দিল্লির দূষণের চিত্র। ছবি: পিটিআই।
দীপাবলিতে সুপ্রিম কোর্টের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই চলেছে বাজি পোড়ানোর ধুম। তার পর থেকে দূষণ চরমে পৌঁছেছে দেশের রাজধানী দিল্লিতে। ‘ভয়ানক’ পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে বাতাসের গুণমান (এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স বা একিউআই)। ইতিমধ্যে তার প্রভাবও হাড়ে হাড়ে টের পেতে শুরু করে দিয়েছেন দিল্লিবাসী।
‘লোকাল-সার্কেল্স’ নামে এক সংস্থার অনলাইন সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, দীপাবলির পর থেকেই দিল্লিতে ঘরে ঘরে শ্বাসকষ্ট, মাথাব্যথার মতো নানা উপসর্গ দেখা দিতে শুরু করেছে। সমীক্ষার তথ্য উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, দিল্লিতে প্রতি চারটির মধ্যে তিনটি পরিবারে এক বা একাধিক সদস্যের গলাব্যথা, কাশি, চোখ জ্বালার মতো উপসর্গ দেখা দিয়েছে। সঙ্গে রয়েছে অনিয়মিত ঘুম হওয়া কিংবা মাথা ধরাও।
দিল্লি, গুরুগ্রাম, নয়ডা, ফরিদাবাদ এবং গাজ়িয়াবাদের ৪৪,০০০-এরও বেশি বাসিন্দার উপর এই সমীক্ষাটি করা হয়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে যে, ৪২ শতাংশ পরিবারের এক বা একাধিক সদস্য গলাব্যথা কিংবা কাশিতে ভুগছেন। ২৫ শতাংশ পরিবারে সদস্যদের কারও না কারও চোখ জ্বালা করা, অনিয়মিত ঘুম হওয়া অথবা মাথাব্যথা হচ্ছে। ১৭ শতাংশ পরিবারে দেখা দিয়েছে শ্বাসকষ্ট ও হাঁপানির মতো উপসর্গ।
কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড (সিপিসিবি)-এর তথ্য বলছে, দীপাবলির পর বাতাসে দূষক পিএম ২.৫-এর গড় মাত্রা প্রতি ঘনমিটারে ৪৮৮ মাইক্রোগ্রাম ছুঁয়ে ফেলেছে, যা গত পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ তো বটেই, পাশাপাশি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র নির্ধারিত বিপদসীমারও অন্তত ১০০ গুণ! দীপাবলির আগে দিল্লির বাতাসে পিএম ২.৫ এর মাত্রা ছিল ১৫৬.৬ মাইক্রোগ্রাম প্রতি ঘনমিটার। তবে যথেচ্ছ বাজি ফাটানোয় গত কয়েক দিনে বাতাসে দূষকের মাত্রা তিনগুণ বেড়ে গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, পঞ্জাব ও হরিয়ানায় শস্যের গোড়া পোড়ানোর কারণেই রাজধানীতে দূষণ বাড়ে বলে দীর্ঘ দিনের অভিযোগ। চলতি বছরে বন্যা এবং ফসল তোলায় দেরির কারণে সেই ঘটনা আগের থেকে ৭৭.৫ শতাংশ কমেছে, তবে দূষণের চিত্রটা বিশেষ বদলায়নি। শনিবার সকালেও দিল্লির বাতাসের গড় গুণমান বা একিউআই ছিল ২৬১, যা ‘খারাপ’ পর্যায়ে পড়ে। সর্বোচ্চ একিউআই রেকর্ড হয়েছে আনন্দ বিহারে (৪১৫), যা ‘ভয়ানক’ পর্যায়ে পড়ে।