নির্ভয়া গণধর্ষণে দোষী দু’জনের ফাঁসির সাজা আপাতত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিল সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি রঞ্জনাপ্রকাশ দেশাই ও এন ভি রমানার বেঞ্চ সোমবার জানিয়েছে, মৃত্যুদণ্ড নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত তা স্থগিত রাখা হবে।
নির্ভয়া ধর্ষণ ও খুনে বিনয় শর্মা, অক্ষয় ঠাকুর, মুকেশ ও পবন গুপ্ত এই চার জনকে ফাঁসির সাজা শুনিয়েছিল সাকেতের ফাস্ট ট্র্যাক আদালত। সেই রায় বহাল রাখে দিল্লি হাইকোর্টও। এ বছর মার্চ মাসে শুনানি শেষে দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতিরা বলেছিলেন, “এমন অপরাধ নজিরবিহীন। এই মামলাকে যদি বিরলের মধ্যে বিরলতম বলা না হয়, তা হলে আর কোনও কিছুকেই তা বলা যায় না।”
দিল্লি হাইকোর্টের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয় বিনয় শর্মা ও অক্ষয় ঠাকুর। সর্বোচ্চ সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের বিচার তিন বিচারপতির বেঞ্চ ছাড়া হবে না বলে সম্প্রতি জানিয়েছিলেন প্রধান বিচারপতি আর এম লোঢা। তাই বিচারপতি দেশাই ও রমানার বেঞ্চ এই মামলা শুনতে পারবে কি না, তা নিয়ে আজ প্রথম দিকে কিছুটা ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল। প্রধান বিচারপতির নির্দেশ এখনও কার্যকর হয়নি, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার এ কথা জানানোর পরই মামলার শুনানি শুরু হয়। এবং প্রথা মেনেই বিনয় ও অক্ষয়ের ফাঁসি স্থগিতের কথা ঘোষণা করেন বিচারপতিরা।
২০১২-এর ডিসেম্বরে রাজধানীতে চলন্ত বাসের মধ্যে ধর্ষণ করা হয় বছর তেইশের প্যারামেডিক্যাল ছাত্রীকে। বীভৎস সেই গণধর্ষণে শিউরে উঠেছিল গোটা দেশ। ছয় অভিযুক্তকে দ্রুত গ্রেফতার করে ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে শুরু হয় বিচার। বিচার চলাকালীনই তিহাড় জেলে আত্মহত্যা করে প্রধান অভিযুক্ত রাম সিংহ। ছ’জনের দলে সব চেয়ে ছোট জন নাবালক হওয়ায় তাকে তিন বছর সংশোধনাগারে কাটানোর নির্দেশ দেয় আদালত। আর বাকি চার জনকে দেওয়া হয় সর্বোচ্চ শাস্তি।
নিম্ন আদালত থেকে দিল্লি হাইকোর্ট মেয়ের হত্যাকারীদের চরমতম শাস্তি দেওয়ায় স্বস্তি পেয়েছিলেন নির্ভয়ার মা-বাবা। সুপ্রিম কোর্টে মামলা ওঠার পর ফাঁসিতে স্থগিতাদেশ দেওয়ায় উদ্বেগ কাটছে না তাঁদের।