এলাহাবাদ হাই কোর্টের বিচারপতি প্রশান্ত কুমারের বিরুদ্ধে নির্দেশ তুলে নিল হাই কোর্ট। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
ফৌজদারি মামলার শুনানিপ্রক্রিয়া চালাতে পারবেন তিনি। এলাহাবাদ হাই কোর্টের বিচারপতি প্রশান্ত কুমারের বিরুদ্ধে যে নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট, সেই নির্দেশ প্রত্যাহার করল তারা। এবং জানিয়ে দিয়েছে, এই বিষয়টি এখানেই স্থগিত করে দেওয়া হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, বিচারপতি কুমারের বিরুদ্ধে এক ঘটনার প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল যে, তিনি কোনও ফৌজদারি মামলার শুনানি প্রক্রিয়া চালাতে পারবেন না। এই নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং আর মহাদেবনের ডিভিশন বেঞ্চ। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বি আর গবই বিচারপতি পারদিওয়ালাকে এই নির্দেশ বিবেচনা করে দেখার জন্য অনুরোধ করেন। তার পরই এলাহাবাদ হাই কোর্টের বিচারপতির বিরুদ্ধে দেওয়া নির্দেশ তুলে নেওয়া হল।
শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, প্রধান বিচারপতির কাছ থেকে একটি চিঠি পেয়েছে তারা। বিচারপতি কুমারের বিরুদ্ধে যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সেটি বিবেচনা করে দেখার অনুরোধ করেন। তার পরই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত, গত ৪ অগস্ট বিচারপতি কুমারের বিরুদ্ধে যে নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ, সেই নির্দেশনামা থেকে ‘যত দিন কর্মরত থাকবেন, তত দিন ফৌজদারি মামলার শুনানিপ্রক্রিয়া চালাতে পারবেন না’ এই অংশটি সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর পরই বিচারপতি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মাধবনের ডিভিশন বেঞ্চ বলে, ‘‘আমরা আশা করব আগামী দিনে হাই কোর্ট থেকে এ রকম নির্দেশ না দেওয়া হয়। যদি আইনের শাসনই না মানা হয় আদালতে, তা হলে গোটা বিচারব্যবস্থাই ভেঙে পড়বে। আশা করব বিচারপতিরা তাঁদের কাজ দক্ষতা এবং নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করবেন।’’ তার পরই সুপ্রিম কোর্ট জানায়, এই মামলাটি এখানেই শেষ করা হচ্ছে।
বিতর্কের সূত্রপাত এলাহাবাদ হাই কোর্টের বিচারপতি কুমারের একটি নির্দেশকে কেন্দ্র করে। সম্প্রতি এক দেওয়ানি মামলায় ফৌজদারি প্রক্রিয়া শুরু করার অনুমতি দিয়েছিলেন বিচারপতি কুমার। বিচারপতির এমন সিদ্ধান্তে বিস্ময় প্রকাশ করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি আর মহাদেবনের বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, হাই কোর্টের বিচারপতির ওই নির্দেশ তাঁদের দেখা সবচেয়ে খারাপ এবং ভুল নির্দেশের মধ্যে একটি। বিচারপতি কুমারের ফৌজদারি মামলা শোনার যোগ্যতা রয়েছে কি না, তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করে সুপ্রিম কোর্ট।
তার পরই শীর্ষ আদালত নির্দেশ দেয়, যত দিন বিচারপতি কুমার কর্মরত থাকবেন, তাঁকে কোনও ফৌজদারি মামলা দেওয়া যাবে না। তিনি ডিভিশন বেঞ্চে বসলে, তখনও তাঁর সঙ্গে হাই কোর্টের কোনও অভিজ্ঞ বিচারপতিকে রাখতে হবে। হাই কোর্টের ওই বিচারপতির ভূমিকায় অসন্তুষ্ট সুপ্রিম কোর্টের মন্তব্য, “তিনি শুধু আত্মমর্যাদাই নষ্ট করেননি, বিচারব্যবস্থাকেও হাস্যাস্পদ করে তুলেছেন।”