বর্তমান পরিস্থিতিতে পাক বিরোধী বয়ান কী রকম হওয়া উচিত, তা শশীই যে সবচেয়ে ভাল বোঝেন, সুষমা তা জানেন। —ফাইল চিত্র।
এককাট্টা গোটা দেশ। ভারতীয় নৌসেনার প্রাক্তন কর্মীকে ফাঁসি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে প্রতিবেশী দেশের সেনা আদালত। পাক আদালতের এই নির্দেশের তীব্র বিরোধিতায় একজোট ভারতের গোটা রাজনৈতিক শিবির। সংসদে মঙ্গলবার শাসক এবং বিরোধী এক যোগে নিন্দা করল পাকিস্তানের। কখনও বিরোধী দল কংগ্রেসের লোকসভার নেতা মল্লিকার্জুন খাড়্গে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাইলেন। কখনও রাজ্যসভার কংগ্রেস দলনেতা গুলাম নবি আজাদ বিদেশ মন্ত্রী সুষমা স্বরাজের বক্তব্যকে টেবিল চাপড়ে স্বাগত জানালেন। আর লোকসভায় নিজের ভাষণ শেষ করে সুষমা চলে গেলেন তিরুঅনন্তপুরমের কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুরের কাছে। পাকিস্তানের পদক্ষেপের বিরোধিতা করে ভারতীয় সংসদে যে সনদ পাশ করানো হবে, তার খসড়া তৈরি করে দেওয়ার অনুরোধ জানালেন তারুরকে।
সুষমা স্বরাজ এ দিন সংসদের দুই কক্ষেই বিবৃতি দিয়েছেন। ভারত সরকার কুলভূষণ যাদবকে রক্ষা করার জন্য কী করছে— রাজ্যসভায় বিদেশ মন্ত্রীকে অনেকটা এমনই প্রশ্ন করেছিলেন গুলাম নবি আজাদ। সুষমা স্বরাজ উত্তরে যা জানান, তাতে আজাদ যে খুশিই হয়েছেন, তা স্পষ্ট বোঝা যায়। তিনি টেবিল চাপড়ে স্বাগত জানান বিদেশ মন্ত্রীর বক্তব্যকে।
বিদেশ মন্ত্রীর ডাকে সাড়া দিয়ে সরকারের সহযোগিতায় এগিয়ে এসেছে কংগ্রেস। — প্রতীকী ছবি / ফাইল চিত্র।
রাজ্যসভায় কংগ্রেসের এই সৌজন্য যখন প্রশংসিত হচ্ছে, তখন লোকসভাতে অসামান্য নজির তৈরি করলেন বিদেশ মন্ত্রী। নিজের ভাষণ শেষ করে তিনি চলে গেলেন কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুরের কাছে। পাকিস্তানের সেনা আদালত কুলভূষণ যাদবকে প্রাণদণ্ড দেওয়ার যে নির্দেশ দিয়েছে, তার বিরোধিতা করে ভারতীয় সংসদের দুই কক্ষেই প্রস্তাব বা সনদ পাশ করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সরকার। সেই প্রস্তাবের বয়ান কী হবে, তা লিখে দেওয়ার জন্য শশীকে অনুরোধ করেন তিনি। শশী তারুর মল্লিকার্জুন খাড়্গের কাছে অনুমতি চান। অনুমতিও মেলে তৎক্ষণাৎ। ফলে সুষমা স্বরাজকে সাহায্য করতে সাগ্রহে এগিয়ে আসেন তারুর, সনদের খসড়া তৈরি করে দেন তিনিই।
আরও পড়ুন: বেনজির পদক্ষেপ, বলছে পাক মিডিয়াই, উঠল প্রমাণ প্রকাশ্যে আনার দাবিও
তিরুঅনন্তপুরমের এই কংগ্রেস সাংসদ দেশের প্রাক্তন বিদেশ প্রতিমন্ত্রী। শুধু তাই নয়, রাষ্ট্রপুঞ্জে আন্ডার সেক্রেটারিও ছিলেন তিনি। ক্ষুরধার কূটনীতিক হিসেবে তাঁর খ্যাতি আন্তর্জাতিক স্তরে সুবিদিত। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যে প্রস্তাব সংসদে পাশ করানো দরকার, তার ভাষা কেমন হওয়া উচিত, সে বিষয়টি যে তারুরের চেয়ে ভাল বোঝার মতো লোক যে কমই রয়েছেন, সে কথা সুষমা ভালই জানেন। সেই কারণেই অনুরোধটি নিয়ে তারুরের কাছেই হাজির হন তিনি। কংগ্রেসও জাতীয় সংহতির বার্তা দিয়ে সব রকম ভাবে সরকারের পাশে দাঁড়িয়েছে।