গ্রেফতারি এড়াতে গা ঢাকা দিয়েছেন মঞ্জু বর্মা।—ফাইল চিত্র।
গুরুতর অপরাধে নাম জড়িয়েছে। বাড়িতে হানা দিয়ে মিলেছে বেআইনি অস্ত্রশস্ত্র। অথচ বেপাত্তা প্রাক্তন মন্ত্রী! চেষ্টা করেও নাকি তাঁরটিকি ধরা যায়নি। আর সেই ঘটনায় সুপ্রিম কোর্টে তিরস্কৃত হল বিহার পুলিশ।
গত জুলাইয়ে মুজফ্ফরনগর যৌন নির্যাতন ও ধর্ষণের ঘটনায় নাম জড়ায় বিহারের প্রাক্তন মন্ত্রী মঞ্জু বর্মার স্বামীর। তাঁর বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় বিপুল পরিমাণে আগ্নেয়াস্ত্র। এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার করা যায়নি মঞ্জুকে। কিন্তু কেন?সোমবার এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট বিহার পুলিশকে প্রশ্ন করলে তারা জানায়, চেষ্টায় ত্রুটি নেই। কিন্তু তাঁর টিকিও ধরা যাচ্ছে না। কোথায় গা ঢাকা দিয়ে রয়েছেন জানা নেই।
পুলিশের এমন জবাবে চটে যান বিচারপতি মদন লোকুর। তাচ্ছিল্যের সুরে বলেন, ‘‘অসাধারণ! প্রাক্তন মন্ত্রী গা ঢাকা দিলেন! কিন্তু এটা কীভাবে সম্ভব বলতে পারেন? রাজ্য মন্ত্রিসভার এক জন প্রাক্তন সদস্য গায়েব, অথচ কারও কোনও হেলদোল নেই। কেউ জানেন না তিনি কোথায়!আশাকরি গোটা বিষয়টার গুরুত্ব বোঝেন আপনারা।স্তম্ভিত আমরা।’’
আরও পড়ুন: আকবর ‘সজ্জন ব্যক্তি’, আদালতে বললেন প্রাক্তন মহিলা সহকর্মী
আগামী ২৭ নভেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি। সেখানে বিহার পুলিশের ডিআইজিকে হাজির থাকতে নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। মঞ্জু বর্মাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না কেন, তার উপযুক্ত কারণ জানাতে হবে তাঁকে।
বিহারের বিভিন্ন হোমের পরিস্থিতি নিয়ে এ বছর একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে টাটা ইনস্টিটিউট অব সোশ্যাল সায়েন্স(টিস)। তাতে বলা হয়, রাজ্যের ১৬টি হোমে যৌন নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। তা নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে নীতীশ কুমার সরকারের মুখ্য সচিবকেও ডেকে পাঠিয়েছে আদালত।
এ বছর জুন মাসে বিহারের একটি বেসরকারি হোমে শিশু ও কিশোরীদের উপর যৌন নির্যাতন ও ধর্ষণের ঘটনা সামনে আসে। ধর্ষণের পর একটি মেয়েকে খুন করে মাটিতে পুঁতে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ ওঠে। তবে মাটি খুঁড়ে কিছু পায়নি পুলিশ। তদন্ত চলাকালীন ওই ঘটনায় নাম জড়ায় বিহারের তৎকালীন সমাজ কল্যাণমন্ত্রী মঞ্জু বর্মার স্বামী চন্দ্রশেখর বর্মার। জানা যায়, ওই হোমের মালিক ব্রজেশ ঠাকুরের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল। মন্ত্রীর বাড়িতে হানা দিলে উদ্ধার হয় বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র।
আরও পড়ুন: ভুয়ো খবর ঠেকাতে কী কী ব্যবস্থা, রাহুলকে বোঝালেন টুইটারের সিইও
এই ঘটনার জেরে অগস্ট মাসেই মন্ত্রিত্ব ছাড়তে হয় মঞ্জু বর্মাকে। বেআইনি অস্ত্র আইনে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়। তার পর থেকেই নিখোঁজ তিনি। গত সপ্তাহে রাজ্যের একটি আদালতে আবেদন জানিয়েছিলেন, যাতে তাঁকে ফেরার ঘোষণা করা না হয়। তবে তিনি আদালতের দরজায় পৌঁছে গেলেও, পুলিশ তাঁর নাগাল পেয়ে ওঠেনি।