ইডির ভূমিকায় প্রশ্ন সুপ্রিম কোর্টের। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
সুপ্রিম কোর্টে ফের প্রশ্নের মুখে পড়ল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। যোগসূত্র ছাড়াই কারও উপর অভিযোগ চাপিয়ে দেওয়া ইডির স্বভাবে পরিণত হয়ে যাচ্ছে। সোমবার এক মামলার শুনানিতে এমনই মন্তব্য করেছে শীর্ষ আদালত।
ছত্তীসগঢ়ের আবগারি দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলায় এক অভিযুক্তের জামিনের আবেদনের শুনানি ছিল শীর্ষ আদালতের বিচারপতি অভয় এস ওকা এবং বিচারপতি উজ্জ্বল ভূঞার বেঞ্চে। শুনানির একটি পর্যায়ে বিচারপতি ওকার পর্যবেক্ষণ, “আমরা ইডির বেশ কিছু মামলা দেখেছি। এখন এটি একটি ‘প্যাটার্ন’ (স্বভাব) হয়ে গিয়েছে, কোনও যোগসূত্র ছাড়াই ইডি অভিযোগ চাপিয়ে দিচ্ছে।” এই জামিন মামলার ক্ষেত্রে অভিযুক্ত বিভিন্ন অপরাধমূলক পথে ৪০ কোটি টাকা উপার্জন করেছেন বলে অভিযোগ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার। ইডির ওই অভিযোগ প্রসঙ্গে শীর্ষ আদালতের মন্তব্য, ওই টাকা কী ভাবে অভিযুক্ত উপার্জন করেছেন, তা নিয়ে নির্দিষ্ট ভাবে কিছু বলতে পারছেন না তদন্তকারীরা। অভিযুক্তের সঙ্গে কোনও সংস্থার যোগ রয়েছে কি না, তা-ও তদন্তকারী সংস্থা আদালতে দেখাতে পারেনি।
ছত্তীসগঢ়ের আবগারি দুর্নীতির সঙ্গে যে সংস্থাগুলির নাম উঠে এসেছে, এই ব্যক্তি ওই সংস্থাগুলির মধ্যে কোনওটির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন আদালতের। ইডির আইনজীবীর উদ্দেশে বিচারপতি ওকা বলেন, “কিছু তো একটা দেখাতে হবে আপনাদের!” তখন ইডির আইনজীবী এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানানোর জন্য আদালতের কাছে আরও সময় চেয়ে নেন।
বস্তুত, ইডির তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে এর আগেও বিভিন্ন সময়ে প্রশ্ন উঠেছে আদালতে। এমনকি পশ্চিমবঙ্গের নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিন মামলাতেও সুপ্রিম কোর্টে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিল ইডিকে। ওই সময়ে বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি ভূঞার বেঞ্চ ইডিকে প্রশ্ন করেছিল, “আপনাদের আনা অভিযোগে কত জন দোষী সাব্যস্ত হয়? এই হার কত? যদি এটা ৬০-৭০ শতাংশ হয়, তা হলে অন্তত বোঝা যায়। কিন্তু এই হার খুবই কম।” এ ছাড়াও অতীতে বিভিন্ন সময়ে দেশের বিভিন্ন আদালতে প্রশ্নের মুখে পড়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ভূমিকা।