(বাঁ দিকে) রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এবং সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বিআর গবই (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
বিলে সম্মতি দেওয়ার বিষয়ে বেশ কিছু ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ চেয়েছিলেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। ওই সংক্রান্ত মামলায় দশম দিনের শুনানি শেষে রায়দান স্থগিত রাখল শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বিআর গবইয়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চে মামলাটির শুনানি চলছিল। বৃহস্পতিবার শুনানি শেষে রায়দান স্থগিত রাখার সময়ে প্রধান বিচারপতি সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “অত্যন্ত জ্ঞানগর্ভ আলোচনা হয়েছে।”
গত এপ্রিলে তামিলনাড়ু সরকারের এক মামলায় কোনও বিলে সম্মতির জন্য রাষ্ট্রপতি এবং রাজ্যপালদের তিন মাসের সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। ওই নির্দেশ নিয়ে আপত্তি তোলেন তৎকালীন উপরাষ্ট্রপতি-সহ অনেকেই। এ বিষয়ে শীর্ষ আদালতের পরামর্শ চান রাষ্ট্রপতি মুর্মুও। সেখানে মূলত ১৪ দফা প্রশ্নের ব্যাখ্যা চাওয়া হয়। রাজ্যপাল বা রাষ্ট্রপতিকে বিলে সম্মতি দেওয়ার জন্য কোনও আদালত সময়সীমা বেঁধে দিতে পারে কি না, তা-ও জানতে চাওয়া হয় সুপ্রিম কোর্টের কাছে। শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি গবই ছাড়াও এই বেঞ্চে রয়েছেন বিচারপতি সূর্য কান্ত, বিচারপতি বিক্রম নাথ, বিচারপতি পিএস নরসিংহ এবং বিচারপতি এএস চান্দুরকর। গত ১৯ অগস্ট থেকে পাঁচ বিচারপতির এই সাংবিধানিক বেঞ্চে মামলার শুনানি শুরু হয়।
কেন্দ্রের তরফে বুধবার আদালতে জানানো হয়, গত ৫৫ বছরে মাত্র ২০টি বিলে সম্মতি স্থগিত রাখা হয়েছে। ৯০ শতাংশ বিলেই এক মাসের মধ্যে সম্মতি দেওয়া হয়েছে। আদালতে সওয়ালের সময় সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বুধবার বলেন, “অনেক সময় রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রীকে চা পানের জন্য ডেকে পাঠান। তখন তাঁরা বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন। সংবিধান এ ভাবেই চলে। এ ভাবেই চলে এসেছে। কিন্তু এখন মিথ্যা আশঙ্কা করা হচ্ছে যে এ বিষয়ে কিছু করার প্রয়োজন রয়েছে।”
তখন প্রধান বিচারপতিও বলেছিলেন, “বিলগুলি যখন তিন-চার বছর ধরে রাজ্যপালের কাছে আটকে থাকে, তখন আপনি কী ভাবে বলতে পারেন (রাজ্যগুলি মিথ্যা আশঙ্কা করছে)?” তখন মেহতা জানান, অনির্দিষ্টকালের জন্য বিলগুলি ঝুলে থাকার জন্য যুক্তি দেখাচ্ছে না কেন্দ্র। তবে একটি সময়সীমা বেঁধে দিয়ে বিষয়টির সরলীকরণ করা যায় না বলেই সওয়াল করেন সলিসিটর জেনারেল। তাঁর ব্যাখ্যা, এই ধরনের বিষয়গুলির সঙ্গে রাজনৈতিক আলোচনা এবং রাজনৈতিক সমাধান জড়িত থাকে। মেহতা বলেন, “যে বিলগুলি চরম অসাংবিধানিক, সেগুলির ক্ষেত্রে সম্মতি স্থগিত রাখতে হয়।”
বুধবার বিচারপতি নরসিংহও জানান, সংবিধানের ২০১ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুসারে, রাষ্ট্রপতি বিল আটকে রাখতে পারেন না। তাঁকে হয় বিলে সম্মতি দিতে হবে, কিংবা সেটি পুনর্বিবেচনার জন্য ফেরত পাঠাতে হবে। কিন্তু বিলটি দ্বিতীয় বার রাষ্ট্রপতির কাছে যাওয়ার পরে কী করণীয়, সে বিষয়ে সংবিধানে কিছু উল্লেখ নেই।