওয়া হয়নি। ফলে অন্য সিনিয়র বিচারপতিদের সঙ্গে কথা বলে তাঁর এগোনো উচিত।
শান্তি ভূষণ তাঁর ছেলে প্রশান্ত ভূষণের মাধ্যমে মামলাটি করেছিলেন। আর আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ সুপ্রিম কোর্টের সেক্রেটারি জেনারেলের কাছে আর্জি জানান, জনস্বার্থ মামলাটির শুনানি যেন প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে না হয়। তবে মামলাটি আজ প্রধান বিচারপতির বেঞ্চেই উঠেছিল। প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র, বিচারপতি এ এম খানউইলকর এবং বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় জনস্বার্থ মামলার আর্জিগুলি খারিজ করে দেন। বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, ‘‘ভারতের প্রধান বিচারপতির ক্ষমতা সমানের মধ্যে প্রথম। কোন মামলা কার কাছে যাবে আর সাংবিধানিক বেঞ্চ গড়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা তাঁরই রয়েছে।’’
শান্তিভূষণের করা জনস্বার্থ মামলা ও তাকে ঘিরে সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চের আজকের রায় তাৎপর্যপূর্ণ। গত ১২ জানুয়ারি শীর্ষ আদালতের চার জন শীর্ষস্থানীয় বিচারপতি নজিরবিহীন ভাবে সাংবাদিক বৈঠক করে এই বিষয়গুলি নিয়েই প্রধান বিচারপতির কর্তৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন। তাঁদের অভিযোগ ছিল, শীর্ষ আদালতে সব কিছু ঠিক ভাবে চলছে না। অনেক গুরুত্বপূর্ণ জনস্বার্থ মামলা ‘জুনিয়র বিচারপতি’দের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।