পুরনো জুটির রেষারেষি আবার এল প্রকাশ্যে।
সুষমা স্বরাজ ও অরুণ জেটলি। বিজেপি বিরোধী দলে থাকার সময় এই দুই বিরোধী দলনেতার রেষারেষি সর্বজনবিদিত। প্রকাশ্যে কেউই কবুল করতেন না বটে। কিন্তু দুই শিবিরের মধ্যে স্পষ্ট বিভাজন নানা ঘটনার মধ্যে বেরিয়ে আসত। নরেন্দ্র মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর তাতে অনেকটা ভাটা পড়েছে বটে। কিন্তু আবার তা ফিরে এল গত কাল। ললিত মোদী ও বিজয় মাল্যর প্রত্যর্পণের বিষয়ে।
অসুস্থতার কারণে দু’বছরে বিদেশ মন্ত্রকের সাফল্যের খতিয়ান এত দিন তুলে ধরতে পারেননি সুষমা স্বরাজ। গতকাল এক সাংবাদিক বৈঠকে সেই কাজটি করেছেন তিনি। তখনই বিজয় মাল্য ও ললিত মোদীর প্রত্যর্পণে দেরি নিয়ে প্রশ্ন করা হয় সুষমাকে। জবাবে বিদেশমন্ত্রী জানান, এই দু’জনের প্রত্যর্পণের অনুরোধ ব্রিটেনকে পাঠানো হয়নি।
কারণ, ললিতের ক্ষেত্রে তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) এখনও প্রত্যর্পণের অনুরোধ বিদেশ মন্ত্রকের কাছে পাঠায়নি। আর মাল্যর ক্ষেত্রে সেই অনুরোধ এলেও তাতে কিছু রদবদল করা প্রয়োজন বলে মনে হয়েছে বিদেশ মন্ত্রকের। ইডি এখনও নয়া অনুরোধ পাঠায়নি।
ইডি অরুণ জেটলির অর্থ মন্ত্রকের অধীনে। বিজেপি সূত্রের মতে, মাল্য ও ললিত নিয়ে দায় বিদেশ মন্ত্রকের ঘাড়ে না রেখে কৌশলে তা জেটলির মন্ত্রকের উপরে চাপিয়ে দিয়েছেন সুষমা। মোদী সরকারের দুই মন্ত্রীর সম্পর্কের এই চোরাস্রোত উস্কে দিতে আজ আসরে নেমে পড়ে কংগ্রেস। দলের নেতা জয়রাম রমেশ বলেন, ‘‘গত নভেম্বর থেকে ললিত মোদীর প্রত্যর্পণ প্রক্রিয়া চলছে।
অথচ অরুণ জেটলি এখনও পর্যন্ত প্রত্যর্পণের অনুরোধ তৈরি করতে পারলেন না। আর বিজয় মাল্যর ক্ষেত্রে পাঠানো হলেও সেটি ত্রুটিপূর্ণ করা হয়েছে, যাতে তা ফেরত আসে ইডির কাছে।’’ জয়রামের কথায়, ‘‘অরুণ জেটলি অর্থমন্ত্রীর পাশাপাশি একজন বিশিষ্ট আইনজীবী। ঘুমের মধ্যেও তিনি একটি প্রত্যর্পণের অনুরোধের খসড়া বানিয়ে দিতে পারেন। তাঁর মন্ত্রক এতে কী ভাবে
ভুল করল?’’
এর সঙ্গে রঘুরাম রাজনের বিদায়ের বিষয়টিও জুড়ে দিতে চাইছে কংগ্রেস। তাদের অভিযোগ, ব্যাঙ্ক থেকে মোটা অর্থ নিয়ে যাঁরা শোধ দেননি, তাঁদের অরুণ জেটলি আড়াল তো করছেনই। যিনি এর রাশ ধরতে পারতেন, সেই রঘুরাম রাজনকেও এই সরকার সরিয়ে দিতে চাইছে। বিজেপির মুখপাত্র নলিন কোহলির মতে, ‘‘সরকারের দুই মন্ত্রকের মধ্যে কোনও বিরোধ নেই। এটি একটি প্রক্রিয়াগত বিষয়। ইউপিএ বরাবরই ললিত মোদীকে আড়াল করে এসেছে। বিজয় মাল্যর এত বড় ব্যবসা ফুলেফঁপে উঠেছে ইউপিএ আমলেই। মোদী সরকার আটঘাট বেঁধেই দু’জনের প্রত্যর্পণের চেষ্টা করছে।’’