Crime

গুজরাত দাঙ্গায় ধর্ষিতা বিলকিস বানোকে ৫০ লক্ষ ক্ষতিপূরণের নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের

আদতে গুজরাতের দাহদের বাসিন্দা বিলকিস বানো। গোধরা কাণ্ডের পর রাজ্য জুড়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হলে, ২০০২ সালের ৩ মার্চ গ্রাম ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করছিল তাঁর পরিবার। কিন্তু আমদাবাদের কাছে রন্ধিপুর গ্রামে দাঙ্গাবাজদের হাতে পড়ে যান তাঁরা।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০১৯ ১৪:০৪
Share:

বিলকিস বানো। —ফাইল চিত্র।

২০০২ সালের গুজরাত দাঙ্গায় গণধর্ষণের শিকার হওয়া বিলকিস বানোকে ৫০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে তাঁর হাতে টাকা তুলে দিতে হবে। একই সঙ্গে তাঁকে সরকারি চাকরি এবং বাসস্থানের ব্যবস্থাও করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে গুজরাত সরকারকে।

Advertisement

আদতে গুজরাতের দাহদের বাসিন্দা বিলকিস বানো। গোধরা কাণ্ডের পর রাজ্য জুড়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হলে, ২০০২ সালের ৩ মার্চ গ্রাম ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করছিল তাঁর পরিবার। কিন্তু আমদাবাদের কাছে রন্ধিপুর গ্রামে দাঙ্গাবাজদের হাতে পড়ে যান তাঁরা। সেখানে গণধর্ষণ করা হয় বিলকিস বানোকে। তাঁর পরিবারের ১৪ জন সদস্যকে নৃশংস ভাবে খুন করা হয়। রেহাই পায়নি তাঁর তিন ৩ বছর দু’মাস বয়সী মেয়ে সালেহাও। পাথর দিয়ে মাথা থেঁতলে খুন করা হয় তাকে। এই ঘটনায় ২০০৮ সালের ২১ জানুয়ারি ১১ জনকে যাবজ্জীবন সাজা শোনায় আদালত।

এর আগে, মার্চ মাসে মামলার শুনানি চলাকালীন বিলকিস বানোকে ৫ লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণের প্রস্তাব দিয়েছিল গুজরাত সরকার। কিন্তু সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন বিলকিস। যার পর এ দিন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ, বিচারপতি দীপক গুপ্ত এবং বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, ‘‘দোষীদের শাস্তি হয়েছে। কিন্তু চরম উন্মত্ততার সাক্ষী থাকা সহায়-সম্বলহীন বিলকিস বানোর জন্য কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: দাঙ্গা করলে কাউকে ছেড়ে কথা বলব না, খানাকুলে বললেন মমতা​

আরও পড়ুন: প্রধান বিচারপতিকে ‘ফাঁসানো’র পিছনে নরেশ গয়ালের হাত! প্রমাণ দিতে বলল শীর্ষ আদালত​

আদালত আরও বলে, ‘‘২১ বছরের বিলকিসকে শুধুমাত্র ২২ বার ধর্ষণই করা হয়নি, নৃশংস ভাবে খুন করা হয়েছিল তাঁর তিন বছর দু’মাসের মেয়েকেও। তার পর থেকেই যাযাবরের মতো ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন বিলকিস। এখন তাঁর ৪০ বছর বয়স। পড়াশোনাও তেমন জানেন না। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অর্থ সাহায্যে বেঁচে রয়েছেন।’’

রাজ্যের পাঁচ পুলিশ অফিসার তদন্ত বিপথে চালিত করার চেষ্টা চালান বলে এর আগে বম্বে হাইকোর্টে অভিযোগ করেছিলেন বিলকিস বানো। কিন্তু প্রমাণের অভাবে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। তা নিয়ে এ দিন বিলকিস বানোর আইনজীবী আদালতে জানান, অভিযুক্তদের মধ্যে চারজন অফিসার অবসর নিয়েছেন। এ বছর জুন মাসে অবসর নেওয়ার কথা পঞ্চম অভিযুক্ত, আইপিএস অফিসার আরএস ভাগোরার। অথচ এখনও পর্যন্ত কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি তাঁদের বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে গুজরাত সরকারের কাছে রিপোর্ট চেয়েছে আদালত। ওই অফিসারদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে অবসরপ্রাপ্ত চার অফিসারের পেনশন আটকে দেওয়া হয়েছে এবং আরএস ভাগোরার পদের অবনতি হয়েছে বলে আদালতে সাফাই দিয়েছে গুজরাত সরকার।

(দেশজোড়া ঘটনার বাছাই করা সেরা বাংলা খবর পেতে পড়ুন আমাদের দেশ বিভাগ।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন