গরিব মরে, কেন ছাড় পায় ধনীরা, সুপ্রিম কোর্টে চড়া সওয়াল

নীরব-কেলেঙ্কারি ঘিরে আমজনতার এই সব প্রশ্ন আজ সুপ্রিম কোর্টে তুললেন জনস্বার্থ মামলার আইনজীবী বিনীত ধান্দা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:০২
Share:

গাড়ি-বাড়ি কেনার ঋণ শোধ করতে না পারলে ব্যাঙ্ক সাধারণ মানুষের জীবন অতিষ্ঠ করে তোলে। তা হলে নীরব মোদী-বিজয় মাল্যরা ব্যাঙ্কের ঋণ শোধ না করলে সরকার ছেড়ে দেবে কেন!

Advertisement

ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ পেতে আমজনতাকে বহু কাঠখড় পোড়াতে হয়। নীরবেরা এত সহজে ব্যাঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেন কী ভাবে!

নীরব-কেলেঙ্কারি ঘিরে আমজনতার এই সব প্রশ্ন আজ সুপ্রিম কোর্টে তুললেন জনস্বার্থ মামলার আইনজীবী বিনীত ধান্দা। প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির বেঞ্চ তাঁকে ধমক দিয়ে, প্রচার-লোভী বলেও থামাতে পারেননি। ক্রমাগত গলা চড়িয়ে একের পর এক প্রশ্ন ছুড়ে দেন বছর চল্লিশের বিনীত। অনেকেই বলেছেন, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীরা সাধারণত বিচারপতিদের ভর্ৎসনা শুনে ক্ষমা চেয়ে নেন। আদতে উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা বিনীত অবশ্য দমে যাওয়ার পাত্রই ছিলেন না। বরং ২০-২৫ মিনিটের সওয়াল-জবাবে তাঁকে থামাতে গিয়ে জলের গ্লাসে চুমুক দিতে হয়েছে প্রধান বিচারপতিকেই।

Advertisement

আরও পড়ুন: নীরব কেলেঙ্কারি: সিবিআই জালে জেনারেল ম্যানেজার​

নীরব কেলেঙ্কারিতে বিশেষ (এসআইটি) তদন্ত চেয়ে জনস্বার্থ মামলা করেছেন বিনীত। প্রধান বিচারপতির এজলাসে দাঁড়িয়ে তাঁর দাবি, সরকারের জবাবদিহি চেয়ে নোটিস জারি করা হোক। গরিব লোকেরা টাকা শোধ না করলে ব্যাঙ্ক তাড়া করে। কোটিপতিরা ধার শোধ না করে পার পান কী করে! প্রধান বিচারপতি তখন বলেন, ‘‘বড় বড় আবেগের কথা বলে লাভ নেই। আদালত আইনি যুক্তি ছাড়া কিছু শুনবে না।’’ কিন্তু বিনীতকে থামায় কার সাধ্য!

জনস্বার্থ মামলা এবং এসআইটি তদন্তের বিরোধিতা করে অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল যুক্তি দিয়েছিলেন, ঘটনার তদন্ত তো হচ্ছে। কিন্তু বিনীত তাঁকে বলতে দিলে তো! তাঁর দাবি, অ্যাটর্নি জেনারেল এর বিরোধিতা করতেই পারেন না। প্রধান বিচারপতি তা শুনে বলেন, ‘‘সরকার যখন তদন্ত করছে, আদালত আগেভাগে নাক গলাতে পারে না। ওরা তদন্ত না করলে দেখা যাবে।’’ কিন্তু বিনীত বলেই চলেন, ‘‘নীরব-বিজয়দের কাছ থেকে টাকা উদ্ধারে কী করা হচ্ছে, তার জবাব সরকারকে দিতেই হবে।’’

আরও পড়ুন: রাজ্যে একই নামে দু’টি সংস্থা চোক্সীর

এরই মধ্যে বিচারপতি এ এম খানউইলকর প্রশ্ন করেন, বিনীত নিজে মামলা দায়ের করেছেন, আবার আইনজীবী হয়ে সওয়ালও করছেন। অন্য আইনজীবীর মাধ্যমে তা করা উচিত ছিল। বিনীত তখন জানান, সওয়াল করার কথা ছিল তাঁর বাবা জে পি ধান্দার। তিনি অসুস্থ। তখনই এজলাসে আচমকা উঠে দাঁড়ান জে পি! বলেন, ‘‘আমিই তা হলে সওয়াল করছি।’’ তবে পিতাপুত্রের সওয়ালের পরও আদালত জানায়, সরকারকে নোটিস জারি করা হবে না। অ্যাটর্নি জেনারেলের বক্তব্য শুনে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। পরবর্তী শুনানি ১৬ মার্চ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন