— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
সংশোধিত ওয়াকফ আইনের সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সুপ্রিম কোর্টে একগুচ্ছ মামলা হয়েছিল। সেই মামলায় গত ২৫ এপ্রিল নিজেদের বক্তব্য জানিয়ে হলফনামা জমা দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। সোমবার ওই সংক্রান্ত একগুচ্ছ আবেদনের শুনানি রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে অল ইন্ডিয়া মজলিশ-এ-ইত্তেহাদুল মুসলিমিনের (মিম) প্রধান তথা হায়দরাবাদের সাংসদ আসাদউদ্দিন ওয়েইসির দায়ের করা আবেদনটিও। দুপুর ২টো থেকে হতে পারে শুনানি।
গত ১৭ এপ্রিল এই মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয়, ৫ মে পর্যন্ত ১৯৯৫ সালের আইনে নথিভুক্ত ওয়াকফ সম্পত্তিতে কোনও বদল ঘটানো যাবে না। নিয়োগ করা যাবে না কেন্দ্রীয় ওয়াকফ বোর্ড বা পর্ষদেও। পাশাপাশি, কেন্দ্রকে সাত দিনের মধ্যে নিজেদের বক্তব্য জানানোর নির্দেশও দেওয়া হয়। এর পরেই শীর্ষ আদালতে প্রাথমিক হলফনামা জমা করে কেন্দ্র। তাতে জানানো হয়, ওয়াকফ আইনের কোনও বিধানের উপর কোনও রকমের স্থগিতাদেশের বিরোধিতা করবে কেন্দ্র। কেন বিরোধিতা করা হবে, তার যুক্তিও দেয় কেন্দ্র। তাদের দাবি, সংসদের যৌথ কমিটির সুপারিশের পরেই সংশোধিত ওয়াকফ আইন পাশ করা হয়েছিল। ফলে এই স্থায়ী আইনের উপর স্থগিতাদেশ জারি করার ক্ষমতা আদালতের নেই। যদি সংসদ-প্রণীত কোনও আইনের উপর এ ভাবে স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়, তা হলে তা ক্ষমতার ভারসাম্য নষ্টের সমতুল্য! অন্য দিক, ওয়াকফ আইন নিয়ে ‘ইচ্ছাকৃত এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে বিভ্রান্তি’ ছড়ানো হচ্ছে বলেও সওয়াল করে কেন্দ্র।
ওই শুনানিতে কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না, বিচারপতি সঞ্জয় কুমার এবং বিচারপতি কেভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চকে বলেন, ‘‘যথাযথ আলোচনার পর সংসদে পাশ হওয়া একটি আইনকে সরকারের বক্তব্য না শুনেই স্থগিত করা উচিত নয়।’’ কেন্দ্রীয় ওয়াকফ কাউন্সিল এবং বোর্ডগুলিতে অমুসলিমদের অন্তর্ভুক্তির বিধানকে স্থগিত করার সিদ্ধান্তের জন্যও সুপ্রিম কোর্টের অন্তর্বর্তিকালীন রায়ের তীব্র বিরোধিতা করে কেন্দ্র। সোমবার দুপুরে ওই মামলারই শুনানি রয়েছে।
ওয়াকফ নিয়ে প্রথম থেকেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর চড়াচ্ছেন বিরোধীরা। তবে বিরোধীদের আপত্তি উড়িয়ে গত মাসের শুরুতে সংসদের দুই কক্ষে ওয়াকফ বিল পাশ হয়। পরে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু তাতে সই করার পর তা আইনে পরিণত হয়। তার পরই মোদী সরকারের সংশোধিত ওয়াকফ আইনের সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে অন্তত ৭২টি মামলা হয়। বিভিন্ন মুসলিম সংগঠনের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও বিরোধী দলের সাংসদ, নেতারাও সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন। সব মামলা একত্রিত করে শুনানি চলছে প্রধান বিচারপতি খন্নার নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চে।