অহমদাবাদের দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানের ক্যাপটেন ছিলেন পাইলট সুমিত সবরওয়াল। —ফাইল চিত্র।
এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান বিপর্যয়ে ‘পাইলটের ত্রুটি’র দিকে ইঙ্গিত দুর্ভাগ্যজনক। সোমবার এমনটাই জানাল সুপ্রিম কোর্ট। এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান দুর্ঘটনার ঘটনায় আদালতের নজরদারিতে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিতে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। শীর্ষ আদালতের বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি এনকে সিংহের বেঞ্চে মামলাটি শুনানির জন্য ওঠে। সেখানে কেন্দ্রীয় সরকার এবং ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ সিভিল অ্যাভিয়েশন (ডিজিসিএ)-কে নোটিস পাঠিয়ে মতামত জানতে চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
গত ১২ জুন গুজরাতের অহমদাবাদে বিমান দুর্ঘটনায় ২৬০ জনের মৃত্যু হয়। উড়ানের কিছু ক্ষণের মধ্যেই ভেঙে পড়ে বিমানটি। গত জুলাই মাসে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ
‘এয়ারক্র্যাফ্ট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো’ (এএআইবি) দুর্ঘটনার বিষয়ে একটি প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করে। তাতে ককপিটে দুই পাইলটের কথোপকথনের একটি অংশের কথা উল্লেখ রয়েছে। রিপোর্টে উঠে এসেছে, বিমানের জ্বালানি সুইচ আচমকা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তা নিয়ে দুই পাইলটের মধ্যে কথাও হয়েছিল। তখন পাইলটদের মধ্যে এক জন অপরকে প্রশ্ন করছেন, “কেন তুমি বন্ধ করে দিলে?” অপর জন উত্তর দেন, “আমি করিনি।” তবে কোন পাইলট কী বলেছিলেন, তা প্রাথমিক রিপোর্টে স্পষ্ট নয়। তদন্তকারী সংস্থা এএআইবি-র থেকেও সোমবার এই মামলার বিষয়ে মতামত জানতে চেয়েছে আদালত।
বস্তুত, ওই প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্টের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করে বিমান পরিবহণের নিরাপত্তা সংক্রান্ত একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘সেফটি ম্যাটার্স ফাউন্ডেশন’। মামলাকারী সংগঠনের দাবি, প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্টে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গোপন করা হয়েছে। এই রিপোর্টে সাধারণ মানুষের সত্য তথ্য জানার অধিকার খর্ব করা হয়েছে বলেও অভিযোগ ওই সংগঠনের। তাদের দাবি, প্রাথমিক রিপোর্টে জ্বালানি সুইচে সমস্যা এবং অন্য বৈদ্যুতিক ত্রুটির মতো ঘটনাগুলিকে অবহেলা করা হয়েছে। ওই রিপোর্টে পাইলটদের ত্রুটির দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে বলেও অভিযোগ মামলাকারী সংগঠনের।
সোমবার ওই মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, ‘পাইলটদের ত্রুটি’র দিকে ইঙ্গিত করা দুর্ভাগ্যজনক এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন। মামলাকারী পক্ষ কেন এত তথ্য জনসমক্ষে আনতে চাইছে, তা নিয়েও প্রশ্ন সুপ্রিম কোর্টের। আদালতের বক্তব্য, “আগামিকাল যদি কোনও একজন পাইলটের দিকে আঙুল তোলা হয়, তখন তাঁর পরিবারকে এর ফল ভুগতে হবে। তার পরে চূড়ান্ত তদন্ত রিপোর্টে দেখা যায় কারও ত্রুটি নেই? তখন কী হবে।”