বিহারে ভোটার তালিকা সংক্রান্ত মামলা নিয়ে মন্তব্য সুপ্রিম কোর্টের। —ফাইল চিত্র।
নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। আইন মেনেই তাঁদের চলতে হবে। কমিশনের কাজে কোথাও কোনও বিচ্যুতি হলেই আদালত হস্তক্ষেপ করবে। বিহারে ভোটার তালিকার বিশেষ ও নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) সংক্রান্ত মামলায় মঙ্গলবার এ কথা জানাল সুপ্রিম কোর্ট।
এসআইআর প্রক্রিয়াকে চ্যালেঞ্জ করে যে সব মামলা হয়েছে, সেগুলির শুনানির সময়ও জানিয়ে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। মঙ্গলবার বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চ জানিয়েছে, আগামী ১২ এবং ১৩ অগস্ট এই বিষয়ে শুনানি হবে। তার আগে ৮ অগস্টের মধ্যে মামলাকারীদের নিজেদের বক্তব্য লিখিত আকারে আদালতে জমা দিতে হবে।
মঙ্গলবার মামলাকারী পক্ষের হয়ে শীর্ষ আদালতের এজলাসে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী কপিল সিব্বল এবং প্রশান্ত ভূষণ। শুনানির সময় তাঁরা ফের অভিযোগ তোলেন বিহারের খসড়া তালিকা নিয়ে। বিহারের খসড়া ভোটার তালিকা থেকে অনেকের নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলেন তাঁরা। এর ফলে অনেকে নিজেদের ভোটদানের অধিকার হারাবেন বলেও আদালতে আশঙ্কা প্রকাশ করেন মামলাকারীদের আইনজীবীরা।
মামলাকারী পক্ষের আইনজীবীদের অভিযোগ, খসড়া তালিকা থেকে ৬৫ লক্ষ মানুষকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। কমিশন বলছে, তাঁরা হয় মারা গিয়েছেন বা স্থায়ী ভাবে অন্যত্র চলে গিয়েছেন। সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট করে দিয়েছে, নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। আইন মেনেই তাদের চলতে হবে। যদি কোথাও কোনও বিচ্যুতি হয়, তবে মামলাকারীরা তা আদালতের নজরে আনতে পারেন। এর পরেই সিব্বল এবং ভূষণের উদ্দেশে আদালত বলে, “মৃত বলে দেখানো হচ্ছে, অথচ তাঁরা জীবিত, এমন ১৫ জনকে আপনারা নিয়ে আসুন। তার পরে আমরা দেখছি।” বিচারপতি কান্ত বলেন, “তারা (নির্বাচন কমিশন) যে মুহূর্তে (এসআইআর) বিজ্ঞপ্তি থেকে বিচ্যুত হবে, আমরা হস্তক্ষেপ করব।”
সোমবারও সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার শুনানি হয়েছে। সেখানে বিহারে ভোটার তালিকা সংক্রান্ত কাজের জন্য আধার কার্ড এবং ভোটার কার্ডও পরিচয়পত্র হিসাবে বিবেচনা করতে নির্বাচন কমিশনকে পরামর্শ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। কেন এই দুই নথিকে কমিশন বিবেচনা করছে না, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলে আদালত। সুপ্রিম কোর্টের মতে, কমিশন যে নথিগুলি তালিকায় রেখেছে, সেগুলি প্রত্যেকটিই কোনও না কোনও ভাবে জাল করা হতে পারে। ফলে এটি আধার বা ভোটার কার্ড বাদ দেওয়ার যুক্তি হতে পারে না বলেই মনে করছে আদালত।
দুই বিচারপতির বেঞ্চ সোমবার কমিশনের উদ্দেশে বলে, ‘‘এই দু’টি নথি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করুন। আগামিকাল হয়তো দেখবেন, শুধু আধার নয়, ১১টি নথিই জাল করা যাচ্ছে। সেটা অন্য সমস্যা। কিন্তু আমরা গণহারে নাম বাদ দিচ্ছি। গণহারে নাম তো অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। আপনারা দয়া করে আধার কার্ড অন্তর্ভুক্ত করুন।’’